সব
facebook apsnews24.com
গর্ভবতী হাতির মৃত্যু প্রসঙ্গে যে কথা কেউ বলেনি। - APSNews24.Com

গর্ভবতী হাতির মৃত্যু প্রসঙ্গে যে কথা কেউ বলেনি।

গর্ভবতী হাতির মৃত্যু প্রসঙ্গে যে কথা কেউ বলেনি।

তার মানে প্রাণিহত্যার পক্ষে নয়। প্রয়োজন। প্রয়োজন সময়কে নিয়ে খেলে!আনারস খাইয়ে ফায়ার ক্রাকার ইউজ করে প্রাণী হত্যা ব্রুটাল, কেঁচো খাইয়ে বরশী দিয়ে প্রাণী হত্যা কি ব্রুটাল নয়?যেইসব এলাকায় হাতির বিচরণ আছে সেইসব এলাকায় হিউম্যান & এলিফ্যান্ট ক্লাশ খুব নরমাল ঘটনা, প্রতি বছর অন এভারেজ তিনশ+ ইন্ডিয়ান মানুষ হাতির হাতে মারা যায়। ইন্ডিয়ার কম শিক্ষিত হাতি উপদ্রুত এলাকার মানুষের কাছে বন্য হাতি একটা ভয়াবহ প্যারার নাম। হাতি যখন কাউকে খুন করে, একদম থেঁতলে ফেলে,দুই টুকরা করে ফেলাও নতুন কিছু না। ফলে যা হয় হাতি উপদ্রুত এলাকার মানুষ বন্য হাতির প্রতি তীব্র ঘৃণা ফিল করে।দ্যা হিন্দুর হিসেবে শুধু ২০১৫-২০১৮ সালের তিন বছরে ১৭১৩ জন মানুষ সরাসরি হাতির হাতে খুন হয়েছে! একই সময়ে আন ন্যাচারাল কারনে খুন হওয়া হাতির সংখ্যা ৩৭৩ টি। কিন্তু মোট মৃত্যুর ৬০% হয়েছে আসলে বিদ্যুৎ শক থেকে।এছাড়াও অবৈধ শিকার হয়, রিভেঞ্জ কিলিং আছে, পয়জনিং আছে। তবে ইলেক্ট্রিক শকের পরে হাতি হত্যার দ্বিতীয় বৃহত্তম কারন হচ্ছে ট্রেন এক্সিডেন্ট,৬২ টা হাতি ট্রেইন অ্যাকসিডেন্টে মারা গিয়েছিলো। দ্রুত নগরায়ন আর বাসস্থান ধ্বংসের কারনে হাতি আর মানুষের কনফ্লিক্ট বাড়ছে এটা সত্য, এটাও সত্য যে একমাত্র মানুষই এরজন্য দায়ী।আবার এটাও সত্য যে দূর্গম অঞ্চলে যারা চাষাবাদ করে তাদের প্রায় বেশিরভাগই গরীব এবং মোটামুটি অশিক্ষিত। প্রতিদিন ইন্ডিয়ায় অন্তত একজন মানুষ হাতি বা বাঘের আক্রমনে মারা যায়।তাদের কেউই বলতে গেলে ধনী লোক নয়।আনারসে ফায়ার ক্রাকার ভরিয়ে সেটা খাইয়ে হাতি খুন করাটা নতুন লেভেলের বর্বরতা।এটাকে কোনো অবস্থাতেই সাপোর্ট করা যায় না। কিন্তু যারা এই কাজটা করেছে “কেন” করেছে এটা কি আমরা আরামে বসে মোবাইল টিপতে টিপতে বুঝি? পার্সোনালি নিবেন না প্লিজ, কেন এমন করে এটা সত্যিই আমরা বুঝি কিনা এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।ডিসেপশন করে প্রাণী শিকার মানুষ যুগ যুগ ধরে করে আসছে, মানুষ এখনও বরশী দিয়ে মাছ ধরে, সবাই যে খাওয়ার জন্য করে তা না, সাম পিপল ডু ইট ফর স্পোর্ট অ্যাজ ওয়েল ! মানে আনন্দের জন্য মাছ শিকার আর কি!! আবার খাওয়ার জন্যেও তো কম পরিমান প্রাণী জবাই করা হয় না! খাওয়ার জন্য যেখানে আপনি প্রাণী হত্যাকে কোয়েশ্চেন করতে পারেন না, সেখানে, নিজের & ফ্যামিলির, প্রটেকশন বা নিরাপত্তার জন্য অন্য একটা প্রাণী হত্যাকে কিভাবে কোয়েশ্চেন করবেন? আপনি ঠিক কোন বেসে দাড়িয়ে এই প্রতিবাদ করবেন,বিষয়টা হিপোক্রেসি হবে কি?এনসারটা হচ্ছে, “না হবে না”।আমরা সবসময়ই যে নিরুপায় হয়েই শুধু যে মাংস খাই বিষয়টা কিন্তু তা নয়, তবে প্রয়োজন থেকে খাই বিষয়টা সত্য। এটার পক্ষে বিপক্ষে মত আছে,সেইসব নিয়ে আমরা আপাতত কথা বলবো না, আবার প্রটেকশনের কারনে অন্য প্রাণীকে খুন করতে হবে এমন সিচুয়েশন যেন ক্রিয়েট না হয় এটার দায়িত্ব কিন্তু এককভাবে মানুষেরই। তাই কোয়েশ্চেন করাটাই যৌক্তিক এবং কোয়েশ্চেন করতেই হবে। ফায়ার ক্রাকার বা বাজির এক্সপ্লোশনের কারনে প্রেগন্যান্ট হাতিটার মৃত্যু হয়নি, হাতিটার মৃত্যু হয়েছে সেই এক্সপ্লোশন থেকে সৃষ্ট ইনজুরি থেকে,অনেক্ষন পরে। যেভাবেই মৃত্যু হোক খুব ব্রুটাল ভাবেই মৃত্যু হয়েছে, একই ভাবে সব কিলিংয়ই আসলে ব্রুটাল। যেমন বরশীর কথা বলছিলাম, বরশীর কারনে মাছ তো মারা যায় না, মাছ মারা যায় পানি থেকে তোলার কারনে দম বন্ধ হয়ে। মাছ চিৎকার করে না দেখে বোঝেন না কিন্তু সাফোকেটেড করে মৃত্যু আসলে অনেক ব্রুটাল। খাওয়ার জন্য মাছ শিকার আপনি আমি সাপোর্ট করি ঠিক আছে।কিন্তু পদ্ধতিটা যে ব্রুটাল এটাতে কোনো সন্দেহ রাখা উচিত নয়। শুধুমাত্র মজার জন্য অনেকেই শিকার করেন,মাছও ধরেন এগুলোও সাপোর্ট করা না করা একান্তই আপনার হাতেই ছেড়ে দিলাম।অন দ্যা আদার হ্যান্ড বন্য হাতি যে দিক দিয়ে যায় সেই দিকে ফসল গাছপালা বাড়ি ঘর কোনো কিছুরই কেয়ার করে না,এই জন্যই এতো এতো ইলেক্ট্রিক শক আর ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়, হাতির ঘাড়ত্যাড়ামি এটা তাদের নরমাল বিহেভিয়ার,জাজ করার কিছু নেই। হাতি তার আদি অকৃত্রিম হিসেবেই চলবে, কাউকে যদি এ বিষয়ে আপোষ করতে হয় তাহলে সেটা মানুষকেই। আর সবসময় যে বাসস্থান আর খাবারের অভাবেই যে হাতি লোকালয়ে চলে আসে তাও না, পাকা ধানের লোভও হাতি সামলাতে পারে না,তাদের ঘ্রাণ শক্তি ভালই, তখন তারা জঙ্গল থেকে লোকালয়ে অ্যাটাক দেয়। মানুষ ধান রক্ষা করতে যায়, ধাওয়া দেয়, হাতিও মানুষকে পিষে টিষে চলে যায়, মানুষ তখন ভয় দেখানোর জন্য, প্রটেকশন আর রিটেলিয়েশনের জন্য হাতি খুনের প্লান আঁটে। তবে এইটা বলার অপেক্ষা রাখে না, পুরো প্রবলেমটা শুরুই করেছে মানুষ নিজে।মূলত হাতির বাসস্থান ধ্বংস,খাবার আর পানি ধ্বংসটা মানুষই করেছে।এর ফলে হাতির সাথে সাথে মানুষও সাফার হচ্ছে।ইন্ডিয়ান গভর্নমেন্ট,ইভেন বাংলাদেশ সরকারও আসলে হাতি রক্ষার জন্য খুব আন্তরিক, যেমন বাংলাদেশেই কক্সবাজারে রেল লাইন যাবে, শুধু হাতি প্রটেক্ট করার জন্যই কয়েকহাজার কোটি টাকা এক্সট্রা খরচ হবে।হয়তো সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টে খরচ তো একটু বেশিই। তবে আরো অনেক পদ্ধতি আছে যাতে প্রাণহানি কমানো সম্ভব শুধু সচেতনতা বাড়িয়েই। এজন্যই যে কোনো ব্রুটালিটির বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারণা খুব দরকার।কিন্তু রুট লেভেলে গ্রাম পর্যায়ের মানুষের সচেতনতার লেভেল নেক্সট টু জিরো। এখানে কর্তৃপক্ষের ল্যাকিংসটা হলো তারা মানুষকে ম্যাসিভ স্কেলে সচেতন করতে পারে না। জন্ম থেকেই মানুষ সচেতন হয়ে জন্মায় না, ওভার দ্যা টাইম এটা শিখতে হয়। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট আর সচেতনতা বৃদ্ধি যদি না হয় তাহলে আগামীতেও এমন ব্রুটাল ঘটনা আরো অনেকবার দেখার দূর্ভাগ্য আমাদের হবে।কেরালায়,আনারসে এক্সপ্লোশনে হাতি মারা যাওয়ার ঘটনায় আমার নিউজফিড সমবেদনায় ভরে গেছে & দ্যাটস আ ভেরি গুড থিং, এইটাই হওয়া উচিত, নাহলে কষ্ট পেতাম। কিন্তু জানেন কি গতকালই ইথিওপিয়ায় ছয়টা হাতি খুন হয়েছে? আই গেস জানেন না, না জানাই স্বাভাবিক কারন আমরা বেশি খোঁজ খবর রাখার প্যারা নিতে চাই না। আর ইন্ডিয়ার ঘটনাটা বেশি কাছে তাই আমাদের টাচও করবে বেশি। বাজি দিয়ে খুন করুন আর বুলেট দিয়ে,যেভাবেই হোক।সবই ব্রুটাল ঘটনা। সব ঘটনার জন্য প্রতিবাদ করাও সবার পক্ষে সম্ভব না।কিন্তু যতটুকু হচ্ছে সেটাই হোক অন্তত।যাই হোক কেরালায় হাতিটাকে খুন করার জন্য আনারসে বাজি ভরানো হয়নি, এক আনারস ভর্তি বাজিতে হাতি মরে না, আর কেরালায় হাতি খুব আদরের একটা প্রাণী।প্রচুর ইজ্জত দেয়া হয় তাদের। স্যাক্রেড একটা ভাব আছে প্রাণিটিকে নিয়ে, মূলত আনারসটা ওখানে রাখা হয়েছিলো বন্য শূকর ধরতে অথবা বন্য শূকরকে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিতে। বন্য শূকর খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে আর হাতির চেয়েও বেশি ধানের ক্ষতি করে, বাহুবালী মুভিতেও শূকর শিকার পার্টির ঘটনা দেখেছেন নিশ্চই, ইউ ক্যান রিলেইট আই গেস,বাজি কিংবা তীর ধনুকের ব্যবহার, উদ্দেশ্য তো মেইনলি খুন করাই, ভয় দেখানোই,ডিফারেন্সটা খুব বেশি না। আর বন্য শূকর যেহেতু কিছু জায়গায় খাওয়াও হয় ঐ দিকে, তাই ওখানে শূকর ধরা কমন প্রাকটিসও বটে। প্রাথমিক কিছু নিউজে এমনই দেখেছি, তদন্তেই সব বের হবে আশা করি, সব মানুষকে বিশ্বাস নেই ইচ্ছা করেও হয়তো এই ব্রুটালিটি কিছু মানুষ ঘটিয়ে থাকতে পারে।এটার সম্ভাবনা অনেক বেশি।ঐ এলাকায় শুকর তাড়াতে আনারসে বাজি ঢুকিয়ে খামারের আশেপাশে ফেলে রাখা হয়, ভারতীয় স্কাই নিউজ অনুযায়ী এখন পর্যন্ত এটাও শিওর না যে ফলটা আনারসই ছিল কিনা,আর ঠিক কোথায় প্রাণিটা বাজি ভর্তি ফল খেয়েছিলো, সেটাও কনফার্মড না। হাতির চোয়াল অনেক শক্ত কিন্তু কিছু নিউজে দেখলাম হাতিটার চোয়ালই ভেঙ্গে গেছে, ভয় দেখানোর জন্য ইউজ করা বাজির এতো শক্তি থাকার কথা নয়। কনফিউশান অনেক আছে, প্রোপার তদন্তে বের হয়ে আসবে।ছবিতে হাতিটার পেট ফোলা ছিল না, তাই খুজছিলাম প্রেগন্যান্সির ব্যাপারটা নিয়ে, হাতিটা ঠিক কত মাসের প্রেগন্যান্ট ছিল এমন কংক্রিট তথ্যও পাওয়া গেল না, একজায়গায় দেখলাম ১৮ মাস পর বাচ্চা হতো এমন একটা আইডিয়া করা হয়েছে। এশিয়ান এলিফেন্টের ১৮-২২ মাস সময় লাগে বাচ্চা হতে।যাই হোক হাতি অনেক কিউট একটা প্রাণি, প্রচন্ড ম্যাজেস্টিক, কিন্তু হাতিকে হাতির মতোই তার টেরিটোরিতে মুক্তভাবে চলার সুযোগ করে দিতে হবে। এজন্যই সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট আর সচেতনতা দরকার। আমরা একটা ব্রুটালিটির বিরুদ্ধে কথা বলবো। জেনে বুঝেই বলবো জাস্ট ঝোঁকের বসে বলবো না,তারপর দুইদিন পর ভুলে যাবো না,এটাই হওয়া উচিত। প্রবলেমটাই না বুঝলে কোনো সমাধানেও আসা সম্ভব না।এই পোস্টের উদ্দেশ্য কখনোই কোনো বন্যপ্রাণীকে খুন করা জাস্টিফাই করবার জন্য না।হিউম্যান & এনিম্যাল কনফ্লিক্ট দূর করার এতো বিকল্প থাকার পরেও, একটা বন্যপ্রাণী খুন করাকে মেনে নেয়ার কিছু দেখি না, আমি সকল ধরনের ব্রুটালিটির বিপক্ষে। তবে সব কিছুই জানা থাকা দোষের কিছু নয়। হিউম্যান – এলিফ্যান্ট কনফ্লিক্টটা তাই আমাদের জানতে হবে।

অপূর্ব সাইমন্

আপনার মতামত লিখুন :

পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩, যেসব বিষয় জানা জরুরী

পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩, যেসব বিষয় জানা জরুরী

সামাজিক ব্যাধি পরকীয়া: কারণ ও আইনী প্রতিকার

সামাজিক ব্যাধি পরকীয়া: কারণ ও আইনী প্রতিকার

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj