নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও ধোয়ার কাজ পুরোদমে চলছে। তবে পাট শুকাতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন কৃষক। কারণ আষাঢ়ের বৃষ্টি যেন থামছেই না। ইতোমধ্যে হাট-বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু বেসরকারি বিভিন্ন পাটকলের স্থানীয় এজেন্সি এখনো পাট কেনা শুরু করেনি। কারণ তারা গত বছর যে পরিমাণ পাট সরকারি, বেসরকারি পাটকলে সরবরাহ করেছিল সে টাকা এখনো পায়নি। ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীরা বিজেএমসির কাছে কয়েক কোটি টাকা পাওনা। পাটকল বন্ধ হলেও, তাদের পাওনা পরিশোধের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতিমণ পাট ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো দাম না পেয়ে পাটচাষিরা হতাশ। উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। আগাম বন্যায় অনেক এলাকার পাট নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ফলনও কিছুটা কম। বন্যার কারণে আগাম পাট কাটতে হয়েছে। পাট শুকানোর পর হাটে নিয়েও আশানুরূপ দাম মিলছে না।
উপজেলার ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস সরকার জানান, ২০১৬-১৭ অর্থ বছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থ বছর পর্যন্ত বিজেএমসি তাদের কাছ থেকে পাট কিনলেও টাকা পরিশোধ করেনি। অনেকেই ব্যাংক ঋণ নিয়ে পাট কিনে দিয়েছিলেন। টাকা না পেয়ে ব্যাংকের কাছে মামলা খেতে হয়েছে। এ দুর্যোগপূর্ণ সময়ে পাওনা টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করা না হলে এবার পাট কেনা যাবে না।
তিনি আরও জানান, জেলার ৩০ জন ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীর বিজেএমসির কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা পাওনা আছে। সরকার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিজেএমসি নিয়ন্ত্রিত ২৫টি জুট মিল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু মিল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের ঘোষণা দিলেও পাট ব্যবসায়ীদের কোনো সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। ফলে পাবনাসহ দেশের ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীরা অনিশচয়তায় ভুগছেন। পাটকল শ্রমিকদের পাশাপাশি তাদের পাওনা পরিশোধের দাবিও জানান তিনি।
এদিকে, পাবনার ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ীরা পাওনা টাকা পরিশোধের দাবিতে গত সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।