রিয়াজুল করিম
কি অদ্ভূত বিষয়! একটি অদৃশ্য ভাইরাসের কাছে জিম্মি গোটা পৃথিবী, জ্ঞান, বিজ্ঞান, সভ্যতা,ইতিহাস, ঐতিহ্য সব তার কাছে পরাজিত। কত শক্তিশালী পরাশক্তিতে শক্তিমান দেশগুলো, মাত্র ১ মিনিটে পৃথিবী ধ্বংসের হুমকি! আচ্ছা একটু ভাবুনতো, ১ মিনিটে যারা পৃথিবী ধ্বংস করতে চাইতেন,তারা কতদিনে এই সভ্যতার ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ পৃথিবীতে সভ্যতা গড়ে তুলতে পারতেন? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর আসলেই এই সভ্য সমাজের জানা নেই। হয়তবা কেউ কেউ অনুমান ভিত্তিক বিভিন্ন উত্তর দিবেন,স্বাভাবিক নিয়মে।কিন্তু একটি উত্তরও বুদ্ধিমান কোন মানুষ গ্রহণ করবেন না,এটাই স্বাভাবিক।
আসলে একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন,পৃথিবীর সব কিছুই অস্থায়ী। কারন পৃথিবী নিজেই অস্থায়ী। এই পৃথিবীতে যতো সভ্যতার গল্প শুনি,সব কিছুই কিন্তু তৈরী করেছেন মানুষ।পৃথিবীর সব সভ্যতা যদি মানুষ তৈরী করে,তবে মানুষ তৈরী করেছেন কে? এই প্রশ্নের উত্তর শতকরা ৯০ জনই দিবেন কেউ একজন করেছেন। এই কেউ একজনকে এক এক জন এক এক নামে সম্বোধন করবেন। কেউ বলবেন আল্লাহ। কেউ বলবেন ভগবান। কেউ বলবেন গোড। কেউ বলবেন ঈশ্বর। যে যার বিশ্বাস থেকেই বলবেন। আবার যদি প্রশ্ন করেন, পৃথিবী তৈরী করেছেন কে? এই প্রশ্নের উত্তরও কিন্তু একই আসবে।
আসলে মানুষের কাছে মানুষ অনেক ছোট হলেও যাকে আমরা সৃষ্টিকর্তা মানছি তার কাছে কিন্তু অনেক কিছু। তিনি তার সৃষ্টির প্রতিটি কনার মধ্যে তার একটি এমনকি প্রতিটি অনু পরমাণুর মধ্যে তার একটি স্বাক্ষর বা উপস্থিতি রেখেই দিয়েছেন। খুব ছোট একটি উদাহরণঃ- প্রতিবছর গাছে গাছে আম ধরে। প্রথমে হয় কুশি, তার পরে মুকুল, তারপরে ফল, তারপরে বড় হয় সব শেষ পাকে। কি অদ্ভূত বিষয়! একই আম, কত তার রকম আর কত তার স্বাদ! কিন্তু বিষয় তা না। বিষয়টা হলো,এই কুশি থেকে পাকা পর্যন্ত দ্বায়িত্বটা সৃষ্টিকর্তা এক সিজেনের জন্য বিজ্ঞানীদের দিলে তারা কি আমাদের আম পাকা পর্যন্ত নিতে পারবেন? এই প্রশ্নের উত্তর সকলেই দিবেন না।
তবে বিজ্ঞানীরা কি পারবেন? বিজ্ঞানীরা যা পারেন, তা আসলেই খুবউ নগন্য কিছু। যতো কিছু আবিস্কার করেন,তার সব উপকরণ-ই ঐ সৃষ্টিকর্তার থেকেই ধার করা। যেমনঃ-যিনি আবিস্কার করছেন,তাকে কে আবিস্কার করেছেন? তার সমস্ত শরীরের রক্তপ্রবাহ কে আবিস্কার করছেন? তার(বিজ্ঞানীর)মস্তিস্কটা কে আবিস্কার করেছেন? বিজ্ঞানী যে জিনিস আবিস্কার করেছেন,ঐ আবিস্কারের ছোট ছোট আবিস্কার গুলোই বা কোথা থেকে আসলো? সব আবিস্কারের মূল আবিস্কারক কিন্তু তিনি-ই যাকে আমরা সৃষ্টিকর্তা বলছি কমোনলি।
ভিন্ন চিন্তায় ভিন্ন নামে ডাকছি বা পরিচয় দিচ্ছি। এর মাঝেও ১০ শতাংশ মানুষ বলবেন পৃথিবী ন্যাচারাল,এখানের সব কিছুই ন্যাচারাল। তাদের বিষয়ে কথা বলার মানসিকতা আমার নেই। কারন তাদের মস্তিস্ক অবরুদ্ধ। পৃথিবীর মালিকের ইচ্ছার বিপরীতে যখন পৃথিবী চলবে, তখন তিনি বুঝে নিয়েছেন, পৃথিবী নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই পৃথিবী, পৃথিবীর মানুষ আজ অচল। তারা নিজেদেরকে পৃথিবীর মালিক ভেবে ফেলেছে। তারা আজ যথেচ্ছা চলতে শুরু করেছে যথেচ্ছা বলতে শুরু করেছে। তাদের একটি সুযোগ দেওয়া যাক,তাতে আমাকে(সৃষ্টিকর্তা)দোষারোপ করতে পারবে না। যদি সংশোধন হয়,তাতে মানুষের কপাল ভাল। আর যদি না হয় তবে নিশ্চিত ধ্বংস।
এই করোনা সেই সংশোধনের-ই মেডিসিন। এই মেডিসিন যারা গ্রহণ করবে পজেটিভ ভাবে, তারা সৃষ্টিকর্তার দেখানো পথে ফিরে আসবে এবং সফল হয়ে মালিকের(আল্লাহ’র)কাছে ফিরে যাবে এবং চিরস্থায়ী মুক্তির পথে এগিয়ে যাবে। যারা এইটাকে নিছক-ই ভাইরাস হিসাবে গ্রহণ করবে এবং সংশোধন না হয়ে বরং এই ভাইরাস থেকে বাঁচার মিছে চেষ্টা করে যাবে, তারা ১০০% ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাবে। সেই সাথে নিজের চিরস্থায়ী আবাসের জায়গাটাও হারাবে। এখনই উপযুক্ত সময় নিজেকে আবিস্কার করা। নিজের প্রতিপালকের সন্ধান করা। প্রতিপালকের কাছে নিজেকে সমর্পণ করা। নিজের দাম্ভিকতা ছুঁড়ে ফেলা। তবেই হয়ত আমরা দাবি করতে পারবো। আমরা সভ্য। আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা ফিরে এসেছি। আমাদের ক্ষমা করো।
রিয়াজুল করিম, কবি, লেখক ও হোমিওপ্যাথি প্রাকটিশনার, কুষ্টিয়া । মোবাইল- ০১৭৩৩-১৮৪৬৯৯