দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত হঠাৎ বেড়েছে। গত পাঁচদিন ধরে শনাক্তে উর্ধমূখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গত ৪৪ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছে। একইসঙ্গে এদিন রোগী শনাক্তের হারও বেড়ে পাঁচ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা গত ৪৫ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৭১০ নমুনা পরীক্ষায় ৬৩৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি একশ জনের নমুনা পরীক্ষায় প্রায় পাঁচজনের মধ্যে করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে গত তিনদিন টানা ছয় শতাধিক করে রোগী শনাক্ত হলো। এই তিনদিনের আগে সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি ছয়শ এর বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
সাম্প্রতিক রোগী শনাক্তের উর্ধগতি শুরু হয় মূলত চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে। ওইদিন প্রায় একমাস পর হঠাৎ করে দৈনিক রোগী শনাক্ত পাঁচশ ছাড়ায়। একই দিন রোগী শনাক্তের হারও গত ৪১ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৩১ শতাংশে উঠে। পরদিনও পাঁচ শতাধিক রোগী শনাক্ত হয়। গত বুধবার রোগী শনাক্ত আরও বেড়ে ছয়শ ছাড়ায়, যা গত দুইদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে।
তবে গত পাঁচ দিনের মধ্যে মাঝের তিনদিন শনাক্ত হার কিছুটা কম থাকলেও গতকাল শেষ দিন তা সাড়ে চার শতাংশের ওপরে ওঠে, যাকে পাঁচ শতাংশের ঘরে ধরা হয়। এর আগে সর্বশেষ গত ১৯ জানুয়ারি এরচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ হারে রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
এদিকে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ছয়জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এদিন মৃতদের মধ্যে চারজনই ষাটোর্ধ বয়সের এবং তিনজন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে শুক্রবার পর্যন্ত ৪১ লাখ ১৯ হাজার ৩১টি নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে সর্বমোট ৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৪ জন। মোট পরীক্ষার বিপরীতে গড়ে ১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৮ হাজার ৪৪১ জন এবং শেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬৭৬ জনসহ সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ১ হাজার ১৪৪ জন। বাকিরা চিকিৎসাধীন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫৪ এবং সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ২৩ শতাংশ। শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে পুরুষ চার ও নারী দুজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৩৮১ পুরুষ ও ২ হাজার ৬০ নারী মৃত্যুবরণ করেছে। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭৫ দশমিক ৬০ ভাগ ও নারী ২৪ দশমিক ৪০ ভাগ।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করা তিনজন ঢাকা বিভাগের এবং বাকিদের দুজন চট্টগ্রাম ও একজন খুলনার। এ নিয়ে করোনায় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭২৫ জন মারা গেল ঢাকা বিভাগে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১ হাজার ৫৫৩, খুলনায় ৫৬১, রাজশাহীতে ৪৭৯, রংপুরে ৩৬৩, সিলেটে ৩১১, বরিশালে ২৫৩ এবং ময়মনসিংহে সর্বনিম্ন ১৯৬ রোগী মারা গেছে। বয়স অনুযায়ী, সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ চার, ৫১-৬০ বছরের এক ও ২১-৩০ বছরের ছিল একজন। এদিন সবাই হাসপাতালে মারা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৫৭ রোগীকে আইসোলেশনে এবং ৫০৬ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশনে ৯ হাজার ৬৮৩ এবং কোয়ারেন্টাইনে আছে ৩১ হাজার ৮৮২ জন। সারা দেশে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে ১০ হাজার ২৮৩টি সাধারণ বেডের মধ্যে গতকাল রোগী ভর্তি ছিল ১ হাজার ৪৮০টিতে। বাকিগুলো খালি ছিল। এ ছাড়া ৫৬৬টি আইসিইউর মধ্যে এদিন রোগী ভর্তি ছিল ১৮৭টিতে