সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে ক্লাস চলাকালীন পিস্তল বের করে শিক্ষার্থীকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পায়ে গুলিবিদ্ধ আরাফাত আমিন তমাল নামের ওই শিক্ষার্থী জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি ৮ম ব্যাচের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ৩য় বর্ষের ছাত্র। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে হেফাজতে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন আইটেম ক্লাস চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম ডা. রায়হান শরিফ।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস চলাকালীন সময় ছাড়াও প্রায় সময়ই পিস্তল নিয়ে চলাফেরা করতেন শিক্ষক রায়হান শরিফ। এছাড়াও কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রায়হান শরিফ বিভিন্ন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব ও ভয়ভীতি দেখাতেন। এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এমনকি তিনি কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক হওয়ার স্বত্ত্বেও নিজস্ব ক্ষমতা দেখিয়ে ফরেনসিক বিভাগে ক্লাস নেন।
এদিকে এঘটনায় ওই শিক্ষকের বিচার চেয়ে মেডিকেলের সব শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
জানা যায়, আজ বিকালে ক্লাস চলাকালীন সময়ে দেশীয় পিস্তল ও ১০ থেকে ১৩টি দেশীয় ধারালো চাকু নিয়ে হঠাৎ করে ক্লাসে আসেন শিক্ষক রায়হান শরিফ। একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে পিস্তল বের করে আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন। তার চিৎকারে সবাই এগিয়ে এলে ডা. রায়হান শরিফকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। আহত অবস্থায় তমালকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষকের বিচার চেয়ে মেডিকেলের ছাত্রছাত্রী আন্দোলনে নামেন। খবর পেয়ে র্যাব-পুলিশ হাসপাতালে ছুটে আসে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আজ ভাইভা চলাকালীন ৪৫ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে শিক্ষক রায়হান শরিফ তমালের ডান পায়ে গুলি করেন। এ ঘটনায় শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে তারা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন। পরে তমালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ওই শিক্ষক প্রতিদিন ক্লাসে পিস্তল নিয়ে আসতেন। আজ বিকাল ৫টার দিকে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষক রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গুলি ছোড়ে। এ সময় গুলিতে আহত হন শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন। এ ঘটনার পর ওই শিক্ষককে হেফাজতে নেয়া হয়েছেন।