এজি লাভলু, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের পুলিশকে কীভাবে জনমুখী ও জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা যায়, প্রতিটি থানার, প্রত্যন্ত এলাকাতে কীভাবে পুলিশের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়, পুলিশের কার্যক্রমে কীভাবে আরও গতি আনা যায় এবং সর্বোপরি বিদ্যমান সর্বোচ্চ ব্যবহারের নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে পুলিশের কার্যক্রমকে কীভাবে আরও গতিশীল করা যায় এসব বহুমুখী প্রশ্নের সমাধানের পথ হচ্ছে সম্প্রসারিত বিট পুলিশিং কার্যক্রম।
কুড়িগ্রাম জেলার ১১টি থানায় পুলিশ সুপার মোহাস্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম’র নির্দেশনায় শুরু হয়েছে বিট পুলিশিং কার্যক্রম। মঙ্গলবার(২ জুন) দুপুরে বিট পুলিশিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জেলার উলিপুর উপজেলার পৌরসভাসহ প্রতিটি ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই ও এএসআই’দের মোবাইল নম্বর বহুলভাবে প্রচারের জন্য লিফলেট বিতরণ ও ব্যানার লাগানো হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, মসজিদ, মন্দির, বাজারের মোড়ে যেখানে মানুষের চলাচল বেশী,স্কুল কলেজের অফিস কক্ষে ও লিফলেট হিসেবে বিতরন করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছোটখাট বিবাদ থেকে যাতে ভবিষ্যতে বড় কিছু না হয়। সে ব্যাপারে প্রতিটি থানায় বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট এসআই ও এএসআইদের মোবাইল নম্বর ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে। যাতে যেকোন ঘটনার খবর এবং পুলিশী সহায়তা জনগণ দ্রুত পায়।বিট পুলিশিং কার্যক্রম ইউনিয়ন ভিত্তিক জোড়দার করতে মনিটরিংয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও যেকোন প্রয়োজনে ৯৯৯এ ফোন করার আহবান জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম।
করোনা সংকট মোকাবেলায় জেলা পুলিশ কুড়িগ্রাম দিন রাত একাকার করে রুটিন ওয়ার্ক, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা, আইনশৃংখলা রক্ষা, করোনা সংক্রমন মোকাবেলায় বিভিন্ন নতুন ইস্যু নিয়ে কাজ করছে, চলছে মানবিক সহায়তা ঠিক তখনই দেশের সকল জেলা বা এলাকাগুলোর মত এখানেও সামাজিক অস্থিরতা, জমি জমা দখল নিয়ে সংঘাত,তুচ্ছ ঘটনাকে নিয়ে খুনোখুনি, গরু ক্ষেতে বিচরনের কারনে মারামারি, ফলস্বরুপ পিটিয়ে আহত ও নিহত, পিতা পুত্রকে হত্যা এগুলো মাথা চারা দিয়ে উঠছে। প্রতিবেদনটি তৈরির সময় খবর পাওয়া যায়, রাজারহাট মিলের পার এলাকায় দাম্পত্যকলহের জের ধরে নির্যাতনের শিকার এক বধু বাবার বাড়িতে রাগ করে এসেছে, স্বামী বেচারা বউএর সাথে কথা বলতে এসে বা বুঝিয়ে ফেরত নিতে এসে,রাত্রে শ্বশুড় বাড়িতে বউসহ এক ঘরে ঘুমায়। গভীর রাতে স্বামী তার স্ত্রী কে ডেকে পাশের ভুট্টা ক্ষেতে বউএর পরিবারের লোকজনের চোখের অন্তরালে খুন করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
এ ঘটনাগুলোকে কে কিভাবে উপস্থাপন করবে – আইনশৃংখলার অবনতি, মেধা বুদ্ধি কমসম্পন্ন লোকজনের বলতে তো নিষেধ নেই। তবে সচেতন মানুষ মাত্রই বলবেন সামাজিক অবক্ষয়, সামাজিক অস্থিরতা থেকেই এগুলো ঘটছে উল্লেখ করে নাজিমখান স্কুল এন্ত কলেজের এক শিক্ষক বলেন, হত্যার ঘটনায় জড়িত স্বামী পালিয়েছেন। পুলিশ তাদের খুজছে, অভিযান অব্যাহত থাকার কথা জানান,রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু মিয়া। পরে আর এক অভিযানে ঘাতক স্বামীকে আটক করে রাজারহাট থানা পুলিশ। বিট পুলিশিং এর সুবাদে পলাতক আসামীকে পুলিশ আটক করতে সফল হয়।
অতীতে এরকম অস্থিরতা নিরসনে এবং সমাজের অবক্ষয় ঠেকাতে বাংলাদেশে পুলিশ কমিউনিটির কনসেপট আসে। প্রথমের দিকে ভালোই চলছিলো। ইদানীং তা বিভিন্নকারনে অকার্যকর হয়ে পরেছে। সবাই নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আর এই পুলিশ কমিউনিটি থেকেই আপডেট ভার্সন আসলো বিট পুলিশিং।এটি অবশ্যই পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম মহোদয়ের একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এটি কার্যকর হলে ও পুর্নতা পেলে সমাজ উপকৃত হবে অবক্ষয় হানাহানি কমে আসবে। মেট্রোপলিটনগুলোতে বিট পুলিশিং পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে এলাকার চিত্রই চেন্জ হয়ে গেছে।
বিট পুলিশিং বিষয়ে সহজসরল ভাষায় জনগন বিটপুলিশিং কার্যক্রম সম্পর্কে বুঝতে পারে ও এর সেবা নিতে পারে সেই প্রচেষ্ঠায় প্রচার প্রচারনা, লিফলেট পোষ্টার বিতরন করা হয়। দালাল শ্রেনীই যত নষ্টের গোরা, তাই ভালো সেবা পেতে হলে জনগনকে সচেতন হতে হবে, নিজেকেই মোবাইলে বোতাম টিপে সরাসরি পুলিশ কে সেবা দিতে আহবান করতে হবে।
উল্লেখ্য বর্তমান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনা ও কুড়িগ্রামে স্থানীয় আর্থসামাজিক ও ভৌগলিক অবস্থান,শিক্ষা ও দারিদ্রতা, সচেতনতা সব বিষয়ে অনুধাবন করে পুলিশে একটা গুনগত পরিবর্তন আনার কাজ করছেন। যা চলমান, কাজে অনেক বাধা বিপত্তি। সচেতন মহল একটু গুরুত্ব দিয়ে উপলব্ধি করলে, দেখবে এই এক বৎসরেই পুলিশ সেবার মানে বেশকিছু ইতিবাচক পরিবর্তন করে ফেলেছেন। তিনি পুর্ন সময় কাজ করার সুযোগ পেলে গুনগত পরিবর্তন ও এর সুফল কুড়িগ্রাম জেলাবাসীই ভোগ করবেন। এ বিষয়ে যতটুকু সহযোগিতা দরকার তা তিনি পাচ্ছেন না এর ভুরি উদাহরন আছে তবুও তিনি থামার পাত্র নন, এগিয়ে যাচ্ছেন। কুড়িগ্রামে বিটপুলিশিং তার একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে চলেছে।
বিট পুলিশিং বিষয়ে বিস্তারিত
একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিটি নাগরিকের পুলিশি সেবাপ্রাপ্তিতে অধিকার রয়েছে। এক সময় বলা হতো জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় সদিচ্ছা থাকা সত্তে¦ও জনগণকে কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয় না। সরকারের উদ্যোগে জনবল বৃদ্ধির পর যদিও পুলিশ-জনতা অনুপাত এখনও আর্ন্তজাতিক মানের অনেক পেছনে; তবুও নি:সন্দেহে বলা যায়, বর্তমানে পুলিশের সক্ষমতাও অনেক বেড়েছে। নবগঠিত বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট (যেমন-নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ইত্যাদি) পুলিশের প্রধান সেবাদান কেন্দ্র (Service Delivery Unit) হিসেবে থানার বর্ধিত জনবলের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জনআকাঙ্খা পূরণের দিকে দৃষ্টি দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।
বীট কী
বীট হল একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকা । শহরাঞ্চলের পুলিশ অধীক্ষেত্রকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করা হলে প্রত্যেক অংশকে এক একটি বীট বলা হবে।আমাদের দেশের প্রত্যেকটি শহরাঞ্চলকে পুলিশিং শুরুর আদিকাল থেকেই কয়েকটি বীটে ভাগ করা হয়েছে। থানায় কোন মামলা রুজু হলে তার ঘটনাস্থল নির্দেশ করতে এজাহারে গ্রামাঞ্চলের জন্য জে.এল (জুরিসডিকশন লিস্ট) নম্বর এবং শহরাঞ্চলের জন্য বীট নম্বর লেখা হয়। তাই বীট শব্দটি পুলিশ অফিসারদের কাছে নতুন কোন বিষয় নয়।
সম্প্রতি জানা যায় দ, এই বীট বিভাজন সম্পূর্ণ নতুন কোন পদ্ধতি বা ধারণা নয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন প্রতিষ্ঠার লগ্নেই তৎকালীন অধীক্ষেত্রকে বীটে ভাগ করা হয়েছিল। বর্তমানে তা সম্প্রসারণ করা হয়েছে মাত্র।
বীট পুলিশিং কী
বীট পুলিশিং হল কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক বা বিশেষ পুলিশ সদস্যদের স্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করা। আমাদের শহর এলাকাগুলোকে কয়েকটি বীটে ভাগ করে প্রত্যেকটি বীটের দায়িত্ব ঐ স্থানে কিছু পুলিশ অফিসার ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে নিজস্ব বিবেচনা শক্তি প্রয়োগ করে সেই এলাকায় পুলিশিং করে থাকেন। এক্ষেত্রে তিনি তার নির্ধারিত এলাকায় অপরাধ সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এলাকাবাসীর নিকট গৃহ-ডাক্তারের মতোই কাজ করেন।
বিট পুলিশিং অফিসার এলাকার মানুষের কাছে তাদের নিজেদের পুলিশ অফিসার বলেই প্রতীয়মান হবে। তিনি এলাকাবাসীদের সাথে স্থানীয় সুখ-দুঃখের অংশীদার হবেন। তিনি এলাকায় কেবল আইন প্রয়োগ বা শৃঙ্খলা রক্ষা নয়, এলাকার সকল সমস্যা সমাধানের নিয়ামক শক্তি বা প্রভাবক হিসেবে কাজ করবেন। দেওয়ানী, ফৌজদারি, সামাজিক, পারিবারিক এমনকি রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও একজন কমিউনিটি/ বীট পুলিশিং অফিসারকে এগিয়ে আসতে হবে।
কমিউনিটি পুলিশিং ও বীট পুলিশিং কী আলাদা দর্শন?
কমিউনিটি পুলিশিং এর ৯-পি সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, কমিউনিটি পুলিশিং হল একটি সার্বক্ষণিক ব্যক্তি-উপস্থিতিমূলক (personalized) পুলিশিং (policing,) দর্শন (philosophy) যেখানে একজন সুনির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার বিকেন্দ্রীভূত বরাদ্ধকৃত এলাকা (place,) স্থায়ীভাবে (permanet) টহলরত (patraol) থেকে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে স্বপ্রণোদিত(proactive) অংশীদারিত্বের (partnership) ভিত্তিতে অপরাধ-সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানে (problem-solving) সচেষ্ট থাকেন। সংজ্ঞাটি পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় বীট পুলিশিং আসলে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থায় উত্তীর্ণ হওয়ার একটি উপায় বা কৌশলমাত্র। অর্থাৎ বীট পুলিশিং আর কমিউনিটি পুলিশিং পরষ্পর থেকে ভিন্ন কোন পুলিশিং দর্শন নয়।
ডিএমপির অপরাধ বিভাগের অনেক পুলিশ অফিসারকে বলতে শুনা গেছে, কমিউনিটি পুলিশিং এদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। মানুষ পুলিশকে সহায়তা করে না। তারা সবসময় নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই আমরা এখন বীট পুলিশিং করছি।
বাংলাদেশ পুলিশের ত্রিবার্ষিক কৌশলপত্রের আলোকে কমিউনিটি পুলিশিং হল বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক অঙ্গীকার। তাই এই ক্ষেত্রে কোন পুলিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মনোভাবের চেয়ে সাংগঠনিক দৃষ্টিভঙ্গীই প্রাধান্য পাওয়া উচিত। বীট পুলিশিং যে কমিউনিটি পুলিশিং বাস্তবায়নের একটি অন্তর্বর্তীকালীন কৌশল তা পুলিশ সদস্য ও কমিউনিটি সদস্যদের খোলামেলা ভাবে জানানো উচিৎ। কমিউনিটি পুলিশিং ধারণাটি বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই ভীষণভাবে দূষিত হয়েছে। তাই আমাদের উচিত হবে এটাকে আর বেশী দূষিত না করে সঠিক তথ্য মানুষের কাছে তুলে ধরা।
বিট পুলিশিং নিয়ন্ত্রন করবে সব অপরাধ
জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে, থানার জনবল এবং অপরাধেরমাত্রা ও ধরন অনুযারী একেকটি থানাকে সর্বনিম্ন ৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৫টি বিটে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি বিটের দায়িত্বে থাকবেন একজন উপপরিদর্শক। তার সঙ্গে একজন সহকারী উপপরিদর্শক এবং তিন কনস্টেবল থাকবেন। বিট অফিসার ও বিটের অন্য পুলিশ সদস্যরা সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাবেন। প্রত্যেক বিট অফিসারের একটি স্থায়ী মোবাইল নম্বর থাকবে। স্থানীয় লোকজন যে কোনো প্রয়োজনে বিট অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। বিটের সদস্যরা মামলার তদন্ত, আসামি গ্রেফতার, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করবে।
বিট পুলিশিং উঠোন বৈঠক ও পুলিশের তথ্য ভান্ডার সমৃদ্ধ করা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে পুলিশিং
বর্তমান যুগে তথ্যকে বলা হয়ে থাকে জ্ঞান। যে দেশের পুলিশের যত বেশি তথ্য থাকবে সে দেশের পুলিশ তত সক্রিয়, তত সফল। পুলিশকে জনগণের কাছাকাছি যেতে হবে, জনগণের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। ‘পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল’ মোতাবেক যত রেজিস্টার বা বুক মেইনটেইন করার কথা বলা হয়েছে; তা মূলত তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য। বর্তমান সময়ে ভিলেজ ক্রাইম নোটবুকটাকে একটা সফ্টওয়্যারের আওতায় এনে হালনাগাদ করলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা প্রভূত উন্নয়ন হবে এবং পুলিশের এক সমৃদ্ধ ডাটা বেইজ তৈরি হবে। উঠান বৈঠক থেকে আসছে ঘর, বাড়ি, পরিবার ও মহল্লা ভিত্তিক অনেক তথ্য। যা আইন-শৃঙ্খলার সুষম উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এভাবে তৃণমূল থেকে তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ডাটা বেইজ হালনাগাদ করা যেতে পারে।
এশিয়ার অধিকাংশ দেশগুলোতে পুলিশ ও জনগণের মধ্যে রয়েছে এক বিরাট দূরত্ব। এ দূরত্ব দূরীকরণ জরুরি। বর্তমান দিনগুলোতে এ দূরত্ব দূর করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় জনবান্ধব পুলিশিং কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।
মাদক সন্ত্রাস দমনে বিট পুলিশিং ভুমিকা রাখবে
কুড়িগ্রাম জেলার ১১ টি থানাতে যতগুলো ইউনিয়ন আছে, প্রত্যেকটি ইউনিয়নকে এক একটি বিটপুলিশিং ইউনিটে ভাগ করে দেওয়া হবে। তখন ঐ বিটপুলিশিং টিমের ঐ এলাকা সংক্রান্ত অপরাধ, সন্ত্রাস, মাদক দমনে তাদের দায়িত্বশীল ভুমিকা বারবে তেমনি জবাবদিহিতা বারবে। কোথাও কোন সমস্যা, পারিবারিক কলহ দেখা দিলেও বিট পুলিশিং প্রিভেনশন কাজ করবে। বুঝাবে। মীমাংসা করবে। তড়িৎ পুলিশী সেবা নিশ্চিত হলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মারামারি সংঘাতে রুপ নেয়ার আগে তা আটকানো সম্ভব হবে। অপরাধ সংঘটিত হলে তড়িৎ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সুবিধা হবে।
মানসম্মত নাগরিক সেবায় বিট পুলিশিং
একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিটি নাগরিকের পুলিশি সেবাপ্রাপ্তিতে অধিকার রয়েছে। এক সময় বলা হতো জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় সদিচ্ছা থাকা সত্বেও জনগণকে কাঙ্খিত সেবা প্রদান করা সম্ভব হয় না। সরকারের উদ্যোগে জনবল বৃদ্ধির পর যদিও পুলিশ-জনতা অনুপাত এখনও আর্ন্তজাতিক মানের অনেক পেছনে; তবুও নি:সন্দেহে বলা যায়, বর্তমানে পুলিশের সক্ষমতাও অনেক বেড়েছে। নবগঠিত বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিট (যেমন-নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, কাউন্টার টেরোরিজম ইত্যাদি) পুলিশের প্রধান সেবাদান কেন্দ্র (Service Delivery Unit) হিসেবে থানার বর্ধিত জনবলের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জনআকাঙ্খা পূরণের দিকে দৃষ্টি দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রামের পুলিশকে কীভাবে জনমুখী ও জনবান্ধব করা যায় পাশাপাশি আইনশৃংখলা রক্ষা ও উন্নয়ন হয় সে বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম কাজ করে চলেছেন।
এপিএস/৪জুন/পিটিআই/লাভলু/কুড়িগ্রাম