মতিউর রহমান
মানুষ স্বভাবত প্রতিশোধ পরায়ন। প্রাচীন জুরিস্টদের মতে রাষ্ট্রের মৌলিক কাজ দুটি- যুদ্ধ এবং বিচার। বিচার এবং শাস্তির ধারণা পৃথিবীর শুরু থেকে ছিল না। প্রথম দিকে কেউ কারোর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হলে ব্যক্তিগতভাবে নিজে বা তার পরিবার বা গোষ্ঠী এর প্রতিশোধ নিত। এতে হামলা পাল্টা হামলা চলতেই থাকত। দেখা যেত অপরাধ করেছে একজন, প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার পরিবারের কাওকে পেলে তার ক্ষতি করা হত। এভাবে প্রতিশোধের মাধ্যমে একটা অপরাধের পাল্টা জবাব হিসেবে তার থেকেও বেশি বড় অপরাধ করার রীতির প্রচলন ছিল। এরপর কালক্রমে স্বীকৃত গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের নেতাদের উপর প্রতিশোধের দায়িত্ব অর্পিত হয়।
এ পর্যায়ে কোন অপরাধের জন্য সম পরিমাণ প্রতিশোধ নেয়া হত। যেমন- হাতের বদলে হাত, চোখের বদলে চোখ কিংবা জীবনের বিনিময়ে জীবন নেয়া হত।সর্বশেষ স্তরে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবার পর আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষ থেকে রাষ্ট্র এই প্রতিশোধ গ্রহণ করে ভিক্টিমের মনকে শান্ত করা শুরু করল। ফলে কোন ভিক্টিম দূর্বল হলেও অন্তরে প্রতিশোধের ব্যর্থ বেদনা থেকে মুক্তি পেল। পাশাপাশি অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য রাষ্ট্র গবেষণার ভিত্তিতে শাস্তির ধরন পরিবর্তন করল।ধর্ষণের শাস্তিসহ যেকোন অপরাধের শাস্তি প্রদানের যৌক্তিকতা বুঝতে হলে প্রথমে সাঁজা প্রদানের উদ্দেশ্য বুঝতে হবে।শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু দার্শনিক তত্ত্ব রয়েছে। শাস্তি সংক্রান্ত তত্বগুলোকে মোটামুটি ৫ ভাগে বিভক্ত করা হয়। সেগুলো হলঃ১) দৃষ্টান্তমূলক তত্ব বা Deterrent Theory of punishment:এক্ষেত্রে শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে এমনভাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয় যে ভবিষ্যতে অন্য কেউ কোন অপরাধ করার ক্ষেত্রে শাস্তির কথা ভেবে অপরাধ করা থেকে বিরত থাকে।
“কেবলমাত্র অপরাধকে নয়, বরং অপরাধীকে ঘৃণা কর” এটাই এর মূলনীতি। ধর্মীয় আইনগুলোতে সাধারণত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অস্তিত্ব দেখা যায়। এই প্রকারে শাস্তি দিতে হয় জনসম্মুখে।এই দৃষ্টান্তমূলক তত্ত্বের সমালোচনায় দেখা যায়- ইংল্যান্ডে পকেটমারের শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। তখন দেখা যেত পকেটমারের শাস্তি দেখতে আসা লোকজনের সেখানেই পকেটমার হত। কাজেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অপরাধ প্রতিরোধে ব্যর্থ প্রমাণিত হয়। বাংলাদেশে ২০০৪ সাল থেকে র্যাব কর্তৃক বন্দুক যুদ্ধ বা ক্রস ফায়ারের মাধ্যমে গুরুতর অপরাধের মামলায় অভিযুক্তদেরকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা শুরু হয়।
এরপর পুলিশ এবং সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমেও এভাবে অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে লাশ প্রকাশ্য স্থানে ফেলে রেখে জনগণকে দেখিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, সংবাদ মাধ্যম এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মনে করেন । এতে গত ১৬ বছরে অপরাধ বিন্দুমাত্র কমেনি, বরং আরো বেড়েছে। কাজেই আবার প্রমাণিত হয় যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অপরাধ দমনে সফল কোন পদ্ধতি নয়। বাস্তবে নিষ্ঠুর শাস্তির সাথে সাথে মানুষের শাস্তি ভীতি কমে যায় এবং জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং মায়া কমে গিয়ে আরো বেশি অপরাধপ্রবন করে তোলে।2) প্রতিরোধ তত্ব বা preventive theory:এই তত্ব অনুসারে অপরাধীকে এমনভাবে শাস্তি দেয়া হয় যাতে সে নিজে যেন ভবিষ্যতে আর কোন অপরাধ করতে না পারে।
কারাদণ্ড, নির্বাসন, অঙ্গহানি প্রভৃতির মাধ্যমে তার অপরাধ করার সক্ষমতা ধ্বংস করা হয়। এর ফলে যারা ইতিমধ্যে অপরাধ করেছেন, কেবল তাদের থেকে ভবিষ্যৎ অপরাধের ঝুঁকি কমে। কিন্তু নতুন অপরাধী সৃষ্টি হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়না।3) সংশোধনমূলক তত্ব বা Reformative theory:মানুষ অপরাধী হয়ে জন্মায়না। পরিস্থিতির কারণে সে অপরাধ করে।এই তত্ব অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি এমনভাবে দিতে হবে যাতে সে তার ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয় এবং ভবিষ্যতে তার আর অপরাধমূলক মানসিকতা না থাকে।
সাধারণত স্থান, কাল, পাত্র, বয়স, পারিপার্শ্বিকতা ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা করে শাস্তি দেয়া হয়। শিশু এবং কিশোর অপরাধীদের ক্ষেত্রে এই তত্বের বাস্তবায়ন অধিকাংশ দেশেই জনপ্রিয়। তবে এই তত্বের সার্বজনীন প্রয়োগ করা হলে কেউই অপরাধ করার ক্ষেত্রে ভয় পাবেনা। ফলে অপরাধ আরো বাড়বে।৪) প্রতিশোধমমূলক তত্ব বা Retributive theory:মানুষ জন্মগতভাবেই প্রতিশোধ পরায়ণ। তাই কারো উপর অন্যায় করা হলে সে তার প্রতিশোধ নিতে চায়। আধুনিককালে রাষ্ট্র বিচারের মাধ্যমে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির পক্ষে সেই প্রতিশোধ গ্রহন করে তার অন্তরের প্রতিশোধ আকাঙ্খা শান্ত করে।
ফলে সে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে নিজে নতুন করে অপরাধ করেনা।এবং৫) ক্ষতিপূরণমূলক তত্ব বা theory of Compensation:যা ক্ষতি হয়েছে, যেই প্রাণ চলে গেছে, যেই সম্পদ ধ্বংস হয়েছে তা আর হুবহু ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে হ্যাঁ, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কিছুটা হলেও উপকৃত হয়। আর তাছাড়া ক্ষতিপূরণ দিতে গিয়ে অপরাধী ব্যক্তির কষ্টার্জিত অর্থ নষ্ট হয়। ফলে সে অপরাধ করতে চায়না।তবে এই তত্ব দিয়ে বিত্তশালী লোকের অপরাধ থামানো সম্ভব নয়। তারা অহংকারের সাথে ঘোষনা দিয়ে অপরাধ করতে উৎসাহী হবে।
এবার মূল আলোচনা তথা ধর্ষণের সাঁজা কেমন হওয়া উচিৎ সে বিষয়ে আলোচনা করা যাক।প্রথমে ধর্ষণের সংজ্ঞা জেনে নেয়া যাক-দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৫ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারা ৯(১) এর ব্যাখ্যায় কোন কাজ ধর্ষণ বলে গণ্য হবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।ধর্ষণ কাকে বলে?-কোন পুরুষ অতঃপর উল্লেখিত ব্যতিক্রম ভিন্ন অপর সকল ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পাঁচটি যেকোন অবস্থায় কোন স্ত্রীলোকের সাথে যৌনসঙ্গম করলে সে ধর্ষণ করেছে বলে পরিগণিত হবেঃ
প্রথমত:- স্ত্রীলোকটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে ।
দ্বিতীয়ত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতি ব্যতিরেকে।
তৃতীয়ত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতিক্রমেই, যেক্ষেত্রে মৃত্যু বা জখমের ভয় প্রদর্শন করে স্ত্রীলোকটির সম্মতি আদায় করা হলে।
চতুর্থত- স্ত্রীলোকটির সম্মতিক্রমেই, যেক্ষেত্রে পুরুষটি জানে যে, সে স্ত্রীলোকটির স্বামী নয়, এবং পুরুষটি ইহার জানে যে, স্ত্রীলোকটি তাকে এমন অপর একজন পুরুষ বলে ভুল করেছে, যে পুরুষটির সাথে সে আইন সম্মতভাবে বিবাহিত হয়েছে বা বিবাহিত বলে বিশ্বাস করে ।
পঞ্চমত:- স্ত্রীলোকটির সম্মতিক্রমে অথবা সম্মতি ব্যতিরেকে, যতি স্ত্রীলোকটির বয়স চৌদ্দ বৎসরের কম হয়।বিদ্র- ধর্ষণের অপরাধের জন্য আবশ্যকীয় যৌনসঙ্গমের জন্য যৌনাঙ্গ প্রবিষ্ট করাই যথেষ্ট গণ্য হবে। অর্থাৎ বীর্যপাত মূখ্য ব্যাপার নয়।# ধর্ষণের শাস্তিঃশাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যের তত্ত্বগুলোর সাথে সমন্বয় করে অপরাধের আনুপাতিক হারে সাঁজা দিতে হবে। অর্থাৎ ছোট অপরাধের জন্য ছোট শাস্তি, বড় অপরাধের জন্য বড় শাস্তি, আবার মাঝারি অপরাধের জন্য মাঝারি শাস্তি দিতে হবে। ধর্ষণ এবং হত্যার মাঝে তুলনা করলে হত্যা সর্বোচ্চ অপরাধ।
দুটি অপরাধের সাঁজা যদি মৃত্যুদণ্ড করা হয়, তাহলে দেখা যাবে ধর্ষণকারী ধর্ষণের পর ভাববে একে বাঁচিয়ে রাখলে তো সহজেই ধরা পড়ে যেতে হবে, এ সাক্ষী হলে নিশ্চিত মৃত্যুদণ্ড হবে। আবার একে হত্যা করলেও তো একই শাস্তি হবে। যদি ধর্ষিতাকে হত্যা করা হয়, তাহলে কিছুটা হলেও বেঁচে যাবার সম্ভাবনা থাকবে। সুতরাং যতগুলো ধর্ষণ হবে, প্রত্যেক ধর্ষিতা হত্যার শিকার হবে।কিন্তু যদি ধর্ষণের সাঁজা হত্যার থেকে আনুপাতিক হারে কম হয়, তাহলে ভিক্টিম মেয়েগুলোর প্রাণে বাঁচার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়। ধর্ষকের জন্য যেকোন মেয়াদে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অঙ্গহানি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড ব্যতীত যেকোন সাঁজার বিধান রাখা যেতে পারে।বর্তমানে বাংলাদেশে ধর্ষনের জন্য দণ্ডবিধি, 1860 এর ধারা ৩৭৬ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ধারা ৯(১) অনুযায়ী নারী ধর্ষণের সাঁজা সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন বা দশ বছর কারাদণ্ড।
অন্যদিকের ১২ বছরের কম বয়সী নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস ধর্ষণ বলে গণ্য হবে, এবং এর সাঁজা সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড।# ধর্ষণপূর্বক___হত্যার সাঁজাঃনারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, 2000 এর ধারা ৯(২) অনুযায়ী, “যদি কোন ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা উক্ত ধর্ষণ পরবর্তী তাহার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যুন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷”একই আইনের ধারা ৯(৩)- “যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষন করেন এবং ধর্ষণের ফলে উক্ত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহা হইলে ঐ দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যুন এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷”# শিশু ধর্ষণঃএকই আইনের ধারা ৯(৪) এ উল্লেখ রয়েছে,”যদি কোন ব্যক্তি কোন নারী বা শিশুকে-(ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;(খ)ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যুন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷
# পুলিশ হেফাজতে ধর্ষণঃবাংলাদেশের পুলিশের উপর জনগণের সীমাহীন আস্থা এ কথা বলে কৌতুক করতে চাইনা। পুলিশি হেফাজতে নারী ধর্ষণের ঘটনা এদেশে বহুবার ঘটেছে।নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ধারা ৯(৫)অনুযায়ী,” যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে কোন নারী ধর্ষিতা হন, তাহা হইলে যাহাদের হেফাজতে থাকাকালীন উক্তরূপ ধর্ষণ সংঘটিত হইয়াছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণ ধর্ষিতা নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরিভাবে দায়ী ছিলেন, তিনি বা তাহারা প্রত্যেকে, ভিন্নরূপ প্রমাণিত না হইলে, হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য, অনধিক দশ বত্সর কিন্তু অন্যুন পাঁচ বত্সর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অন্যুন দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷”বর্তমান প্রচলিত আইনের বিধান অত্যন্ত বাস্তবসম্মত।
কিন্তু দূঃখের বিষয় হল আইনের সঠিক প্রয়োগ হচ্ছেনা। পুলিশ এবং বিচার অঙ্গনের করাপশন, দলপ্রীতি, স্বজনপ্রীতি সব শেষ করে দিচ্ছে। বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ হলে সন্তোষজনক রেজাল্ট দৃষ্যমাণ হত।আমি মনে করি অপরাধ কমানোর ক্ষেত্রে শাস্তি কখনো কোন সমাধান নয়। মানুষের প্রয়োজন সহজ-সরল ভাবে সময়মত মেটানোর ব্যবস্থা করলে কেউ আর অপরাধ করবেনা। যারা মানসিকভাবে অপরাধ প্রবন, রাষ্ট্রকে তাদের নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। চাহিদা এবং তা মেটানোর উপায়গত যে আনুপাতিক গ্যাপ থাকে, তার ফলেই অপরাধ সংঘটিত হয়। মানুষের পারষ্পরিক বৈষম্য বিলোপ করে সাম্যতা প্রতিষ্ঠা পূর্বক চাহিদাগুলো সহজে বৈধ উপায়ে পূরণের নিশ্চয়তা বিধানের মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষের আত্মমর্যাদা অনুভূতিকে জাগ্রত করতে পারলে ভবিষ্যতে কেউ কোন অপরাধ করবেনা।
সরল মন নিয়ে সবাই সুখী-সুন্দর জীবন সাঙ্গ করে পরপারে পাড়ি দিতে পারবে।ডাকাতি এবং খুনের সাঁজা একই হলে দেখা যাবে যতগুলো ডাকাতি হবে, ততগুলো খুন হবে। ধর্ষণের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।একটা অপরাধ করার পর অপরাধী তাৎক্ষণিকভাবে মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন হবে। ভাববে, “এই কাজের জন্য যদি মরাই লাগে, তাহলে এর থেকে বড় অপরাধটাও করে মরি। এতে অন্তত আমাকে ধরা সহজ হবে না, সাক্ষী থাকবে না।” অন্যান্য অপরাধের magnitude এবংং তার শাস্তির সাথে তুলনা করে আনুপাতিক হারে কোন অপরাধের দণ্ড স্থির করা বাস্তবসম্মত। প্রচলিত আইনে ধর্ষনের যে সাঁজার বিধান আছে, তা যথেষ্ঠ।
কাজেই যারা ধর্ষণের সাঁজা মৃত্যুদণ্ডের জন্য যারা দাবি করছেন, তাদেরকে এর প্রভাব নিয়ে গভীর চিন্তা করতে হবে। আবেগে পড়ে ধর্ষিতাদেরকে প্লিজ হত্যার পরিণতির দিকে ছুড়ে ফেলবেন না। বলা বাহুল্য কোন ধর্ষক যেন পার পেয়ে না যায়।
লেখকঃ মতিউর রহমান, শিক্ষার্থী, রাবি, আইন বিভাগ।
মতামতের জন্য লেখকই দায়ী থাকিবেন।