দ্রব্যমূল্যের হুলুস্থুল পরিস্থিতির মধ্যে বাজারে মুরগি ও গরুর মাংসসহ ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সরকারের এই দাম নির্ধারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে খানিকটা স্বস্তি পেয়েছিল সাধারণ মানুষ৷ তবে সরকার নির্ধারিত দামে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না মুরগি ও গরুর মাংস। এ নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে চলে বিতর্ক ও বিবাদ।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, সরকার ৬৬৪ টাকা কেজি গরুর মাংস নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। অন্যদিকে ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ২০০-২০৫ টাকায়।
কাওরানবাজারে মাংসব্যবসায়ী শওকত আলী জানান, ‘নির্ধারিত ৬৬৪ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব না’। তিনি বলেন, কীভাবে বিক্রি করব? যে দামে গরু কেনা হয়, তাতে এক কেজি গরুর মাংসের দামই এরচেয়ে বেশি পড়ে।’
বরকত আলী বলেন, ‘দোকান ভাড়া আছে, কর্মচারীর মজুরি আছে, আরও অন্যান্য খরচ আছে। সব মিলিয়ে আমাদের তো পোষাতে হবে। তিনি ৭৩০ টাকা কেজির নিচে গরুর মাংস বিক্রি করতে পারবেন না বলে জানান।
তবে এই যুক্তি মানতে নারাজ এই বাজারে গতকাল মাংস কিনতে আসা বোরহান রহমান। তিনি বলেন, সরকার তো হিসেব করেই মাংসের দাম নির্ধারণ করেছে। তাহলে এখন নির্ধারিত দরে মাংস পাওয়া যাবে না কেন?
একই বাজারের মুরগি বিক্রেতা রিয়াদ বলেন, ‘সরকার ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির যে দর নির্ধারণ করেছে, সে দরে আমরা কিনতেও পারিনি। তাহলে বিক্রি করব কীভাবে?’
বাজারে মুরগি কিনতে আসা রেবেকা আক্তার জানান, সরকার দর বেঁধে দিল, কিন্তু সেই দরে ভোক্তারা পণ্যটি কিনতে পারছে কি না, তা নিশ্চিত করছে না। তাহলে দর বেঁধে দিয়ে কী লাভ হলো?
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীতে একেক বাজারে একেক দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে। শ্যামবাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো. আলী আকবর জানান, তারা প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭৮০ টাকায়। আবার কোনো কোনো বাজারে ৮০০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এদিকে বাজারের এমন পরিস্থিতির মধ্যে চাইলেই যেন সীমিত লাভ করে কম দামে বিক্রি করে মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় তার দৃষ্টান্ত সৃষ্টিও করেছে রাজধানীর বেশ কিছু মাংস বিক্রেতা। এ তালিকায় রয়েছে শাহজাহানপুরের খলিল মাংস বিতান, পুরান ঢাকার আরমানিটোলার বিসমিল্লাহ খাশি-গরু সাপ্লাইসহ আরও কিছু মাংস বিক্রেতা।