করোনাকালিন বর্জ্য মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ব্যবহৃত মাস্ক, পিপিই, হ্যান্ড গ্লাভস, সার্জিক্যাল মাস্ক ফেলে দেয়া হচ্ছে যত্রতত্র। করোনায় মৃত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত সামগ্রি, জামাকাপড়ও ফেলা দেয়া হচ্ছে এখানে সেখানে। অন্য সাধারণ আবর্জনার মতোই মনে করা হচ্ছে অতিসংক্রমণ ভাইরাসসমৃদ্ধ করোনা আবর্জনাকে। সরকারি-বেসরকারি কোনো পর্যায়েই নেই কোনো ট্রিটমেন্ট কিংবা ব্যবস্থাপনা। বিশেষজ্ঞদের মতে যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যমতে, করোনা সংক্রমণের পর থেকে দেশে প্রায় ১৪ হাজার ৫শ’ টন বর্জ্য তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ১ হাজার ৩১৪ টন সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস বর্জ্য ও ৪৪৭ টন সার্জিক্যাল মাস্কের বর্জ্য তৈরি হয়েছে। এ ধরনের বর্জ্যরের সঠিক ও যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকার ফলে পরিবেশের ক্ষতিসাধন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ দেশের মানুষ করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এ প্রেক্ষাপটে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে লিগ্যাল নোটিস দেয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট জে.আর.খান রবিন গতকাল মঙ্গলবার এ নোটিস দেন। নোটিসে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় (স্বাস্থ্যসেবা) সচিব ছাড়াও, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সচিব, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিস প্রাপ্তির ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করোনার মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়।
নোটিসে উল্লেখ করা হয়, গত ১২ এপ্রিল বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাসমূহের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ রোগে ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক ও চিকিৎসা সরঞ্জামগুলো জীবাণুমুক্ত রাখা এবং এগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেবে। যেন এগুলো থেকে করোনাভাইরাস আর না ছড়ায়।
বর্তমানে করোনাভাইরাস একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও দেশীয় বিশেষজ্ঞদের মতে এ ভাইরাস ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি এবং এক জনগোষ্ঠি থেকে অন্য জনগোষ্ঠিতে সংক্রমিত হয়। অধিকন্তু করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির ব্যবহৃত ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি থেকেও এ ভাইরাস সংক্রমিত হয়। কিন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি (পিপিই), হ্যান্ড গ্লাভস, সার্জিক্যাল মাস্ক নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থাপনা ছাড়াই সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে যত্রতত্র ফেলায় দিন দিন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।