২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল তিন ধাপের কঠোর পরীক্ষা ব্যাবস্থা চালু করে ।এই তিন ধাপ: এম.সি.কিউ, রিটেন ও ভাইবা যা শিক্ষার্থীদের মেধাযাচাইয়ের জন্য হলেও পরীক্ষা সঠিক সময়ে অনুষ্ঠিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভিতর ব্যাপক হতাশা তৈরী করে। ২০১২, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে এই ব্যবস্থায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ৷ সর্বশেষ ২০২০সালেএম.সি.কিউ গ্রহণ করা হয় ও করোনা সংকটের কারনে অন্য সকল কিছুর মতো রিটেন ও ভাইভা পরীক্ষা স্থগিত অবস্থায় আছে। আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক ও সনদ প্রদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।
উচ্চ আদালত ২০১৭ সালে ১ বছর অন্তর অন্তর বার কাউন্সিল পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে একটি আদেশ দেন। বর্তমান করোনাকালীন সময়ে তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না আবার অতীতেও এ নির্দেশনা পুরোপুরি মানা হয় নি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ আইনজীবীগণের পেশা শুরুর জীবন এমন নির্মমতায় ভরা হয় তার দিকে আশু নজর দেয়া জরুরী।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচিত নতুন কমিটি গঠন হলেও তারা এখন পর্যন্ত পূর্নাঙ্গ কোন পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারে নি। প্রতি বছর সঠিক সময়ে পরীক্ষা না হওয়ায় অনেক মেধাবী আইনপেশায় থাকতে চেয়েও অনিশ্চয়তার কারনে টিকতে পারছে না। একদিকে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সম্মানি নাই বললেই চলে অন্যদিকে অনিশ্চিত পরীক্ষা তাদের জন্য বিষকাটায় পরিণত হয়েছে। এমন চলতে থাকলে আদালত প্রাঙ্গণে টাউট, দালালরা তাদের আধিপত্যের মাধ্যমে আরো নেতিবাচক করে তুলতে পারে।
জানা যায়, ২০২০সালে এম.সি.কিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ৮৭৬৪ জন এবং ২০১৭ সালের লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয় ৩৭১৬জন। সেই হিসেবে বার কাউন্সিল নিয়মানুযায়ী এবার মোট লিখিত পরীক্ষার্থী সংখ্যা ১২৪৮০জন। এই বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থী করোনার এই মহা সংকটের সময় বাসায় আরো সংকটে আছে। পরিচয় সংকট তাদের সংকট আরো বাড়িয়ে তুলছে। এদর সনদ হয়ে গেলে নিজে স্বাবলম্বী হতে পারবে তেমন পরিবার ও সমাজকে উপকারভোগী করতে পারবে।
শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রেরণ করা হয়েছে। সঠিক সময়ে পরীক্ষা নেবার জন্য বার কাউন্সিলের সদ্দিচ্ছাই যথেষ্ট। মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও যদি সঠিক সময়ে পরীক্ষা নেয়া হয় বা গেজেট করে সনদ দেয়া হয় তাহলে অনেক তরুন তাদের তারুণ্যের এ সময়কে উপযুক্ত ভাবে দেশ ও দশের কাজে লাগাতে পারে।
শিক্ষানবীশ আইনজীবী হিসেবে আছেন এমন অনেকের সাথে কথা বলে দেখা যায় করোনা এই মহামারী সময়ে তারা বাসায় অবস্থান করছেন। অধিকাংশের পড়াশুনা শেষ হওয়ায় একরকম হতাশার মাঝে আছেন । অনেকে আছেন যারা কিছু কাজ করার চেষ্টা করছেন কিন্তু তাও সম্ভব হচ্ছে না। পরিবার ও সমাজ সনদ না হবার বিষয়টি সহজভাবে না নেওয়ায় সমাজিক গ্রহণযোগ্যতাও কমে যচ্ছে। যে সময় তাদের পরিবারের পাশে থাকার কথা সে সময় তার পরিবারের বোঝা হয়ে আছেন।
এমন অবস্থায় সকলে দাবী করছেন সঠিক সময়ে পরীক্ষা নেয়া হোক বা বিকল্প কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে সনদ দেয়া হোক।