সব
facebook apsnews24.com
গর্ভপাত যখন অপরাধ ও যখন অপরাধ নয়। - APSNews24.Com

গর্ভপাত যখন অপরাধ ও যখন অপরাধ নয়।

গর্ভপাত যখন অপরাধ ও যখন অপরাধ নয়।

নূরুন্নবী সবুজ

আইন অনাগত-আগত প্রত্যেক ব্যাক্তির অধিকার নিশ্চিতের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অনেক কাজগ প্রথম দৃষ্টিতে শুধু মাত্র ব্যাক্তির কাজ হয়। কিন্তু সে কাজগুলো সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে সমাজের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে। অনিয়ন্ত্রিত যেীনাচার সামাজিক অবক্ষয়ের একটি অন্যতম উপসর্গ। সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক যে অবনতি হয় ও হচ্ছে তার অন্যতম সাক্ষী হয়ে থাকে অবৈধ গর্ভপাত। আমাদের বাংলাদেশে নানা সময় এরকমের ঘটনা ঘটে থাকে। এই গর্ভপাত কখন আইন সমর্থন করে আর কখন করে না তা দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩১২-৩১৪ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।

আত্মরক্ষার অধিকারে একজন ব্যক্তিকে প্রয়োজন বিশেষে কাউকে হত্যার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। আইন যেহেতু মানুষের জন্য তাই মানুষের সুরক্ষা দেওয়াও এর একটি কাজ। যার গর্ভে সন্তান আছে শুধুমাত্র তাকে বাচানোর জন্যই গর্ভপাতকে বৈধ করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ তা অপরাধ নাও হতে পারে। তবে এই বাচানোর অযুহাতের পিছনেও যদি কোন অসৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে তা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ হবে ( দন্ডবিধি,১৮৬০ এর ধারা ৩১২) ৩১২ ধারায় আরো যে কথা বলা হয়েছে কোন গর্ভবতী মেয়ের শুধুমাত্র তার জীবন রক্ষার্থে গর্ভপাত করানো যাবে। এই কাজটি সরল বিশ্বাসে হবে আর তাতে কোন প্রতারণা থাকা যাবে না। এই গর্ভপাত গর্ভবতী নারী ঘটালেও যেমন অপরাধি হবে তেমনি অন্য কেউ ঘটালেও সে অপরাধী হবে। অর্থ্যাৎ কোন মেয়েও তার নিজের গর্ভপাত ঘটানোর অধিকার রাখে না। এমন অপরাধের শাস্তি আইনে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এক্ষেত্রে শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদন্ড বা অর্থ দন্ড বা দুটোই ।

আবার পেটে যদি বাচ্চার বিচরণ অনুভব করা যায় বা নাড়াচাড়া করে তাহলে শাস্তির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৭ বছর থেকে যে কোন মেয়াদের হতে পারে পাশাপাশি অর্থদন্ড হতে পারে আবার একসাথে দুই শাস্তিও হতে পারে। আবার কোন ব্যাক্তি যদি স্ত্রীলোকটির অনুমতি ব্যতিত এমন গর্ভপাত ঘটায় তাহলে তার শাস্তি যে কোন মেয়াদের শাস্তি যা সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড হতে পারে এর সাথে অর্থদন্ডও হতে পারে। আবার আদালত যদি উপযুক্ত মনে করে তাহলে দুই ধরণের শাস্তিই একসাথে দিতে পারে ( দন্ডবিধি, ১৮৬০ ধারা ৩১৩) ৩১৪ নং ধারায় আরো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক সময় গর্ভপাত ঘটানোর জন্য গ্রামীণ বা ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। গর্ভপাত করানোর ঘটনা যে পদ্ধতিতেই করা হোক না কেন তার ফলে যদি কোন গর্ভবতীর মৃত্যু ঘটে তাহলে সে ব্যাক্তির ১০ বছর হতে তার নিচে যে কোন মেয়াদের কারাদন্ড হতে পারে।

আবার আদালত কারাদন্ড না দিয়ে অর্থদন্ড দিতে পারে। আদালত যদি এতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে না পারে তাহলে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দু‘টোইএকসাথে দিতে পারে। সমাজের বুকে সম্ভাব্য সকল অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করে তার কুপ্রভাব বন্ধ করতে আইন ও আইনের বিধানগুলো ভূমিকা রাখে। আইন ও আদালতের পাশাপাশি ব্যক্তি সচেতনতা ও বিবেক যতেষ্ট কাজ করালেই কাঙ্কিত সামাজিক শান্তির সমাজ নিশ্চিত করা সম্ভব।

লেখকঃ নূরুন্নবী সবুজ, আইন বিশ্লেষক ও কলামিষ্ট। mdnurunnobiislam379@gmail.com

মতামত লেখকের সম্পূর্ণই ব্যক্তিগত।

আপনার মতামত লিখুন :

পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩, যেসব বিষয় জানা জরুরী

পারিবারিক আদালত আইন ২০২৩, যেসব বিষয় জানা জরুরী

সামাজিক ব্যাধি পরকীয়া: কারণ ও আইনী প্রতিকার

সামাজিক ব্যাধি পরকীয়া: কারণ ও আইনী প্রতিকার

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরব গাঁথা মার্চ মাস

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন, আইন কি বলে!

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

বাংলা ভাষার সর্বজনীন ব্যবহার নিশ্চিত হোক

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

ইসলামী ব্যাংকিং পূর্ণতা পাওয়ার পথে সমস্যা: সমাধানের উপায়

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj