রিয়াজুল করিম
২৩.০৪.২০২০.
পৃথিবী নাকি সভ্যতার চুড়ায়! পৃথিবী নাকি মানুষের হাতের মুঠোয়! পৃথিবীর মানুষ নাকি সভ্যতার আঁকাশ ছুঁয়েছে! মানুষ পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে ফেলেছে! মানুষ বিগত কয়েক হাজার বছর আগের কথাগুলোও নাকি ইথার থেকে ছেঁকে বের করে মানুষের সামনে হাজির করবে। আবার এও শুনি মানুষ ক্লোনের মাধ্যমে একজন মানুষের দেহ থেকে একটি সাত্র কোষ নিয়ে হুবহু তার-ই মত মানুষ তৈরী করে ফেলেছে! মানুষ মঙ্গলগ্রহে বসতি গড়ার স্বপ্ন প্রায় বাস্তবায়ন করতে চলেছে। মানুষ আরেকজন মানুষের মনে কি ভাবনা কাজ করছে তাৎক্ষণিক সেটাও বের করতে সক্ষম হয়েছে! ভাবতে, শুনতে দেখতে ভালো-ই লাগে। সত্যি-ই মানুষ অনেক কিছুই পারে,আগামীতে যারা এই করোনা মোকাবেলা করে বেঁচে থাকবে তারা আরও অনেক কিছুই দেখতে পারবেন!
মানুষ ভুলতেই বসেছিল তাদের চিন্তা সীমাবদ্ধ। ভাবাটা আসলেই স্বাভাবিক। মানুষ পৃথিবীতে এতো এতো আবিস্কার করেছে,তা গুনে শেষ করা কঠিন। বর্তমানের এই সভ্য পৃথিবীর মানুষ কাকে সভ্যতা বলছে আমি আজও বুঝতে পারি নাই। প্রতি বছর তথাকথিত উন্নত দেশগুলো মানুষ মারার জন্য,নিজেকে সেরা প্রমাণ করার জন্য যে টাকা খরচ করে, তার ৩০ ভাগের একভাগ মাত্র মানুষের স্বাস্থ খাতে বাজেট করে। আজকে বিল গেটস এর একটি কথা বলতেই হচ্ছে সে অক্সফোর্ডের একটি সেমিনারে বলেছিল,”নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হয় তখন, যখন দেখি মানুষ বাঁচানোর চেয়ে মানুষ মারার কাজে পৃথিবী আজ বেশী মরিয়া”
এই কথার উত্তরে অনেকেই বলবেন বিল গেটস ব্যবসায়ী মানুষ,সে তার ব্যবসার কথা বলেছেন। যতো মানুষ বাড়বে,তার প্রডাক্ট ততো চলবে। সুতরাং তার ভাবনা, তার-ই মত। রাজনৈতিকেরা এই ভাবনা এই ভাবে নিবেন, পৃথিবীতে মানুষ বেশী থাকলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তারপরে, মানুষের ভাত, কাপড়, চিকিৎসা বাসস্থান নানান ধরনের ঝামেলা বরং মানুষ কমাও।
যাদেরকে আমরা সভ্য বলছি তাদের মত অসভ্য জাতি আসলেই পৃথিবীতে আছে বলে আমার জানা নেই। হ্যাঁ তাদের কাছে লোক দেখানো কিছু সস্তা স্লোগান আছে। সেটাই তাদের বড় পুঁজি। কেনো তারা অসভ্য? তাদের কোনো পারিবারিক বন্ধন আছে? তাদের সন্তানেরা কি তাদের নিয়ন্ত্রণে? তাদের বড় বড় সন্তান গুলো কি বাবা মায়ের খবর রাখে? তারা কি আসলেই নিয়ন্ত্রিত?
পৃথিবীতে যতো ধরনের খারাপ আছে,তার প্রতিটি-ই তাদের মাঝে সুন্দর ভাবে বিরাজমান। তাদের আইন মানতে বাধ্য করা হয়,না মানলে হয় বড় জরিমানা না হলে বড় শাস্তি। সেই কারনে তারা বাধ্য হয়ে-ই সব করে। তাঁরা আঁকাশ ছোঁয়া অট্রালিকা তৈরী করেছে।তারা পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছে শুধু টাকা আর বিলাসিতার জন্য। তথাকথিত উন্নত দেশে প্রতিদিন যে খরচ করে তার ৩৮-৪৩% নারী আর নেশার পিছনে ব্যায় করে। তাদের দেশে যতো অভ্যন্তরিন হত্যাকান্ড ঘটে তার ৯৯% ই মাতাল অবস্থায় ঘটে। পৃথিবীর অধিকাংশ কঠিন রোগগুলো তাদের দেশেই জন্ম, যেমন HIV, COVIT-19.
যে কথাটি আমার প্রতিটি আলোচনায় প্রাধন্য পায় এখানেও তার ব্যতিক্রম হবে না,সেটা হলো পৃথিবীর মালিক সাজার সুযোগ নেই। দুনিয়ার সব মানুষ-ই পৃথিবীর মুসাফির। আমরা যখন-ই এই মূল আইডোলজি থেকে ট্র্যাক হারায় তখন-ই প্রকৃতি তারমত করে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।এমনটিও শুনে থাকি। এই কথা কিছুটা সত্য, কারন প্রকৃতি প্রতিশোধ নিতে জানে না,পারেও না। এই কথাটি মূলতই নাস্তিক্যবাদীদের। এই কথার সাথে একমতের সুযোগ নেই।
আসল কথা হলো যা করার সব-ই করেন একমাত্র তিনি-ই। যিনি এই প্রকৃতির মালিক। তিনি বলে-ই দিয়েছেন, পৃথিবীর সকল খারাপ-তোমাদের দুই হাতের কামায়। এই বিষয়ের সাথে যারা একমত না,আমি তাদের সাথে বিতর্কে নেই। কারন আপনি আপনার বিশ্বাস নিয়ে থাকুন। আমি বিশ্বাসীদের বলছি,যদি করোনা থেকে মুক্তি দরকার বলে মনে করেন তবে অবশ্যই নিজের সব খারাবী বাদ দিয়ে তার (আল্লাহ এবং আল্লাহ’র রাসুলের) পথে ফিরে আসুন। তা’হলে আমার বিশ্বাস তিনি আমাদের মুক্তি দিবেন। আল্লাহ তুমি আমাদের সব অপরাধ ক্ষমা করো আমাদের করোনা মুক্ত করো আমাদের পরিপূর্ণ হেফাজত করো।
(আমীন)।
রিয়াজুল করিম, লেখক ও হোমিওপ্যাথি প্রাকটিশনার, কুস্টিয়া।
প্রকাশিত লেখার জন্য লেখক ব্যক্তিগত ভাবে দায়বদ্ধ।