স্থানীয় সরকারের চলমান পৌরসভা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে দেশের ২০ জেলায় ২৯ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সবগুলো পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হচ্ছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয় প্রার্থীদের ভোটের প্রচার। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকের এ ভোটে কয়েকটি দল অংশ নিলেও বরাবরের মতই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে।
একইদিনে রাজবাড়ী জেলা পরিষদে উপনির্বাচন চারটি উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন এবং ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন পদে উপনির্বাচন ও চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ ছাড়া এর আগে অনুষ্ঠিত সাতটি পৌরসভায় বন্ধ ঘোষিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে এবং মৃত্যুজনিত কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ড, ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড, এবং সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদেও ভোট হচ্ছে আজ।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি ও শৈলকুপায় ভোটগ্রহণ হবে ইভিএমে।
নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বাড়তি সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে তাদের সঙ্গে মাঠে রয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচনী এলাকায় যান চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবির খোন্দকার শনিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘২৯ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হবে। ভোটকেন্দ্রে ৩ থেকে ৪ জন পুলিশ অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার থাকবে। ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী ১১ জন থেকে ১৩ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশ এবং ব্যাটালিয়ান আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।’
বিগত পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানি ঘটেছে এবার বিশেষ কোন ব্যবস্থা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘এটি হঠাৎ করে হয়ে গিয়েছিল তবে এবার যাতে ভোটকেন্দ্র উৎসবে পরিণত হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
ভোট সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া আছে জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়।’
গত ১৯ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে নির্বাচনের জন্য ৩১ পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। পরে অন্য ধাপ থেকে পঞ্চম ধাপে যুক্ত হয় সৈয়দপুর পৌরসভা। অপরদিকে উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে যশোর পৌরসভার ভোট স্থগিত করা হয়। আইনি জটিলতায় শেষ মুহূর্তে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে ইসি। আর চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলরসহ সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পান। এ হিসেবে আজ রবিবার ২৯ পৌরসভায় ভোট।
যে ২৯ পৌরসভায় ভোট : যশোরের কেশবপুর, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর, চট্টগ্রামের মিরসরাই, বারইয়ারহাট ও রাঙ্গুনিয়া, কিশোরগঞ্জের ভৈরব, জামালপুর সদর, মাদারগঞ্জ ও ইসলামপুর, ময়মনসিংহের নান্দাইল, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর, গাজীপুরের কালীগঞ্জ, রংপুরের হারাগাছ। রাজশাহীর দুর্গাপুর ও চারঘাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, বগুড়া সদর, জয়পুরহাট সদর, মাদারীপুর সদর ও শিবচর, ভোলা সদর ও চরফ্যাশন, হবিগঞ্জ সদর, চাঁদপুরের শাহরাস্তি ও মতলব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রংপুরের সৈয়দপুর পৌরসভার সাধারণ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।