বই:তখন আঁধার ছিল
ধরন:উপন্যাস
লেখক: ফরিদুর রেজা খান
তখন আঁধার ছিল’ একটি অনবদ্য উপন্যাসের উপাখ্যান।
আসছে ভোরে আইকে দিবো একখান কালা টিপ,
চরে ঢাকা বুকের মাঝে তোমার নামেই দ্বীপ।
সাধের একখান ভালোবাসার তোমার আমার কুটির,
সুযোগ পাইলে আইসো তাতে ঘুচাইবো সব তিমির।
————ফরিদুর রেজা খান
উপরোল্লিখিত গানটি ‘তখন আঁধার ছিল’ উপন্যাস থেকে নেয়া।এই উপন্যাসটিতে কী আছে?এটি কী কেবলই উপন্যাস!কি আছে এটার ভিতরে?
‘তখন আঁধার ছিল’ উপন্যাসটি একটি অনুসন্ধিৎসু উপন্যাস।এই উপন্যাসটি সাম্প্রদায়িকতার যে নোংরামি এবং এটার শুরু এবং শেষ পরিণীতি নিয়ে একটা চমৎকার রোমান্টিক আয়োজন করা হয়েছে।তাছাড়া লেখক এই উপন্যাসে দেশভাগের পূর্বে এখানকার মানুষের জীবনযাপন নিয়ে পরিপূর্ণভাবে আলোচনা করেছেন।এছাড়া একটি সীমান্তবর্তী এলাকা,নাম দূর্গাপুর।যেখানে শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার খুব কম।যেখানকার লোকজন খুব কম সুযোগ সুবিধা পায়।যে এলাকায় বেশিরভাগ লোকজন ধর্ম নিরপেক্ষ,সাম্প্রদায়িকতাকে উপেক্ষা করে তারা একসাথে বাঁচতে চায় সেখানে দেশভাগ নামক রাজনীতি তাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বীজ বপন করে দেয়।
এই উপন্যাসটিতে লক্ষ্য করা যায় যে,দেশভাগাভাগির ক্ষেত্রে ধর্ম নিয়েও ভাগাভাগি হয়েছে।মুসলমানরা থাকবে এপারে আর হিন্দুরা ওপারে।যেমন- উপন্যাসটির নায়ক-নায়িকা যথাক্রমে সুমন ও কুসুম।সুমনের ধর্ম ছিল মুসলিম আর কুসুম ছিল হিন্দু।একপর্যায়ে কুসুমের বাবার কথোপকথন থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে,হিন্দুদের জন্য হিন্দুস্তান আর মুসলিমদের জন্য পাকিস্তান।ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর দুটি চরিত্রের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা সঞ্চার করিয়ে লেখক খুব সুন্দর বুঝিয়ে দিয়েছেন সাম্প্রদায়িকতার পরিণতি।
‘তখন আঁধার ছিল’ উপন্যাসটির লেখক যিনি এই বইটি উৎসর্গ করেছেন একজন নরসুন্দরকে। ইতিমধ্যে এই বইটি স্থান করে নিয়েছে দুই বাংলার পাঠকদের অন্তরে। আগামী কলকাতা বইমেলায় এই বইটির একটি সংস্করণও বের হতে যাচ্ছে।কলকাতার একজন ডিরেক্টর এই বইটির উপর একটি টেলিফিল্মও করতে যাচ্ছেন।বইটিতে একটি গানও রচনা করেছেন লেখক।যে গানটির সুর ও সুরারোপ করেছেন কলকাতার অন্যতম কণ্ঠশিল্পী শুভ্রজিৎ পান্ডে।দাঁড়িকমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘তখন আঁধার ছিল’ উপন্যাসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় যেটি আমাদের নাড়া দিয়ে যায় তাহলো ‘তখন আঁধার ছিল’ মানে যখন আঁধার ছিল’।তার মানে কি,এখন আঁধার নেই ।
রিভিউয়ারঃ -অনাবিলা অনা
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
নেত্রকোনা সরকারি কলেজ,
নেত্রকোনা।