বাংলাদেশের ২২ বছরের তরুণ জাহিন রাজিন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি নিয়ে কাজ করার জন্য জাতিসংঘের ২০২০ সালের ১৭ তরুণ নেতার একজন নির্বাচিত হয়েছেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য এটিকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্বীকৃত প্ল্যাটফর্ম বিবেচনা করা হয়।
প্রতি দুই বছর অন্তর এভাবে পৃথিবীর মেধাবী তরুণদের স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ। পৃথিবীর প্রতিটি দেশের ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণেরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন।
জাতিসংঘের মহাসচিবের যুব বিষয়ক দূত জয়থমা বিক্রমণায়কে পিটিআইকে এই তরুণদের সম্পর্কে বলেন, ‘অভূতপূর্ব সময়ে জাতিসংঘ ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পার করছে। ২০২০ ইয়ং লিডাররা এসডিজি অর্জনে কীভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, এই কার্যক্রম তার উদাহরণ।’
বাংলাদেশের জাহিনের মাত্র ২২ বছর বয়সে বেশ কয়েকটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর উদ্যোগ আছে, যা পানি নিরাপত্তা ও উন্নয়ন, ভাষা শিক্ষা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে। তিনি ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ ও রেজ্যুলেশন প্রজেক্টের সহযোগী হিসেবেও কাজ করছেন।
তার প্রতিষ্ঠিত ‘কোয়ান্টাম পলিকেমিক্স’ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে নন-টক্সিক, অর্গানিক পলিহাইড্রক্সিয়ালকোনোট (পিএইচএ) ভিত্তিক বায়োপলিমার উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে, যা পুরোপুরি পরিবর্তনযোগ্য ও পরিবেশে মিলিয়ে যায়। প্রকল্পটি বর্তমানে পাট কারখানার ও মিলগুলো থেকে ফেলে দেওয়া জুট ডাস্ট দিয়ে বায়োরিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে ন্যানো-ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে সিনথেটিক বায়োপ্লাস্টিক তৈরি করছে। এর মাধ্যমে তৈরি পলিমার পণ্যগুলো মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তরল পদার্থে এবং এক মাসের মধ্যে মাটিতে মিশে যায়। এসব পণ্য প্লাস্টিক পলিব্যাগ, প্যাকেজিংয়ে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৯ ও ১৪ অভিষ্টের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এ প্রযুক্তি প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ব্যবহার লক্ষের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের বায়ো-ভিত্তিক অর্থনৈতিক যুগের প্রচলনের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে।
নির্বাচিত ১৭ জনের মধ্যে বাংলাদেশের পাশাপাশি বাকি যে দেশগুলো থেকে ইয়ং লিডার নির্বাচিত হয়েছেন: অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ভারত, বুলগেরিয়া, চীন, কলম্বিয়া, মিশর, আয়ারল্যান্ড, লাইবেরিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, পেরু, সেনেগাল, তুর্কি, উগান্ডা এবং যুক্তরাষ্ট্র।