বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের বিশেষ উদ্যোগে গৃহীত প্রকল্প সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার কমিটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবটি অনুমোদন করে।
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ঢাকা শহরের অন্যতম সমস্যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সিদ্ধান্ত নেন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের। এ জন্য দফায় দফায় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সাথে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সভা করেন। এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি যে সকল দেশ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এমন বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করেন। পাশাপাশি তিনি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রক্রিয়াকরণ কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসি-১৯৯৬-এর আওতায় বিওও ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএমইসি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’-এর ভিত্তিতে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। আগামী ২০ মাসের মধ্যে সিএমইসি এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর।
স্পন্সর কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্লান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের নিকট উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে তাদের ব্যয় নির্বাহ করবে। সিটি করপোরেশন প্লান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান এবং নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে।
প্লান্টটি চালু হলে সেখানে প্রতিদিন তিন হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য সরবরাহ করতে হবে। এ পরিমাণ বর্জ্য সরবরাহ করতে না পারলে উত্তর সিটি করপোরেশনকে প্রতি মেট্রিক টন ঘাটতি বর্জ্যের জন্য এক হাজার টাকা হারে স্পন্সর কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। যেহেতু প্রতিদিন তিন হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য প্রয়োজন হবে তাই এ পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করতে হলে আর যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকবে না।
এ প্রক্রিয়ায় বর্জ্য প্রায় সম্পূর্ণরূপে দহন করে বর্জ্যের আয়তন প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব এবং এর ফলে বর্জ্য ফেলার জমির চাহিদা হ্রাস পাবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র ইনসিনারেশন প্রযুক্তি প্রয়োগে বর্জ্যের দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট গ্যাসীয় নিঃসরণ মানমাত্রা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। গ্রহণ করা হবে ইইউ/২০১০/৭৫ইইউ মানদণ্ড যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭-এর মানদণ্ড হতে অধিক পরিবেশ বান্ধব এবং বর্তমানে উন্নত দেশসমূহে অনুসরণ করা হচ্ছে।
প্রকল্পটির সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা পর্যায়ে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে সরকার। সূত্র: ইউএনবি