সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিপরীতে ভারতের অংশে দুই বাংলাদেশি বাঘের আক্রমণে নিহত হওয়ার খবরে সংশয় তৈরি হয়েছে। সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে তারা তিনজন বাঘের কবলে পড়ার খবর এলেও ‘নিহত দুজন’ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মারা যেতে পারেন বলে স্থানীয়দের ধারনা।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে তিন জেলের একজন আবু মুসার মোবাইলফোনে কলের বরাতে খবর আসে তাদের বাঘে ধরেছিল। এসময় শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম কৈখালী গ্রামের কফিলউদ্দিনের ছেলে রতন (৪২) ও একই গ্রামের মনোমিস্ত্রির ছেলে মিজানুর রহমান (৪০) নিহত হন।
তবে রাত থেকে আবু মুসার আর খোঁজ মিলছে না। তিনি পশ্চিম কৈখালীর সাত্তারের ছেলে। তিনিই রতন ও মিজানুরকে বাঘে ধরার খবরটি দিয়েছিলেন। আবু মুসার ভাইপো আল আমিন তার চাচার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, তারা তিনজন ভারতের সীমখালী খালে কাঁকড়া আহরণের সময় একটি বাঘ রতন ও মিজানুর রহমানকে আক্রমণ করে। এসময় আবু মুসা বনের ভেতরে পালিয়ে রক্ষা পান।
আল আমিন জানান, তার চাচা আবু মুসার শ^শুরবাড়ি ভারতে। বাঘের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে মুসা প্রথমে শ্বশুর বাড়িতে খবর দেন। পরে সেখান থেকে মুসার বাড়িতে তাদের খবর জানানো হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য, নিহত রতন ও মিজানুর রহমানের মরদেহ সুন্দরবনের ভারতীয় অংশের একটি খালে ভাসছিল। বিএসএফ মিজানুরকে আটক করে রতন ও মিজানুরের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়। যদিও তারা রতন ও মিজানুরের মৃত্যু বাঘের আক্রমণে না গরুপাচারের সময় বিএসএফর গুলিতে তা নিশ্চিত নন বলে জানান।এলাকাবাসীর দাবি, ‘নিহত’ রতন ও মিজানুর এবং ‘নিখোঁজ’ মুসা জেলে পেশার সঙ্গে জড়িত নন। তারা গরু পাচারে জড়িত বলে এলাকাবাসী জানে।
সুন্দরবনের কৈখালী ফরেস্ট স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু সাঈদ জানান, তারা পাশ না নিয়েই সুন্দরবনে প্রবেশ করে এবং ভারতীয় অংশে গিয়ে কাকড়া ধরার সময় বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে তার কাছে আর কোনো তথ্য নেই।
অন্যদিকে বিজিবির সাতক্ষীরার নীলডুমুর ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইয়াসিন চৌধুরী জানান, সুন্দরবনের ভারতের অংশে বাংলাদেশি দুই জেলে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। সে অনুযায়ী তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন। ঘটনা সঠিক হলে নিহত বাংলাদেশিদের মরদেহ উদ্ধারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে