৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের মহাসমাবেশ আহবান করেছে সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সংগ্রাম পরিষদ। গত ৩০ শে জুন সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৭ই জুলাই থেকে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের কর্মসূচি চলমান থাকলেও বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের দাবি মেনে নেয়নি।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেখানে পরীক্ষার বিকল্প ভাবছে এবং আগামী ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানে ২৬ শে সেপ্টেম্বর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সর্বোপরি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সামিল।
এই বিষয়ে সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সুমনা আক্তার লিলি বলেন ” মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, তিনি সব সময় দেশ ও জাতির কল্যাণে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা মনে করি আগামী ০৩ রা অক্টোবর পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ও পরীক্ষার বিকল্প ভাবার যে সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন তা সঠিক ও সময়োপযোগী। কারো জীবনের চেয়ে কখনো পরীক্ষা বড় হতে পারে না। পরীক্ষায় অংশ নিতে এসে কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাতে বার কাউন্সিলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ার পরিবর্তে ক্ষুন্ন হবে। তাই আমরা আশাকরি বার কাউন্সিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা বা লংঘন করে কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না। “
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব আইনুল ইসলাম বিশাল বলেন ” আমরা কখনোই পরীক্ষার বিপক্ষে ছিলাম না এবং এখনো নাই, বরং দীর্ঘদিন পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এসেছি। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১১ই নভেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে পরীক্ষার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণে আমরণ অনশন করেছি। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এবং লিখিত পরীক্ষায় অনিয়ম নিয়ে যেসব কথা শুনে এসেছি তাতে আমরা ভালো পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারবো কিনা তা নিয়ে সংকিত। দীর্ঘদিন যাবৎ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর মৌখিক ও লিখিতভাবে লিখিত পরীক্ষার খাতায় ওএমআর সংযুক্তর আবেদন করে আসলেও তিনি কোনো এক অজানা কারনে খাতায় ওএমআর যুক্ত করতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন।
বার কাউন্সিলের নির্বাচিত মাননীয় সদস্য এডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু স্যার ২০১৮ সালে আমাদের মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন লিখিত পরীক্ষার খাতায় ওএমআর যুক্ত করা হবে। তারপরও এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে সচিব মহোদয় কর্তৃক কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বরং আমরা যখন গত ২৫ শে জুলাই ও ৯ই আগস্ট লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে আমাদের আশংকার কথা জানিয়ে সচিব মহোদয়কে যখনই লিখিত পরীক্ষার খাতায় ওএমআর যুক্ত করার দাবি জানাই তখন তিনি প্রতিত্যুরে বলেন কারো যদি লিখিত পরীক্ষার খাতার বিষয়ে কোনো আশংকা থাকে তাহলে তার পরীক্ষায় বসার দরকার নাই। একজন সর্বোচ্চ কর্মকর্তার নিকট থেকে এমন উত্তর অপ্রত্যাশিত। এছাড়াও ২০১৭ সালে একই সাথে ( ২১৭৬৫ থেকে ২১৮৮৮) ১১৮ জন প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় কিভাবে উত্তীর্ণ হয়েছে সেই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেও তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তাই যেখানে লিখিত পরীক্ষায় কোনো স্বচ্ছতা নাই এবং বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য জনাব নজিবুল্লাহ হিরু স্যারের প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না সেহেতু আমরা মনে করি লিখিত পরীক্ষা চিরতরে বাতিল হওয়া প্রয়োজন। ”
এই বিষয় গুলোকে বিবেচনায় নিয়ে সম্মিলিত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সংগ্রাম পরিষদ ৩ দফা দাবি জানিয়ে আগামী ০৩ রা সেপ্টেম্বর মহা সমাবেশের আহবান করেছেন। নেত্রীবৃন্দ মনে করেন এই তিন দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আইনজীবী তালিকাভুক্তিকরণ স্বচ্ছ ও সহজ হবে। তাই সকল শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে আগামী ০৩ রা সেপ্টেম্বরের সমাবেশে যোগদান করার জন্য আহবান জানান।