সাইদুর রহমান
যৌতুক সামাজিক ব্যাধি। সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব অনেক। প্রতিদিনই সংবাদপত্রের পাতা খুললেই দাম্পত্য কলহ নিয়ে মেলে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ। দাম্পত্য কলহের কারণে যৌতুক মামলা থেকে শুরু করে খুনের ঘটনা ঘটছে অহরহ।তবে বেশির ভাগ নারীরা সংসারে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হলেই যৌতুকের মামলা দিয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে মিথ্যা মামলা দেয়ার কারণে পুরুষরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। বেশির ভাগ পুরুষরা চাপা স্বভাবের হওয়ার কারণে তার নিজের কষ্ট মুখে বলতে পারেন না। মুখ লুকিয়ে কাঁদেন। তবে মিথ্যা মামলায় যে কোনো পুরুষ হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮’ তে প্রতিকার রাখা হয়েছে। এটা পুরুষদের জন্য সংবাদ।
‘মিথ্যা মামলা-সংক্রান্ত শাস্তির ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের অভিপ্রায়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের অধীনে মামলা বা অভিযোগ করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নেই জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান তাহলে তিনি বা তারা অনধিক ৫ বছর মেয়াদের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এর আগে যৌতুকের মিথ্যা মামলার জন্য আইনে কোনো বিধান ছিল না।
আসুন জেনে নেই ‘যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮’ এর যৌতুকের মিথ্যা মামলায় হতে পারে যেসব শাস্তি। নতুন আইন সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল যৌতুকের মিথ্যা মামলা করলে শাস্তি হবে। যৌতুক নিয়ে মিথ্যা মামলা করলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের জেল হতে পারে। এছাড়া সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কী ধরনের আইন ‘মূল আইনটি একটি অর্ডিন্যান্স ছিল- দ্য ডাউরি প্রহিবিশন অর্ডিন্যান্স। প্রথমে ১৯৮০ সালে একটি আইন করা হয়। সেটা ১৯৮২ সালে একটি অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। এরপর ১৯৮৪, ১৯৮৬ সালে সংশোধন করা হয় অর্ডিন্যান্স দিয়ে।
এটাকে হালনাগাদ করার জন্য নতুন করে আইন করা হয়েছে। পুরাতন আইন আগের আইন আগের আইনের ধারাগুলো নতুন আইনে মোটামুটি একই রকম আছে। সামান্য একটু পরিবর্তন করে এটাকে আনা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধের মূল দণ্ড আগের মতোই আছে। তবে জরিমানার ক্ষেত্রে একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে।’ যৌতুক দাবি যৌতুক দাবি করার দণ্ড আগে ছিল ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা। এখন দণ্ড আগের মতোই তবে জরিমানা ফিক্সড করে দেয়া হয়েছে- সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা।’ যৌতুক দেয়া বা নেয়ার শাস্তি ‘যৌতুক দেয়া বা নেয়ার শাস্তি ছিল এক থেকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা জরিমানা।
তবে জরিমানা নির্দিষ্ট করা ছিল না। নতুন আইনে কারাদণ্ড ঠিক রাখা হয়েছে। তবে জরিমানা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা।’ জরিমানা নির্ধারণ শাস্তির ক্ষেত্রে যেখানে জরিমানার কথা বলা ছিল নতুন আইনে সেখানে পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেটা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। শাস্তির ক্ষেত্রে জেল বা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
লেখকঃ সাইদুর রহমান (রিপন) শিক্ষানবিশ আইনজীবী জজকোর্ট, মেহেরপুর ০১৯২০৪৫৮৮৮৭
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত।