এপিএস নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আগের রেকর্ড ভেঙে একদিনে সর্বোচ্চ পরিমাণ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন শনাক্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫২৩ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২ হাজার ৮৪৪ জনে। এছাড়া এ সময়ের মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৮২ জনে। আর সুস্থ হয়েছেন ৫৯০ জন।
আজ শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১২ হাজার ৯৮২ জনের। আগের কিছু নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয় ১১ হাজার ৩০১ জনের। এতে একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫২৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গতকাল (২৮ মে দুপুর পর্যন্ত) একদিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ২৯ জন শনাক্ত হন। গত ২৫ মে ১ হাজার ৯৭৫ জনের, গত ২৩ মে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৭৩ জনের, গত ২১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৭৩ জনের দেহে করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল। তার আগে ২০ মে শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৬১৭ জনের। এ পর্যন্ত ২ লাখ ৮৭ হাজার ৬৭ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২ হাজার ৮৪৪ জনে। এ হিসেবে শনাক্তের হার ২২.৩৩ শতাংশ।
এছাড়া এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ২৩ জন। এর আগে গত ২২ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এর আগে গত ১৮, ১৯ ও ২৫ মে একদিনে সর্বোচ্চ ২১ জন ও ২২ মে ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৫৮২ জনের। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১.৩৬ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫৯০ জন। এ নিয়ে মোট ৯ হাজার ১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা বলেন, তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করবেন। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাবেন ও ফুসফুসের ব্যায়াম করবেন। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।
এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।
ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলবে ৩০ মে পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট
ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে একদিনেই ১ লাখ ১৬ হাজার ৩০৪ জন প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আর ৫ হাজার ৪২৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯ লাখ ২০ হাজার ৮৬। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৬০ জন। অপরদিকে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ২৫ লাখ ৯২ হাজার একজন।
এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪৬১ এবং মারা গেছে ১ লাখ ৩ হাজার ৩৩০ জন।
এরপরেই রয়েছে ব্রাজিল। সেখানে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৮১২ জন। অপরদিকে মারা গেছে ২৬ হাজার ৭৬৪ জন। সূত্রঃ ঢাকাটাইমস
এপিএস/২৯মে/পিটিআই