অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। রবিবার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রট আসাদুজ্জামান নূরের আদালতে তিনি হাজির হয়ে এ সাক্ষ্য দেন।
এদিন বেলা সোয়া তিনটার দিকে আদালতে আসেন জয়। ৩টা ২৫ মিনিটে আদালত জয়ের জবানবন্দি গ্রহণ শুরু করেন। বিকাল ৪টা দিকে তা শেষ হয়। মামলার পাঁচ আসামিই পলাতক থাকায় জেরা হয়নি।
সাক্ষ্য গ্রহণকালে আদালত কক্ষে সাধারণ আইনজীবী ও সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। শুধু চার জন আইনজীবী সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী কাজী নজিব উল্ল্যাহ হিরু, ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু, এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ আবু সাঈদ সাগর ও সংশ্লিষ্ট আদালতের প্রসিকিউটর আব্দুর রহমান কাজল।
২০১৭ সালের ২৮ জুলাই অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্রের মামলায় পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেন সজীব ওয়াজেদ জয়। জবানবন্দির সমর্থনে তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন মর্মে প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জানিয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের সহ-সভাপতি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন এবং দেশে ও দেশের বাইরে অবস্থানরত বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেকোনো দেশে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জীবননাশসহ ক্ষতির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে বিএনপির হাই-কমান্ড দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অর্থায়ন করছে।
২০১৫ সালের ৪ আগস্ট ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান এ বিষয়ে পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়।
মামলাটিতে সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।
অন্যদিকে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে থাকা অবস্থায় এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তিনিও উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।
মামলায় ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, সাংবাদিক শফিক রেহমান, আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জাসাস সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তাঁর ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
এর আগে মামলাটিতে ১৫ জনের মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। জয় সাক্ষ্য দেয়ায় মামলাটিতে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো।
প্রসঙ্গত, জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল নিউইয়র্কে। সেখানে এই মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। মামলার রায়ে সেখানকার বিএনপি নেতার ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের ৪২ মাসের কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া ঘুষ লেনদেনের জন্য এক এফবিআই এজেন্টের বন্ধুর ৩০ মাসের কারাদণ্ড হয়।