জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্থস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কিংবা একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানান, কার্যতালিকায় এলে মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চে আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
আবেদনে ওই ঘটনায় একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজমুল হোসেনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুলের আর্জি জানানো হয়েছে।
আবেদনে নাজমুলসহ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’কে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকায় ‘২০ কোটি টাকার বই দুর্নীতি : ৩টি বইয়েরই মেধাস্বত্ব চুরি করেছেন সাংবাদিক নাজমুল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন জানান পত্রিকায় প্রকাশিত এ প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট আবেদনটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কিন্তু ঘটনাচক্রে মনে হচ্ছে এখানে শুধু ব্যক্তি জালিয়াতি হয়নি। যৌথ জালিয়াতি হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কতিপয় লোকজন ছাড়া এটি সম্ভব নয়। তাই মন্ত্রণালয়ের কেউ যদি জড়িত থাকে তাদেরও এর আওতায় আনা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয় নিজেই তো নিজের বিচার করতে পারে না। সে জন্য ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত অথবা স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ঘটনার তদন্ত চেয়ে এ রিট আবেদনটি করেছি।’
মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর জন্য আটটি বই কেনার প্রক্রিয়ার মধ্যে তিনটি বই নিয়েই জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে সাংবাদিক নাজমুলের বিরুদ্ধে। ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটির পাশাপাশি অধ্যাপক নাসরিন আহমদ সম্পাদিত ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটিরও মেধাস্বত্ব চুরি করে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দুটি প্রকাশনা সংস্থার মালিক ও এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।