নাসির আহামেদ।
মহামারী করোলা ভাইরাসে বিপর্যস্ত মানুষের জীবন। সারাদিন মাস্ক পরে চলাফেরা করা অথবা অফিসে কাজ করা যেমন কষ্টকর, তারচেয়ে বেশি বিড়ম্বনা লকডাউনে অফিস কর্মক্ষেত্র বন্ধ থাকা। দৈনিক অগণিত মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে তবুও সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায়, বাজারে, শপিংমলে মানুষের অবাধ বিচরণ দেখা যাচ্ছে। চারপাশের অবস্থা দেখে মনে হয় দেশে ৮০ ভাগের বেশি মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে পুলিশের ভয়ে। এর মধ্যে ৫০% মানুষ আশপাশের পরিবেশের সাথে নিজেকে মিলিয়ে নিতে বাধ্য হয়ে মাস্ক ব্যবহার করে। কিন্তু এমনটা কেনো হলো? ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে মানুষেরা মাস্ক পরছেনা কেনো?
মানুষের কি হলো? তারা কেনো বাঁচতে চাইছে না? তাহলে একটু ভাবনার জগতে প্রবেশ করা যাক, মানুষের বাঁচতে না চাওয়ার কারণগুলি অন্বেষণ করা যাক।তিন শ্রেণীর মানুষেরা মৃত্যুর কথা ভেবে বিচলিত হয়না। প্রথমত, যারা অনেক পরহেজগার ইমানদার ভালো মানুষ যাদের মৃত্যুর পর স্রষ্টার সান্নিধ্য পাবার যৌক্তিক ভরসা থাকে। এই টাইপের লোকজন দুনিয়ার যত যৌক্তিক নিয়ম আছে সব মেনে চলার চেষ্টা করে।
দ্বিতীয়ত, যারা দুনিয়ায় বেঁচে থেকে অভাবে বা স্বভাবের কারণে ভোগ বিলাস করতে পারেনা, দুনিয়ার নিয়মগুলো যাদের কাছে বোঝার মতো হয়ে গেছে, যারা মনে করে স্রষ্টার সান্নিধ্য পাবার নূন্যতম সম্ভাবনা নেই, তাদের বেঁচে থাকা আর মরে যাবার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এসব লোকেরা মাস্ক পরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে না। কারণ এদের কাছে বেঁচে থাকা আর মরে যাওয়া উভয়ই সমান। হায়াত আছে তাই বেঁচে আছে এটাই তাদের মনের ভাব। এসব মানুষদের মনের কষ্টগুলো পাথরের মত শক্ত হয়ে গেছে। তৃতীয়ত, কিছু ভন্ড শ্রেণীর মানুষ আছে এরা না চায় বাঁচতে না চায় মরতে।
কারণ এরা সুযোগসন্ধানী। পরিবেশ বুঝে গিরগিটির মতো রং পাল্টাতে সময় লাগেনা। এরা নিজেকে অধিক চালাক ভাবে। এদের অধিকাংশই পুলিশের ভয়ে মাস্ক ব্যবহার করে। তবে এদের মধ্যে যাদের জীবন আয়েশি, তারাই শুধুমাত্র মৃত্যুর ভয়ে মাস্ক ব্যবহার করে। এদের অনেকেই মনে মনে বা প্রকাশ্যে বেহেশতের মালিকানা দাবি করে। এরা অধিক পাইতে থাকলে বিবেকের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে দিকবিদিক কার্যকলাপে যুক্ত হয়। এই শ্রেণীর মানুষ খুব স্বার্থপর হয়। এদের চাওয়া-পাওয়া অপূর্ণ থাকলে টেনশনে থাকতে থাকতে একসময় ডিপ্রেশনে চলে যায় এবং এই শ্রেণীর মানুষদের ভিতর সুইসাইডের হার সর্বাধিক।
লেখকঃ নাসির আহমেদ, শিক্ষানবীশ আইনজীবী ও গবেষক।
বিঃ দ্রঃ উপরোক্ত লেখার কোনো বিষয় কারর জীবনের সাথে মিলে যেয়ে অপমানবোধ করলে লেখক দায়ী নয়।