কোনো পরীক্ষা ছাড়াই ব্যারিস্টার মো. জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে প্রাকটিস করার জন্য প্রকাশিত গেজেট বৈধ বলে দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আদালতের সময় নস্ট করার জন্য রিট আবেদনকারী দুই আইনজীবীকে ২শ টাকা খরচ (কস্ট্) দিতে হাইকোর্টের আদেশও স্থগিত করা হয়েছে।
প্রধান বিচাপরতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বুধবার এ আদেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল আবেদন দাখিল করা পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। রিট আবেদনকারী দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের আবেদনে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অপরপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
দুই আইনজীবীর রিট আবেদন খারিজ করে গত ৮ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। এছাড়া মামলায় খরচ বাবদ আদালতে দুইশ টাকা জমা দিতে রিট আবেদনকারী দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় ওই টাকা জোগাড় করতে আইনজীবীরা অভিনব কর্মসূচি হাতে নেন। তারা একটি ফান্ড গঠন করেন। সেই ফান্ডে আইনজীবীরা একটাকা করে জমা দিয়েছেন। তবে তারা কোনো নোট জমা দেননি। এমনকি কেউই এক টাকার বেশি দেননি। সকলেই এক টাকা মূল্যমানের একটি করে কয়েন (মুদ্রা) জমা দেন। এ অবস্থায় হাইকোর্টের রায় স্থগিত করে আবেদন করেন ওই দুই আইনজীবী।
এদিকে ওই দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার রুলের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে পৃথক আবেদন করেছেন ওই দুই আইনজীবী। ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে রিট আবেদনকে কেন্দ্র করে আদালতের আদেশ অমান্য করার অভিযোগে ওই দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে গত ৮ নভেম্বর আদালত অবমাননার রুল জারি করেন একই হাইকোর্ট বেঞ্চ। আগামী ১৬ নভেম্বর ওই দুই আইনজীবীকে ¯^শরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে গতকাল পৃথক আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট দুই আইনজীবী।
উল্লেখ্য, ওই রিট আবেদন ও পরবর্তীতে আরো কিছু কার্যক্রম নিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত নালিশ জানান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। সমিতির সভাপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ১৪ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের পর ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।