আসাদুজ্জামান আসাদ সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধিঃ
দক্ষিন বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা সাতক্ষীরা যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও মহান অভিভাবক, জাতির বিবেক, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শতাব্দীর শ্রেষ্ট সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কোন শিল্প কলকারখানা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই জেলায় তেমন গড়ে উঠে নাই। শুধু মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান যার নাম বঙ্গবন্ধু পেশা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জনাব প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ম.ম.আলাউদ্দীন এর নেতৃত্বে পরবর্তীতে উনাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হলো। হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধার আত্মার ত্যাগের বিনিময়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এবং বিশেষ করে অদম্য সাহসী সন্তান শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যে দেশটি স্বাধীন হলো তাদের কোন চিহ্ন সাতক্ষীরা জেলায় থাকবে না সেটা হতে পারে না। পরিশেষে আমরা দেখলাম বঙ্গবন্ধুর অন্যতম খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী এবং সাতক্ষীরা জেলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মমতাজ আহমদ জাতির জনকের নামে একটি প্রতিষ্ঠান করার জন্য ১৯৯৩ সনে কলারোয়া (সদর উপজেলা) চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু বিধি বাম তিনি পারলেন না, খোদ তার নিজ দল থেকে ও বাধা আসতে লাগলো কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। তিনি তৎকালীন সময়ের জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার জননী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং তার হাতের লেখা একটি চিঠির মাধ্যমে ও কলারোয়া উপজেলার কিছু গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সহযোগীতায় বাংলার এবং বিশ্বের অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজটি (কলারোয়া পৌরসভায় হাসপাতাল সংলগ্ন) প্রতিষ্ঠিত করেন। কলেজের ছাত্রীর সংখ্যা ও পর্যায় ক্রমে বোর্ডে ভালো ফলাফল এবং শিক্ষক/কর্মচারি ছাত্রীদের সামগ্রীক কার্যক্রমে কলেজটি সাতক্ষীরা জেলার ভিতর ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজে রুপ নিল এবং জাতির অহংকার, গর্ব ও সম্মান বঙ্গবন্ধুর মান বুকে ধারন করে আমরা সারা সাতক্ষীরা জেলায় পরিচিত হয়ে উঠলাম। এটাই আজকের সাতক্ষীরা বাসীর জন্য গর্ব ও অহংকার। এ ছাড়া সাতক্ষীরা জেলায় গর্ব করার মত বঙ্গবন্ধুর নামে আর কিছুই নাই। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে পরবর্তীতে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে আমরা বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ পরিবারটি ধীরে ধীরে কোন ঠাসা হতে লাগলাম। যাই হোক দুই বছর কষ্টে থাকার পর আবারো মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের আশা ভরসার স্থল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলো। আমরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। তারপর সেই জীর্ন ভবন গুলিতে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হয় কোন ভবন কলেজে দেওয়া হলো না অথচ জামাত বিএনপি পন্থী সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নতুন নতুন ভবনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স এমনকি মাস্টার্স এ বিভিন্ন বিষয় অনুমোদন পেতে লাগলো। তখন থেকে শুরু করে আমার এই লেখা আজকের দিন পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সংগঠন এর বিভিন্ন এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বহু জায়গায় কলেজটির সামান্য দেখভালের জন্য আমরা বহু অনুনয় বিনয় করেছি কিন্তু কিছুই পাই নাই। সাম্প্রতিক কালে শুনেছি বা পত্র পত্রিকায় পড়েছি জাতির জনক এবং তার পরিবারের কোন সদস্যের নামে কোন প্রতিষ্ঠান থাকলে তাহা জাতীয়করণ হবে। তাই বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারী পরিবার হঠাৎ করে একটু স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। কোন নেতা, এমপি চেয়ারম্যান বা পুরোদলটি যখন কিছুই মহিলা কলেজটির জন্য করতে পারলেন না তখন আমার এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী এবং বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন আপনি একটু দৃষ্টি দিলেই হয়ত বা কলেজটির জাতীয়করণ সহ বঙ্গবন্ধুর নাম স্মরনীয় হয়ে থাকবে এবং পূর্বের সেই অবস্থায় আমরা ফিরে যেতে পারতাম। আপনার চিঠির মাধ্যমে কিন্তু আমরা প্রান ফিরে পেয়েছিলাম এবং আমাদের কলেজের প্রানপ্রিয় প্রতিষ্ঠাতা জনাব মমতাজ আহমেদ এর স্বপ্ন ছিল কলেজেটি জাতীয়করণ করা। কিন্তু দূর্ভাগের বিষয় কিছু দিনের মধ্যে তিনি মারা গেলেন এবং আমরা আমাদের মূল অভিভাবককে হারিয়ে ফেললাম। তাই তার শেষ ইচ্ছা এবং অসম্পূর্ন স্বপ্নটিই বাস্ববায়ন করার জন্য আমরা বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ কলারোয়া সাতক্ষীরা এর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন সাতক্ষীরা জেলায় জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একমাত্র মহিলা কলেজটি যাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে এবং খুব দ্রত জাতীয়করণ হতে পারে তার সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছি এবং এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলার সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি নতুবা হয়ত বা একদিন সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত কলারোয়া পৌরসভার উপর অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নামের কলেজটি বিলীন হয়ে যেতে পারে। লেখার ভিতর কোন ভুলত্রুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
লেখকঃ জহিরুল ইসলাম (শাহিন), সহঃ অধ্যাপক (ইং), বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।