যশোরের মণিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসানের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিতর্কের রেশ না কাটতেই এবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা আক্তার। তার পরিচালনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে জনসাধারণের ওপর লাঠিচার্জ, ধাওয়া করে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির ৩ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে এসিল্যান্ডের অফিস সহায়ক (পিয়ন) মো. সাইফুল ইসলাম লাঠি হাতে নিয়ে একাধিক লোককে ধাওয়া করছেন। প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও ভিডিওটি দেখার পর ওই এসিল্যান্ড তার অফিস পিয়ন কর্তৃক জনতাকে ধাওয়া করার ঘটনা স্বীকার করেন।
জানা যায়, শুক্রবার (২৭ মার্চ) দুপুরে জেলার বুড়িচং উপজেলার নিমসার ও কাবিলাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা আক্তার। এসময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা না থাকায় এবং মাস্ক না পরে বাজারে ঘোরাফেরার কারণে ৮ জনকে জরিমানা করেন এবং অনেককে সতর্ক করেন।
এসময় বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য আসা সাধারণ মানুষকে লাঠি হাতে ধাওয়া করেন পুলিশ ও এসিল্যান্ড অফিসের পিয়ন সাইফুল ইসলাম। স্থানীয়দের অভিযোগে, একাধিক ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে পেটানো এবং এক ব্যক্তিকে কানে ধরিয়েছেন তারা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, লাঠি হাতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মচারীরা পিটিয়ে ও মানুষকে ধাওয়া করে পুরো বাজারে আতংক সৃষ্টি করবে, এটা কেমন ভ্রাম্যমাণ আদালত? এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে ধারণকৃত ৩ মিনিটের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান বলেন, লাঠি হাতে জনতাকে ধাওয়া, পেটানো এবং কানে ধরার বিষয়টি আমার জানা নেই। এসিল্যান্ড ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। তিনি এই বিষয়ে ভাল বলতে পারবেন। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয় এসিল্যান্ড তাহমিদা আক্তার জানান, বাজারে লোকসমাগম বেশি ছিল। লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে কানে ধরানো এবং লাঠি হাতে ধাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে ভিডিওটি তাকে দেখানো হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা শাখার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, এতে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে লাঠি হাতে ধাওয়া করা আইনের ব্যত্যয়। এক্ষেত্রে প্রমাণাদি দেখে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, কোনও সিভিল কর্মচারী লাঠি দিয়ে এভাবে পেটাতে কিংবা কানে ধরাতে পারে না, এটা বেআইনি। এর দায় এসিল্যান্ড এড়াতে পারেন না।
সূত্র বাংলা ট্রিবিউন অনলাইন।