দেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান সব নদ-নদীকে ‘জীবন্ত সত্ত্বা’ ঘোষণা সংক্রান্ত আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন এ সংক্রান্ত রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তুরাগ নদ দখল ও দূষণ নিয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৬ সালে করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।
রায়ে নদ-নদীকে জীবন্ত ও আইনি সত্ত্বা, আইনি ব্যাক্তি ঘোষণা করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নদ-নদী দখলকে ফৌজদারি অপরাধ, দখলকারীদের ব্যাংক লোন না দেওয়া, যে কোনো নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার কথা বলা হয় হাইকোর্টের রায়ে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের কিছু অংশ সংশোধন করে আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দেয়। রায়ের বরাতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ জানান, নদ- নদীকে ‘জীবন্ত সত্ত্বা’ ঘোষণার সিদ্ধান্তটি সর্বোচ্চ আদালতে বহাল রয়েছে। তবে, হাইকোর্টের রায়ে ৪ নম্বর নির্দেশনা অনুযায়ী ‘দূষণকারীকর্তৃক ক্ষতিপূরণ প্রদানের নীতিকে আইনের অংশ ঘোষণা করা’ বাতিল হয়েছে। ৭ নম্বর নির্দেশনা ‘নদী দখলকে ফৌজদারি অপরাধ ঘোষণা’, ১৪ নম্বর নির্দেশনা ‘নদী দখলদারদের ব্যাংক লোন বন্ধ’, ১৫ নম্বর নির্দেশনা নদী দখলদারদের ‘নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা’ সম্পর্কে হাইকোর্টের রায় সংশোধন করে এই তিনটি নির্দেশনা সাজেশন বা মতামত হিসেবে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের নির্দেশনা সংশোধনের কারণ হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আইন প্রণয়ন করার এখতিয়ার শুধুই জাতীয় সংসদের। আদালত সংসদকে আইন করতে নির্দেশ দিতে পারেন না, তবে কোনো আইন সংবিধান পরিপন্থি হলে উচ্চ আদালত তা বাতিল করতে পারেন কিংবা আইন সংশোধনের জন্য আদালত মতামত দিতে পারেন।
তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ে নদী কমিশনকে স্বাধীনভাবে চলা, এটিকে আরও অধিক কার্যকর করা এবং কমিশনকে নদীর অভিভাবক ঘোষণা করা হয়েছিল। আপিল বিভাগে এই সিদ্ধান্তগুলো বহাল রয়েছে।