মোঃ জিয়াউর রহমান
ইতালিতে করোনা আক্রান্ত কেউ যদি সে তথ্য না জানায়, তাহলে তার দ্বারা অন্য কেউ সংক্রমিত হলে সেই করোনাক্রান্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হবে- এই নিউজ দেখেই ভাবলাম, আচ্ছা দেখিতো, আমাদের আইন কি বলে!
দেখলাম, “সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮” নামে আমাদেরও চমৎকার আইন আছে। এই আইন পড়ে সংক্রমণ প্রতিরোধে যে কোন ব্যবস্থা নিতে আইনগতভাবে এ মুহুর্তে সবচেয়ে Powerful Person মনে হয়েছে IEDCR এর মহাপরিচালক কে, তিনি করোনাসহ যে কোন সংক্রামক ব্যাধি ঠেকানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
আইনে সংক্রামক রোগের তালিকায় COVID-19 এর নাম নেই, তবে সরকার গেজেট করে যেকোন রোগকে এ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে পারে। আইনে বলা আছে, সংক্রমণের তথ্য জানাতে হবে সিভিল সার্জন কে, তিনি মহাপরিচালক কে জানাবেন। রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে মহাপরিচালক কোন এলাকাকে সংক্রমিত এলাকা ঘোষনা করতে পারবেন, কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা নিষিদ্ধ করতে পারবেন, প্যাথলজি নমুনা সংগ্রহ করতে পারবেন, রোগাক্রান্ত ব্যাক্তিকে আইসোলেসন বা কোয়ারেনটাইন করতে পারবেন, তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র এমনকি প্রয়োজনে স্থাপনা ধ্বংস করতে পারবেন, যে কোন স্থান পরিদর্শন করতে পারবেন, যানবাহন জীবাণুমুক্ত এবং প্রয়োজনে বিনষ্ট বা ধ্বংস করার আদেশ দিতে পারবেন, মৃতদেহের সৎকার করতে পারবেন, এমনকি আমদানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবেন।
কেউ যদি সংক্রমণ ঘটায় বা গোপন করে তাহলে ৬ মাস কারাদণ্ড বা ১০০০০০/- (এক লক্ষ টাকা) পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড হতে পারে। কেউ যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশ পালনে বাঁধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বা অসম্মতি জানায় তবে তার ৩ মাস কারাদণ্ড বা ৫০০০০/- (পঞ্চাশ হাজার টাকা) পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ড হতে পারে। ইচ্ছেকৃত মিথ্যা বা ভুল তথ্য দিলে সেও ২ মাস কারাদণ্ড বা ২৫০০০/- (পঁচিশ হাজার টাকা) পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে।
মোঃ জিয়াউর রহমান
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মাগুরা।