আবু মিছিল
করোনার দুর্যোগ কম বেশি সবার গায়েই বাতাস লাগিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকমন্ডলী এবং গৃহশিক্ষকেরা। দেশের শিক্ষা খাতের অস্বীকৃত নায়ক হল এই শ্রেণির মানুষেরা। প্রচলিত মূল ধারার স্কুলে ভালো মানের পড়াশোনা হয়না, এই অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এইদিক থেকে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এসব স্কুলে একঝাঁক তরুণ, কর্মঠ শিক্ষকেরা সেবা দিয়ে থাকেন।
নির্মম বাস্তবতা হলো, এসব স্কুলের উদ্যোক্তারা প্রচুর লাভবান হলেও শিক্ষক কর্মচারীদের অতি সামান্য বেতন দিয়ে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা এক দুই হাজার টাকারও কম! তাই তাঁরা বাসায় পড়িয়ে নিজেদের রোজগার বাড়ানোর চেষ্টা করে। জাতি গঠনে এইসব নিবেদিতপ্রাণ মানুষগুলো আজ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।
সামাজিক মর্যাদা ও বেশভূষায় বেশ স্বচ্ছল মনে হলেও ব্যক্তিত্বের কারণে এইসব অসহায় মানুষেরা চোঁখের লজ্জা ফেলে হাত পাততে পারেনা। তাই তাদের দুঃখগাথা অজানাই থেকে যায়। তাই তাদের প্রতি সরকারের বিশেষ সুদৃষ্টি কাম্য। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান লোকদের এক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে। না হলে, মহান শিক্ষক সম্প্রদায়ের উপর যে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে সে ক্ষতি পূরণযোগ্য হবেনা।
বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে এসব স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষকগণ মহিলা অথবা উচ্চ শিক্ষার ছাত্র ছাত্রী। তাদের এই ক্ষুদ্র আয়ের উপর কারো কারো পুরো সংসার বা পড়াশোনা নির্ভর করে। এই অস্বীকৃত খাতে লক্ষ লক্ষ জনশক্তি জড়িত। তাঁরা নিঃসন্দেহে সমাজের অন্যতম বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষ। অথচ তারা কখনো অনুযোগ করেনি। আজ তাদের দুঃসময়ে তাদের পাশে না দাড়ালে বড্ড অন্যায় হবে।
লেখকঃ সমাজকর্মী ও কলামিস্ট। প্রতিক্রিয়াঃ braveheart.abumichil@gmail.com
লেখকের ব্যক্তিগত মতামত এবং তিনি নিজেই দায়বদ্ধ থাকিবেন।