নিজেস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রায় ৪৭ হাজার গ্রাম পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের চাকরি জাতীয়করণের রায় প্রকাশ হয়েছে। রায়ে গ্রাম পুলিশের মধ্যে মহল্লাদারদের জাতীয় বেতন স্কেলের ২০তম গ্রেড এবং দফাদারদের ১৯তম গ্রেডে বেতন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রায়ে হাইকোর্ট বলেন, এটা কাচের মতো স্পষ্ট যে, গ্রাম পুলিশ ও মহল্লাদাররা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নিয়োগ পেয়ে প্রজাতন্ত্রের ৭০ প্রকার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকেন। সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিকটতম আত্মীয়ের মতো প্রজাতন্ত্রের কর্মে তারা নিয়োজিত। ঝড়-বৃষ্টি, বিপদ-আপদ উপেক্ষা করে তারা বাংলার সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকেন। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার কাকে বলে এরা জানে না।
এর আগে গত বছরের ১৫ ও ১৭ ডিসেম্বর এ রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এতে বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ মোতাবেক আইনানুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে তথা ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে তথা ন্যায্য প্রত্যাশা থেকে তথা আইনসম্মত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। ‘বর্তমান মোকদ্দমায় দরখাস্তকারীরাসহ সব মহল্লাদার ও দফাদারগণের ন্যায্য অধিকার বিধিমালা ২০১১ অনুযায়ী বেতন-ভাতাদি পায়। কিন্তু প্রতিপক্ষগণ স্পষ্টত: দরখাস্তকারীগণ সহ সকল মহল্লাদার ও দফাদারগণকে ন্যায্য অধিকার থেকে বেআইনিভাবে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছে।’
রায়ের আদেশ অংশে বলা হয়, ২০১১ সালের ২ জুন হতে মহল্লাদারগণকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (বর্তমানে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫) এর ২০তম গ্রেডে বেতন ভাতাদি প্রদান করতে এবং দফাদারগণকে জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫) এর ১৯ তম গ্রেডে বেতন ভাতাদি প্রদান করতে প্রতিপক্ষগণকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
আদেশে আরো বলা হয়, ২০১১ সালের ২ জুন তারিখের পর হতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০১১ বহির্ভুতভাবে মহল্লাদার ও দফাদার এর যেকোনো নিয়োগ অবৈধ ও বেআইনি মর্মে গণ্য হবে। ওই তারিখের পর হতে বিধিমালা ২০১১ বহির্ভুত যেকোনো নিয়োগ আপনা আপনি বাতিল হবে।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাইয়ের টুপিরবাড়ীর হাটকুশারা এলাকার বাসিন্দা লাল মিয়াসহ কয়েকজন গ্রাম পুলিশ সদস্যের করা রিটে রুল দেন হাইকোর্ট।