সব
facebook apsnews24.com
বার কাউন্সিলঃআমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। - APSNews24.Com

বার কাউন্সিলঃআমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।

বার কাউন্সিলঃআমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।

আইন পাঠ,আইন চর্চা ও বার কাউন্সিলের ভূমিকা।
বর্তমানে MCQ উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের ফলাফল কি ভাবে শেষ হবে,তা হয়তো,কারো সঠিক ভাবে জানা নেই, তবে এটার জন্য বার কাউন্সিলও এ দায় এড়াতে পারে না।বিগত ৪ বছরে দুটি এডভোকেটশীপ পরীক্ষা নেওয়া কী কঠিন ছিল!উনাদের দীর্ঘসূত্রিতা,তিন ধাপের পরীক্ষা পদ্ধতিও দায়ী।তারপর বার কাউন্সিলের দায়িত্বপূর্ন লোক যদি বলে,জেলা বারে স্থান নেই আমাদের আর আইনজীবী দরকার নেই,তাহলে তিনি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে পারেন,কেমন অদ্ভুত সৃজনশীল চিন্তা!যেখানে সরকার সাধারণ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করার জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কলেজে অনার্স/ মাস্টার্স চালু করছে,যদিও প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার ছাত্র বেকারত্বে যোগ হচ্ছে, তবু্ও কি পড়ালেখা বন্ধ করছে? ছাত্র ছাত্রীরা যখন সরকারি,বেসরকারি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে পাস করে, তারা তো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন,আইন বিশেষজ্ঞ,কারিকুলাম-সিলেবাস অনুযায়ী ১৫-২০ টা আইনের বই/বিষয় পরেই এলএলবি সনদ নিয়ে,৬ মাস সিনিয়রের সহযোগী থেকে তারপর ইন্টিমেশান জমা দিয়েছে।

বছরের ২বার বার কাউন্সিল পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতের কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয় না,এইভাবে চলতে থাকলে,বার কাউন্সিলের দীর্ঘসুত্রিতার জন্য আইনপাঠ,আইন চর্চা,আইন ব্যবসার প্রতি সবার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।আইনে পড়ালেখা একটা ঝুকি,অনিশ্চয়তা,হুমকির মধ্যে পড়ে যাবে।তাই শিক্ষানবীশদের সহজে মুক্তি মিলবে না,কবি কাজী নজরুলের উক্তি নিশ্চয় সবারেই জানা,জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ,বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট,মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

১৯৭১-১৯৮১পর্যন্ত এলএলবি পাস করলেই সনদ পেত,উনাদের থেকেই কিন্তু প্রধান বিচারপতি ও এটর্নী জেনারেলও হয়েছে।এরপর ধাপে ধাপে নৈবত্তিক, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এডভোকেট সনদ প্রদান করা হয়।লিখিত পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার পর থেকেই অভিযোগ উঠে,খাতা পাল্টানোর।সন্দেহের তীর কিন্তু বার কাউন্সিলের পরীক্ষা পদ্ধতির দিকে,যদি গুজবও হয়,সেই সুযোগ বার কাউন্সিল কেন দিবে?এখানে কী পুননিরীক্ষার ব্যবস্থা অসম্ভব?সুপারসনিক দুনিয়ায় এখন এটা সম্ভব!একজন ভালো পরীক্ষা দিবে আর অপরজন না লিখেই পাস করবে!

বার কাউন্সিলের এক সদস্য বলেছে, বর্তমান আন্দোলনকারীদের সনদ দিতে আইন সংশোধন প্র‍য়োজন,যখন জনাব….. কে সনদ দিয়েছিল তখন কি আইন সংশোধন লেগেছিল?আমাদের সৎ একজন প্রধানমন্ত্রী,সৎ আইনমন্ত্রী ও বিজ্ঞ উচ্চআদালত থাকতে আইনঅঙ্গনের গুটি কয়েক অপেশাদার,অদূরদশী,কান্ডজ্ঞানহীন লোকদের কারনে শিক্ষানবিশ আইনজীবী ভোগ করতে পারবেনা,মুজিব শতবর্ষের পরিকল্পনা,সফলতা ও সুফলতা।আমরা সকলেই জানি পূর্বে কিন্তু ৭ বৎসর মোক্তার থেকে এডভোকেট সনদ পাওয়া যেত,তখন শিক্ষার চেয়ে অভিজ্ঞতার মূল্যই বেশী ছিল।বর্তমানে সব কিছুই সনদ নির্ভর,তাই এখন আর কবি নজরুল,রবীন্দ্রনাথ,গীতিকার লালন,আবদুল করিম জন্মিবেনা,আবার স্বীকৃতিও পাবেনা,কারণ এখন উনাদের তো শিক্ষাও নেই,সনদও নেই,জেনে রাখা ভালো জ্ঞান,মেধা,বুদ্ধি ও সৃজনশীলতা আল্লাহর দান। বার কাউন্সিল সময় অনুযায়ী নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়া এবং সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান,সেহেতু সল্প পরিসরে,পরীক্ষা নিতেই পারে,তবে তিন ধাপে পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে ভেবে দেখা দরকার,আইন পড়ার সময়তো তারা শিক্ষাক্রম,পাঠ্যক্রম অনুযায়ী ৪ বৎসর পড়েছে,যেখানে সে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক কাজ শিখে নিয়েছে।

এডভোকেট একটি প্ল্যাটফর্ম,যেখানে সে দক্ষতা ও সক্ষমতা দিয়ে দাড়িয়ে থাকবে না হয় ঝরে পড়বে,এটাতো চাকুরী না,ভাতা না,যে শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ হচ্ছে, রাস্ট্র/সমাজে আইনজীবী সৃজনশীলতা,সৃষ্টিশীলতা ও জ্ঞান নির্ভর সন্মানিত পদ,তবে কাংখিত সনদ ঐ প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকার মাপকাঠি নয়! কঠিন সময়ে MCQ উত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা অনেকদিন আন্দোলন করছে,তবে তারা মন্ত্রী,এমপি,বিভিন্ন বারের কর্তাব্যক্তিদের এমনকি বিভিন্ন মহলের সুপারিশ নিচ্ছে,যা আন্দোলনকে আরও ত্বরান্বিত করবে,এইটা আমাদের বিশ্বাস। এই দেশের মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,মুজিব শতবর্ষে এই জাতি/দেশ স্মরণ রাখার জন্য অনেক কিছু করবে যা অনেকেরেই জানা,যার জন্য তিনি গত এক বছর যাবত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

Covid-19 বৈশ্বিক মহামারীর কারনে কিছুটা স্থবির হলেও,শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের দাবী আদায়ের এখনি সময়। MCQ উত্তীর্ণ শিক্ষানবীশ আইনজীবী ভাইয়েরা এমন ভাবে দাবি পেশ/আন্দোলন করুন, যাতে শুধু আপনারা নিজেরা ১৩ হাজার নয়,প্রস্তাবিত ৬০ হাজার নয়,আগামী প্রজন্মের জন্য একটা নজির রেখে যান,যা হবে আইনের ভবিতব্য ম্যগনাকার্টা!আগামী প্রজন্ম আপনাদেরকে যুগে যুগে স্মরণ করবে। পরীক্ষা পদ্ধতিরও একটা যুগোপযোগী সংশোধন প্রস্তাব করতে পারেন,প্রস্তাব গুলো হতে পারে ১,বছরে ২টি পরীক্ষা,ফলাফল সহ। ২,পরীক্ষায় MCQ+Wrtten+Viva. ৩,পরীক্ষায় MCQ+Viva. ৪,পরীক্ষায় শুধু Viva. ৫,শুধু ৬ মাসের শিক্ষানবিশ কাল। নির্দিষ্ট পাস নম্বর থাকবে।তবে উল্লেখ্য সব পরীক্ষার উত্তরপত্র পূন মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে,এবং নেগেটিভ মার্কিং থাকবেনা।মনে রাখবেন বার কাউন্সিল,বেঞ্চ,আইনজীবী পরস্পর পরস্পরের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

এইগুলো সব আপনাদের দাবী পেশ ও দরকষাকষির উপর নির্ভর করবে। সর্বোপরি সবচেয়ে ভালো,শিক্ষানবিশ আইনজীবী ৬ মাস শিক্ষানবিশ কাল অতিক্রম করার পর পরীক্ষা না দিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সনদ নিয়ে আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পারবে,এমন একটা ইতিহাস রচনা করুন।অনেকটা ভারত চন্দ্র রায় গুনা করের “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে”।

মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন মজুমদার
শিক্ষক ও গবেষক,
২৮তম ব্যাচ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

আপনার মতামত লিখুন :

পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩, যেসব বিষয় জানা জরুরী

পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩, যেসব বিষয় জানা জরুরী

সামাজিক ব্যাধি পরকীয়া: কারণ ও আইনী প্রতিকার

সামাজিক ব্যাধি পরকীয়া: কারণ ও আইনী প্রতিকার

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj