ধর্ষণে অভিযুক্ত হয়ে আটক সোনাগাজীর সেই যুবক জিয়াউল হক জিয়াকে বিয়ের করার শর্তে জামিন দিতে চায় হাইকোর্ট। গত ১ নভেম্বর আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী তার কারাবন্দী মক্কেল জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে আদালতে একটি দ্বৈত বেঞ্চে এমন আদেশ প্রদান করেন।
ফেনী জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ারুল করিম বলেন, হাইকোর্টের আদেশ বুধবার (১১ নভেম্বর) আমরা পেয়েছি। বৃহস্পতিবার সকালে উভয় পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। উভয় পরিবার সম্মতি দিলে আমরা হাইকোর্টের আদেশ অনুসরণ করে বিয়ের ব্যবস্থা করে যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করব।
আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী বলেন, সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম চরদরবেশ গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ানের ছেলে জিয়াউদ্দিন এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে উভয়ের সম্মতিতে বিয়ের আশ্বাসে তারা শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পরিবার তাদের বিয়ের উদ্যোগ নিলে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কিশোরীর পরিবারকে ফুসলিয়ে গত ২৭ মে সোনাগাজী থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এরপর পুলিশ জিয়া উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। পরে পুলিশ ৩০ জুন আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। এ সময় মামলার বাদী ও আসামিপক্ষ আপসে বিয়েতে সম্মত থাকলেও তা আর সম্ভব হয়নি।
আইনজীবী ফারুক আলমগীর আরো বলেন, নিম্ন আদালতে জামিন না হলে জিয়া উদ্দিনের পরিবার আমার শরণাপন্ন হয়। আমি জামিন চেয়ে হাইকোর্টে মিস মামলা দায়ের করি। গত ১ নভেম্বর বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে জামিন শুনানির সময় আমি আদালত জানাই কথায় কথায় ধর্ষণের মামলা আদালতে না করে আমাদের প্রতিকার দেওয়া বাঞ্ছনীয়। এ বক্তব্যের ধারাবাহিকতায় আদালত বিয়ের শর্তে আমার মক্কেলকে জামিন দিতে অভিমত ব্যক্ত করে আদেশ প্রদান করেন।
তিনি বলেন, আদালত আদেশে উল্লেখ করেন উভয় পক্ষ সম্মত থাকলে ফেনী জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ আদেশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবে এবং বিয়ে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টকে অবহিত করবেন। বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে কারা কর্তৃপক্ষের এমন প্রতিবেদন জমা হলে হাইকোর্টে জমা হলে আদালতে জামিনের আদেশ প্রদান করবেন।
ধর্ষণে অভিযুক্ত কারাবন্দী জিয়া উদ্দিনের বাবা বলেন, প্রথম থেকে আমি বিয়েতে রাজি ছিলাম কিন্তু প্রভাবশালী মহলের ষড়যন্ত্রে আমরা উভয় পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
আদালতের আদেশকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কারাগার কর্তৃপক্ষ বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে যেভাবে সহযোগিতা চাইবে আমি সেভাবে সহযোগিতা করব।
ওই কিশোরীল মামা কারাবন্দী জিয়াউদ্দিনের পিতার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে হাইকোর্টের বিচারপতিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।