আয়েশা সিদ্দিকা লোপা
কোভিড-১৯ এ আক্রান্তদের সুস্থতার হার সামান্য বাড়লেও মৃত্যুর মিছিল দিন দিন লম্বা হচ্ছে৷ মাকড়সার জালের মত করে ছেয়ে যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন মৃত ৩৯ জন৷ মোট মৃত্যুঃ১ হাজার ৪৬৪ জন৷
সারাদেশ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ প্রতিদিনই শত শত মানব শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হচ্ছে। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। দেশজ অর্থনৈতিক হুমকি বিবেচনা করে সার্বিক লকডাউন বাদ দিয়ে এখন দেয়া হচ্ছে এলাকা ভিত্তিক লকডাউন। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না মৃত্যু মিছিল।
বাংলাদেশে বিগত ৩/৪ দিন আগেই মোট আক্রান্ত ১ লাখ ছাড়িয়েছে৷ আজ তা ১ লাখ ১২ হাজার ৩০৬ জন এ দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বে মোট আক্রান্ত দেশের তালিকায় এখন সপ্তদশ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ৷ বর্তমানে দেশে শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ৷ চলছে লকডাউন তবুও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে কেবল লকডাউনই কি Pandemic Corona রোগের প্রাদুর্ভাব কমানোর একমাত্র সমাধান? আসুন একটু বিশদ আলোচনায় যাওয়া যাক।
একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করি। একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চালকের হেলমেট থাকার পড়েও তার মাথা কেটে গেলো। এই ঘটনার পর সে ভাবলো হেলমেট পরার কোন সুফল নেই এবং পড়া বন্ধ করে দিলো।
আপনার কি মনে হয় তার সিদ্ধান্তটা সঠিক? এর পরে একই ধরণের দুর্ঘটনা হলে তার মাথায় আঘাত বেশি নাকি কম লাগবে? কাটার চেয়ে মাথা ফেঁটে যাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু বেশী? হেলমেটের কাজ মাথায় চোট লাগা পুরোপুরি বন্ধ করা নয় বরং আঘাতের মাত্রা কমানোই এর সফলতা।
একই ভাবে ইতালিতে লকডাউন করার লক্ষ্য করোনা ভাইরাসের কারণে মৃত্যু পুরোপুরি বন্ধ করা নয়। বরং মানুষের মেলামেশা কমিয়ে সংক্রমণের হার কমানোর জন্য লকডাউন করা হয়। অন্যান্য দেশেও একই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপ না নিলে সংক্রমণ তথা মৃত্যুর হার কয়েকগুণ বেশি হতো। হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানোই হচ্ছে লকডাউনের সফলতা।
লকডাউনের ফলে মানুষের প্রাণ বাঁচে এটা কিভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়? করোনা ভাইরাস যেহেতু মানুষের সংস্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, তাই মানুষের মধ্যে মেলামেশা কমলে এর বিস্তার কম হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় কি? তবে কতটুকু কম হবে তা নির্ভর করে লকডাউন কখন করা হল, কিভাবে বাস্তবায়ন করা হল ইত্যাদির উপর। কিন্তু ভাইরাসের বিস্তার লকডাউনের ফলে যে কিছুটা কম হবে এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকার কথা না। তবে এটাও ঠিক যে এভাবে তা পুরোপুরি নির্মুল করা সম্ভব নয়।
Naturally যেকোন মহামারি ছড়িয়ে পড়লে তা ঠেকাতে স্বীকৃত তিনটি উপায় আছেঃ
১. জনগণের মুক্ত চলাচল বা জনসমাগমে কঠোর নিষিদ্ধকরণ।
২. আক্রমণাত্মকভাবে প্রতিটি সন্দেহভাজনকে টেস্ট করা। ভ্যাক্সিন তৈরি করা।
৩.Herd Immunity তৈরির আশায় বসে থাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের CNBC তে তাদের Epidemiologists রা করোনা নিয়ন্ত্রণে সিঙ্গাপুরের সফল পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলেছেন। তাদের পদ্ধতি ছিলোঃ
১. Isolation ও Quarantine সফল করা,
২. Contact খুঁজে বের করা
৩. Close Contact দের পৃথক করা
৪. সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা।
এবার আসি লকডাউনের কথায়।
লকডাউন একটি জরুরি ব্যবস্থা, যেটা সামান্য ভাবে মানুষকে একটি নিশ্চিত এলাকায় থাকার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফুল লকডাউনের মানে, মানুষ নিজের ঘর থেকে বের হতেই পারবে না। মেডিকেল এমার্জেন্সি আর খুব দরকারি না হলে কোনো ওমতেই ঘর থেকে বের হওয়া যাবেনা।
লকডাউনে রাষ্ট্রপ্রধানের সবথেকে বড় উদ্দেশ্য হল, মানুষ যেন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় না যায়, এতে Community Spread হ্রাস পায়। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় আদেশকে কড়া ভাবে আমল করা।
লকডাউন কিভাবে কাজ করেঃ
১. মুদি দোকান ও মেডিকেল সরবরাহ নিমিত্তে বাইরে যাওয়া যাবে। দুজন মানুষের বেশি Gathering নিষিদ্ধ। সব অপ্রয়োজনীয় দোকান, লাইব্রেরি, জিম বন্ধ থাকবে। যে কোনো আচার অনুষ্ঠান যেমনঃ বিবাহ, (যে কোনো ধর্মের) ধর্মীয় সমাবেশ এছাড়াও বিনোদন পার্ক, মার্কেট ইত্যাদিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এসব না মানলে পুলিশ জরিমানা করবে। তারপর একটা নির্দিষ্ট সময় তা Review হবে যে কতটুকু কার্যকর হয়েছে।
কিন্তু খেয়াল করেছেন কি? লকডাউন করার পরও ইউরোপের দেশগুলোতে রোগটি কিন্তু ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। গুগলে Search দিলেই দেখতে পাওয়া যাবে কোন কোন স্থানগুলোতে লকডাউন শুরুর সময় দেয়ার পরও তাদের মৃত্যুর মিছিল বেড়ে গিয়েছিল। আমি এখানে আর উল্লেখ করলাম না।
২. জাপান ও কোরিয়া লকডাউন না করেও কেবল কঠোর Quarantine করে সফল হয়েছে মৃত্যু কমাতে। কোরিয়াতে রাস্তায় একাধিক ল্যাব খুলে গাড়ি থামিয়ে জনগণকে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে। তারা কেউই লকডাউন করেনি।
৩. ইউরোপীয় দেশগুলো দেরিতে লকডাউন করেছে, তাই ফল কাঙ্ক্ষিত নয়। মধ্যমার্চ পর্যন্ত তাদের প্রধান বিমানবন্দরগুলো মিলান, মাদ্রি, হিথরো, চার্লস গল চালু ছিলো।
৪. তবে ভারত ও বাংলাদেশ আগে ভাগে শুরু করায় সফল হবে বলে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলাম। কিন্তু ফলাফল ভালো না।
The fact is that, যদি জনসচেতনতা না থাকে তবে জনবিচ্ছিন্ন করার এই প্রক্রিয়া কতটুকু কাজ দেয়, তা শিক্ষনীয়। চীন উহানকে লকডাউন করে সফল হলেও কত সহস্র জীবন গিয়েছে তা প্রশ্নবোধক। হয়তো সেখানে জনগণের মাঝে Herd Immunity দেখা দিয়েছে কিংবা অনেক বিশেষজ্ঞ আগে থেকেই বলেছিলো তাপমাত্রা বাড়লে রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। উহানের তাপমাত্রা এখন ২৬° সে° ও বৃষ্টি হচ্ছে।ইতালিতে এখন তাপমাত্রা ২৮° সে°। দুএকজন গবেষক মতে, করোনা ভাইরাস ৪° সে°এ ৩০ দিন বাঁচতে পারে। আর ৩০° সে°এ মোটেও বাঁচতে পারেনা। তবে এটা ভুলও হতে পারে।
Whatever, আসল কথা হলো কেবল এই লকডাউনই কি যথেষ্ট করোনা প্রতিরোধে? আমি মনে করি, না। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস রোধে শুধু লকডাউন যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ( WHO) প্রধান টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস।
এনডিটিভিতে WHO প্রধান বলেন, “করোনা ভাইরাস রোধে অনেক দেশ লকডাউনের ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু শুধু এসব পদক্ষেপে বিশ্ব থেকে করোনা ভাইরাসের মতো মহামারির ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে না। এর বিরুদ্ধে জিততে হলে একটি দ্বিতীয় পথ রাখতে হবে।”
টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস জোর দিয়ে বলেন, “মানুষকে বাইরে চলাফেরা না করে ঘরে থাকতে বলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সময় পাওয়া যাবে এবং লকডাউন দিয়ে হয়তো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমানো যেতে পারে। এর বেশি কিছু নয়।এসব দিয়ে করোনা ভাইরাস দূর করা যাবে না, মহামারি ঠেকানো যাবে না। এর বিরুদ্ধে সবাইকে আক্রমণাত্মক হতে হবে। তাই সন্দেহভাজনদের সন্ধান করুন, বিচ্ছিন্ন করুন, করোনার পরীক্ষা করুন এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা করুন। এটাই সর্বোত্তম উপায়। “
এখনো দেশের অনেক মানুষই কেবল লকডাউনে আত্নবিশ্বাসী। কিন্তু সত্য বলতে কি একটু আত্ন-সচেতনতাই রুখে দিতে পারে এই Severe Contiguous Disease টিকে।
করোনায় মৃত্যু মিছিল ঠেকাতে আপনার আমার যা করণীয় হতে পারেঃ
১. প্রথমত, একটি সংকটকাল মানেই গুজবের ডালপালা ছড়িয়ে পড়া। তাই এমন কোনো তথ্য বিশ্বাস করবেন না, যা সমর্থিত নয়। আপনার ধারণার সাথে মিলে গেলেও না। সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, আপাতত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত কোনো কিছুতেই বিশ্বাস রাখবেন না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ক্ষেত্রেও যেগুলোতে পিয়ার-রিভিউড বৈজ্ঞানিক কাজের আলোচনা করা হয়নি বা যেগুলো ওয়াকিবহাল গবেষকদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়নি, এমন কোনো সংবাদ/তথ্যেও বিশ্বাস রাখবেন না। কেউ গুজব ছড়াচ্ছে বলে নিশ্চিত হলে স্থানীয় প্রশাসনকে জানান।
২. নিজেদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেইসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব ইত্যাদি) ব্যবহার করে যোগাযোগ জোরদার করুন। পারলে নিজেদের এলাকা ভিত্তিক অনলাইন গ্রুপ গড়ে তুলুন। আপনার আশেপাশে সন্দেহভাজন বা আক্রান্ত কেউ বিনা Quarantine এ থাকলে, নিয়ম অমান্য করলে, এসব গ্রুপের মাধ্যমে তাদের সংবাদ প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করুন। দয়া করে নিজেরা লাঠিসোটা নিয়ে এদের সংস্পর্শে গিয়ে হাজির হবেন না।
৩. জনসমাগমে (ওয়াজ, জামায়াত, পুজো, বিয়ে, জন্মদিন, খেলা, মিলাদ, রাজনৈতিক মি মিছিল, কনসার্ট ইত্যাদি) অংশগ্রহণ বন্ধ করুন এবং বন্ধু, পরিবারবর্গসহ অন্যকেও নিরুৎসাহিত করুন। কারো সামনে গেলেও নিরাপদ দূরত্ব (৩ থেকে ৬ ফুট) বজায় রাখুন।
৪. সবচেয়ে বড় যেটা করণীয় তা হচ্ছে – চলুন, আমরা সকলে ঘরেই থাকার চেষ্টা করি যতদূর সম্ভব। সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করি। এবং অন্যকেও এই কাজে উৎসাহিত করি। যেসব স্বেচ্ছাসেবী জনে জনে Hand Sanitiser বিতরণের দায়িত্ব নিয়েছেন, তারা এই কাজ থেকে বিরত থেকে বরং সবাইকে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যাপারে জানান। Hand Sanitiser এর তুলনায় সাবান অধিক কার্যকর। দেশীয় ক্ষারযুক্ত কমদামী পঁচা সাবান আরো বেশি কার্যকর। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে Leaflet এর ব্যবহার ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ, এসব এড়িয়ে চলুন। দরকারে ব্যক্তি উদ্যোগে Miking-এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে জনসাধারণের Quarantine নিশ্চিতের ব্যবস্থা করুন।
৫. ছোটখাট শারীরিক অসুস্থতার ক্ষেত্রে আপাতত চিকিৎসা কেন্দ্রে বা হাসপাতালে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং একই সাথে আশেপাশের অন্যকেও বিরত রাখতে চেষ্টা করুন। পরিবারের যে কারো যে কোনো প্রকার Flu জাতীয় অসুস্থতা চোখে পড়লে নিজ উদ্যোগে গোটা পরিবার নিয়ে Home – Quarantine এ থাকতে চেষ্টা করুন অন্তত ২ সপ্তাহ। তা সম্ভব না হলে অন্যদের থেকে নিজ দায়িত্বে দূরত্ব বজায় রাখুন এবং Mask পরিধান করুন।
৬. নিজ উদ্যোগে পারলে Mask বানাবার দায়িত্ব নিতে পারেন। এক্ষেত্রে মাথায় রাখুন যে কোনো প্রকার কাপড় দিয়ে মাস্ক বানালেই তা কার্যকর হবে না। বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ তথ্য বলছে গেঞ্জির কাপড়ের তুলনায় ডিশ-টাওয়েল/টি-টাওয়েল ভাইরাস প্রতিরোধে বেশ কয়েকগুণ অধিক কার্যকর। এ ধরনের টাওয়েল Market গুলোতেই কিনতে পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, জরুরি পরিস্থিতিতে সার্জিক্যাল মাস্কের অনুপস্থিতিতেই কেবল এই মাস্ক ব্যবহৃত হতে পারে।
৭. বয়স্ক অথবা কো-মরবিডিটিজ আছে এমন মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি বেশী। যে কোনো বয়সের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে, কিন্তু বেশী বয়স্ক মানুষের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশী। মৃত্যু ঝুঁকিও বয়স্ক মানুষের বেশী। তাই আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ যদি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ইত্যাদি রোগে ভোগেন এবং ওজন বেশী হয়, তাহলে করোনায় আপনাকে অন্যদের চাইতে বেশী সতর্ক থাকতে হবে।
৮. আপনি বিশ্বাস করুন আর নাই বা করুন, সারাবিশ্বে করোনার প্রকোপ ধীরে ধীরে কমছে। মহামারির গতি-প্রকৃতি নির্ধারণের জন্য বিশেষ ব্যাখ্যা বা গ্রাফ ব্যবহার করা হয়, যেটি ওয়ার্ল্ড মিটারে গেলে আপনি দেখতে পাবেন না। কিন্তু এই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ স্থায়ীভাবে সমগ্র বিশ্বে মানুষের মনে একটা নেগেটিভ প্রভাব ফেলে দিয়েছে। তাই শারীরিক সুস্থতার সাথে মানসিক সুস্থতায়ও গুরুত্ব দিন। ভালো ও বিশ্বাসযোগ্য খবর পড়ুন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলেও ফোন, ইমেইল, মেসেজ কিংবা Social Media এর মাধ্যমে পরিচিতজনদের খোঁজ খবর নিন।
৯. আর সকল ধর্মের মানুষেরা বেশি বেশি করে প্রার্থনা করুন এই মহা দুর্যোগ থেকে মুক্তি পাবার জন্য।
Fag end এ বলতে চাই, এখন পর্যন্ত গত ২০ বছরে আবির্ভূত ৭ ধরণের করোনা ভাইরাসের মধ্যে সার্স ও মার্স ছাড়া কোনটিই নির্মূল হয়নি। ঘুরে ফিরে বাকি ৪টি করোনাভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত করে জ্বর সর্দি কাশি হতেই থাকে। করোনা ভাইরাসে সৃষ্ট জ্বরের জন্য উন্নত বিশ্বে প্রতিবছর ‘ফ্লু-শট’ নিতে হয়। সুতরাং করোনা ভাইরাস সহসাই নির্মূল হবে না। পৃথিবীর ন্যূনতম ৮০ শতাংশ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবার আগ পর্যন্ত এর থেকে মুক্তি নেই। মনে রাখবেন শুধুমাত্র টেস্ট করা মানুষদের মধ্যে ৭২ লক্ষ করোনায় আক্রান্ত হলেও, টেস্ট হয়নি এমন আরও কোটি কোটি মানুষ ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং বেশীরভাগ মানুষ সুস্থও হয়ে গেছেন। যেহেতু করোনা একটি দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যা তাই ইহা কতদিন স্থায়ী হবে তা কেউই জানে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের মতে মানব জাতিকে দীর্ঘ দিন করোনা মোকাবেলা করেই টিকে থাকতে হবে। কেবল লকডাউন না প্রয়োজন সচেতনতা ও সাবধানতা। জীবন তো থেমে থাকতে পারে না। ইতিমধ্যে যা ভুল হবার হয়ে গেছে, উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো সকলে মেনে চললেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস। সমবেত চেষ্টার বিকল্প নেই।
লেখকঃ আয়েশা সিদ্দিকা লোপা, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী।