করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে জরুরি বিবেচনায় চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের উৎপাদিত করোনাভাইরাসের টিকা সরাসরি ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে এ পদ্ধতিতে ৪০টি অক্সিজেন জেনারেটর কেনার বিষয়েও সায় দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহিদা আক্তার জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি এই বৈঠক হয়।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার জানান, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ চীন থেকে করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহের একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে। এটি হচ্ছে জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনা সংক্রমণ রোধে জরুরি বিবেচনায় চীনের তৈরি সার্স-কোভ-টু ভ্যাকসিন সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের প্রস্তাব। প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সরকারের কেন্দ্রীয় ঔষধাগার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব দুটি মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে তোলে।
সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ইতোমধ্যে সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।
শাহিদা আক্তার জানান, চীন থেকে কত দামে কী পরিমাণ ভ্যাকসিন কেনা হবে তা বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়নি। কতদিনের মধ্যে এই কেনাকাটা সম্পন্ন হবে তাও আলোচনা হয়নি।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি তিন কোটি ডোজ পেতে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা ও সরকার। টিকার প্রথম চালান আসার পর গেল ফেব্রুয়ারিতে গণ টিকাদান শুরু করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী আগামী জুন পর্যন্ত প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা সরবরাহের কথা থাকলেও মাত্র ৭০ লাখ ডোজ সরবরাহ করেছে সেরাম। এরপর নিজেদের চাহিদা মেটাতে টিকা রপ্তানিও মার্চ থেকে বন্ধ রেখেছে সেরাম। আগামী অক্টোবরের আগে টিকা রপ্তানি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সেরাম সিইও আদর পুনেওয়ালা।
ফলে বেকায়দায় পড়ে বাংলাদেশ রাশিয়ার স্পুৎনিক-ভি এবং চীনের সিনোফার্মের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
চীনের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেয়া সিনোফার্মের তৈরি পাঁচ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। তবে কেনা টিকা পেতে বাংলাদেশকে এ বছরের দ্বিতিয়ার্ধ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।