আইনজীবীরা পড়েছে মহা বিপাকে ও সংকটে। চলছে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট। পক্ষে বিপক্ষে আইনজীবীদের অবস্থান। বিপক্ষের সংখ্যাই বেশি। তবে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের প্রতি আইনজীবীদের অনাস্থা নেই। মহান আদালত আইনজীবীদের জন্য পবিত্র পেশাস্থল। আদালতের সকল আদেশ আইনজীবীদের জন্য আইনী বাধ্যবাধকতা। কিন্তু পর্যায়ক্রমিক আদেশগুলো আরো জটিল করে তুলছে আদালত ও আইনজীবীদের৷ এখন আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়াও তো জটিল হলো, আত্মসমর্পণ করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আইনজীবীরা আদালতে আসবেন, এজলাসে বসবেন বিচারকবৃন্দও এবং ডকে থাকবে আসামী। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কেউ পড়বে না তা বলা যাবে না। তারপরও এমন আদেশকে সাধুবাদ জানানো যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, যদি কোনো আসামীর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত তাহলে সেই ভার্চ্যুয়াল কোর্টেরই শরণাপন্ন হতে হবে, তাই নয় কি? তাহলে বিচারক, আইনজীবীদের ও কর্মচারী কর্মকর্তাদের বারবার আদালতে আসতেই হচ্ছে; এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে বরং কমবে না।
অন্যদিকে জেলা জজ বা মহানগর দায়রা জজ এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালগুলোতেও আসামীদের আত্মসমর্পণের বিষয়ে কোনো আদেশ দেয়া হয়নি। এভাবে আদালত পরিচালনায় ভেঙে ভেঙে আদেশ আসাতে আইনজীবীরা উপায়ন্তর না পেয়ে বারবার কোর্টে আসছেন। চরমভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে তাই অনেক আইনজীবী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অনেকে আক্রান্ত হয়ে হোম কোয়ারান্টাইন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে কয়েক দফা আইনজীবীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত কোর্ট খুলে দেবার জোর দাবী ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে যাচ্ছেন।
তারা বলছেন, যেহেতু ভার্চুয়াল কোর্টে একজন আইনজীবীকে কয়েকবার আসতে হচ্ছে তাহলে নিয়মিত কোর্ট হলে সমস্যাটা কোথায়? ভার্চুয়াল কোর্ট করতে গিয়ে ইতিমধ্যেই বিচারক, বিচারপতি, আইনজীবী ও আদালতের কর্মচারী কর্মকর্তাগণ অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। ভার্চুয়াল কোর্টে যেখানে নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা হলো না সেখানে নিয়মিত কোর্ট খুলে দিলে একই স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হবেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীগন। তাই এই জটিল আইনী প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসা জরুরি বলে সবাই মতামত প্রকাশ করেন। তাতে চরম দুঃসময় থেকে মুক্তি পাবেন অধিকাংশ আইনজীবী, বিচারক, কর্মকর্তা কর্মচারী, বিচারপ্রার্থীগন। যুক্তি অধিকাংশ আইনজীবীগণের। সবদিক বিচার বিশ্লেষণ ও বিবেচনা করে দ্রুত একটি ভারসাম্যপূর্ণ আদেশ আশা করছেন আইনজীবীগন।
#মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম (নাহিদ শাহীন)
আইনজীবী ও লেখক।