ভারতের উপহারের টিকার পর সে দেশ থেকে কেনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ‘কভিশিল্ড’ আসতে শুরু করেছে। গতকাল সোমবার তিন কোটি টিকার মধ্যে প্রথম চালান ৫০ লাখ টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। টিকার জন্য নিবন্ধনের অ্যাপ ‘সুরক্ষা’ও প্রস্তুত। আগামীকাল বুধবার টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরদিন এ টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালের ৪০০-৫০০ স্বাস্থ্যকর্মীর দেহে। পরে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখতে এসব স্বাস্থ্যকর্মীকে সাত দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এখন অপেক্ষা শুধু সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর।
বিশেষ করে গতকাল ৫০ লাখ টিকা আসার পর দেশের মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন টিকা আসা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও টিকা আসতে শুরু করায় টিকা নিয়ে নতুন করে ভাবছে মানুষ। টিকা নেওয়া ও না নেওয়ার পাশাপাশি কবে থেকে সাধারণ মানুষ এ টিকা পেতে পারে, সে প্রশ্ন এখন সারা দেশে।
সরকারের স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় জানান, সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে টিকাদান শুরু করতে চায়। সর্বশেষ গত শনিবার রাজধানীর একটি হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, ২৭ জানুয়ারি ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে কয়েকশজনকে টিকা দিয়ে দেখার পর ৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান শুরু হবে। এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারতের উপহারের টিকা গ্রহণ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকও ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা অবশ্য দেশ বলেছেন, ঠিক ৮ ফেব্রুয়ারি টিকাদান শুরু হবে, এমন কোনো নির্দেশনা চূড়ান্ত হয়নি। তারিখ নির্ধারণ হবে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল দেখে। অর্থাৎ আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার যাদের টিকা দেওয়া হবে, তাদের মধ্যে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, সেটা দেখে সরকার সারা দেশে টিকা কর্মসূচি শুরুর সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। এ পরীক্ষামূলক প্রয়োগ থেকে টিকার ব্যাপারে তথ্য জানতে পারবে তারা। সরকারও তথ্য পাবে। পরে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে ঠিক কবে থেকে সারা দেশে টিকা শুরু করা হবে।
কবে নাগাদ সারা দেশে টিকাদান শুরু হতে পারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গতকাল দেশ বলেন, আমরা চিন্তা করছি ২৮ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহখানেক পরে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বা একটা সুবিধাজনক সময়ে শুরু করব। পাঁচ হাসপাতালে যাদের টিকা দেওয়া হবে, তাদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করার কথা। সেটার পরে শুরু করব।
সে ক্ষেত্রে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, সেটা দেখে জাতীয় টিকাদান শুরু হবে কি না জানতে চাইলে এ কর্মকর্তা বলেন, ঠিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নয়, আমাদের প্রস্তুতিরও একটা ব্যাপার আছে। আমাদের সব প্রশিক্ষণ শেষ হবে ৩০ জানুয়ারি। আমাদের একটু গোছানোর বিষয় আছে। সব ট্রেনিং শেষ হলে প্রস্তুতি করতে আমরাও একটু সময় পাব।
অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা দেশ জানান, সারা দেশে টিকা দেওয়ার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি একটা তারিখ ঠিক করা হয়েছিল। এখন সেটা নির্ভর করছে পাঁচ হাসপাতালে যে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ, সেটার কী ধরনের ফল আসে, সেটার ওপর। বিশেষ করে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি যাদের টিকা দেওয়া হবে, তাদের কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, সেটা দেখে সারা দেশে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কেনা টিকার ৫০ লাখ এসেছে : ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ৫০ লাখ করোনার টিকা গতকাল ঢাকায় এসেছে। টিকা বহনকারী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইট বেলা ১১টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সেরাম ইনস্টিটিউট ও দেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যকার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বেক্সিমকো এ টিকা এনেছে।
বিমানবন্দরে টিকা গ্রহণ করতে আসা বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ২১ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পাঠানো ৫০ লাখ ডোজ টিকা আমরা আজ (গতকাল) গ্রহণ করলাম।
পরে বিমানবন্দর থেকে টিকার কার্টনগুলো ফ্রিজার ভ্যানে করে টঙ্গীতে বেক্সিমকোর নতুন ওয়্যার হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কোল্ড চেইন মেনটেইন করে (২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) রাখা হয়েছে।
বিমানবন্দরে নাজমুল হাসান জানান, ওয়্যার হাউজ থেকে প্রতিটি ব্যাচের টিকার নমুনা পাঠানো হবে সরকারের ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে। পরীক্ষার পর সবকিছু ঠিক থাকলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। ছাড়পত্র পাওয়ার পর টিকাগুলো ৬৪টি জেলায় পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। আমার ধারণা, চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সরকার নির্ধারিত জেলাগুলোতে টিকা পৌঁছে দিতে পারব।
এ সময় তিনি আরও জানান, টিকার প্রতিটি কার্টনে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস রাখা হয়েছে। এ ডিভাইস প্রতি ১৫ মিনিট পরপর সেরাম ইনস্টিটিউটে তাপমাত্রার হালনাগাদ তথ্য পাঠাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা টিকার কার্টনগুলো প্রথম দেখবেন। এরপর প্রতিটি কার্টন খোলা হবে। সেখানে টেম্পারেচার মনিটরিং ডিভাইস দেওয়া আছে প্রতিটি কার্টনের ভেতরে। টিকা পৌঁছে দেওয়ার আগপর্যন্ত কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলে দায় বেক্সিমকো নেবে।
বেক্সিমকোর এ কর্মকর্তা বলেন, পুরো সময় ওই টিকা ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার কথা। সেটা যাতে হয়, সে কারণেই কার্টনে ওই ডিভাইস রাখা হয়েছে। পুনে থেকে মুম্বাই, সেখান থেকে ঢাকা হয়ে আমাদের ওয়্যার হাউজ এবং সেখান থেকে জেলা পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত নির্দিষ্ট তাপমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কোনো ড্যামেজ, শর্টেজ বা কোনো রকমের সমস্যা থাকে, তাহলে আমরা তা চেইঞ্জ করে দেব। টিকা নিয়ে সবরকমের দায়িত্ব বেক্সিমকোর।
এ ব্যাপারে আমাদের গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, দুপুরের দিকে নয়টি ফ্রিজার ভ্যানে পুলিশ পাহারায় টিকাগুলো টঙ্গীর চেরাগআলী এলাকায় বেক্সিমকোর নিজস্ব ওয়্যার হাউজে এসে পৌঁছায়।
এ ব্যাপারে বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার ও মুখপাত্র রাব্বুর রেজা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে দুদিন সময় লাগবে। হস্তান্তরের আগে এ টিকা ন্যাশনাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হবে। প্রত্যেক ব্যাচ থেকে একটা করে নমুনা জমা দিতে হয়। ল্যাবরেটরিতে সে নমুনা পরীক্ষা করা হবে। এ পরীক্ষা করতে দুদিনের মতো লাগবে। পরীক্ষায় মানোত্তীর্ণ হলে ল্যাব কর্র্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেবে। পরীক্ষা শেষে বেক্সিমকোর হাতে রিপোর্ট এসে পৌঁছতে ২৭ জানুয়ারি সকাল হয়ে যাবে। পরে আমরা সেদিন রাতেই জেলায় জেলায় এ টিকা পৌঁছে দেব। জেলাগুলোতে বিতরণ করতে চার দিনের মতো লাগবে। ৬৪ জেলার ৬৪ জন সিভিল সার্জনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। টিকা পরিবহনের জন্য যে ফ্রিজার ভ্যান দরকার, সেগুলো সব আছে। কোনো সমস্যা নেই। আমরা শুধু পৌঁছে দেব।
সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যকার ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এ টিকা কেনা হয়েছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত এ টিকা কভিশিল্ড নামে উৎপাদন করছে সেরাম। দেশে এ টিকা সরবরাহ করছে বেক্সিমকো।
চার দিন আগে ভারতের উপহার হিসেবে ২০ লাখ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। আর সেরাম থেকে ছয় মাসে তিন কোটি টিকা কেনার চুক্তি আছে। অন্যদিকে কোভ্যাক্স থেকে দেশের ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এর বাইরে আরও টিকা কেনার পরিকল্পনা আছে সরকারের।
আগামীকাল টিকার উদ্বোধন : আগামীকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সভা শেষে তিনি জানান, ওইদিন ২০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী প্রথম পাঁচজনের টিকা দেওয়ার সময় ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকবেন। উদ্বোধনী টিকাদান অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত হবে। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। বক্তব্য দেবেন শুধু স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে এ অনুষ্ঠান বিটিভি সরাসরি প্রচার করবে।
উদ্বোধনের পর নিবন্ধনের সময় চূড়ান্ত হবে : গতকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ জানুয়ারি করোনা টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এরপর টিকা গ্রহীতাদের অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হবে। তবে নিবন্ধনের জন্য সেদিনই অ্যাপ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে কি না তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, এখনো নিবন্ধন শুরুর সময়টা চূড়ান্ত হয়নি। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরে নিবন্ধন শুরু হবে। তবে সেটা ওইদিনই হবে নাকি তারপরের দিন হবে, সেটা এখনো জানা যায়নি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশন অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে নিবন্ধনসহ টিকা অবহিতকরণের নানা তথ্য জানান তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। সম্মেলনে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস কভিড ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’র অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের বিভিন্ন কারিগরি দিক সম্পর্কে অবহিত করেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।
সম্মেলনে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রোগ্রামারদের একটি দল নিজস্ব উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ সফটওয়্যারটি প্রস্তুত করেছে। সরকারের কোনো অর্থ ব্যয় ছাড়াই এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সরবরাহ করা হচ্ছে। নাগরিক নিবন্ধন ও ভ্যাকসিন প্রদানসহ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সুরক্ষা সফটওয়্যারটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ব্যবহার করতে পারবে। এ সিস্টেমটির উন্নয়ন এবং পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), এটুআই এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
নিবন্ধন ছাড়া টিকা নয় : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশন অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকা দেওয়া হবে না। ‘সুরক্ষা’র রেজিস্ট্রেশনের বাইরে টিকা দেওয়াকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের এ ডেটাগুলো সংরক্ষণ করতে হবে, অ্যানালাইসিস করতে হবে। অনলাইনের এ তথ্যগুলো পরবর্তী সময়ে অনেক কাজে আমাদের লাগাতে হবে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী আমরা কেন্দ্রে টিকা পাঠাব। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকার সুযোগ দিলে অনেক টিকা নষ্ট হবে। নির্ধারিত তারিখ ও কেন্দ্র অনুযায়ী টিকা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি।
তিন হাসপাতালের ৮৫ জনকে টিকার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে দক্ষিণ সিটি : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার তিনটি হাসপাতালের ৮৫ জন চিকিৎসক ও নার্সকে করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শরীফ আহমেদ। গতকাল দুপুরে দক্ষিণ সিটির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনের সামনে এ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮৫ জন চিকিৎসক ও নার্সকে টিকা প্রয়োগের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার রাজধানীর যে পাঁচ হাসপাতালে টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে, তার মধ্যে এই সিটি করপোরেশনের অধীনে এ তিন হাসপাতাল।