মোঃ আজিজুর রহমান দুলু
বর্তমানে দেশব্যাপী চলমান করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগ সংক্রমন পরিস্থিতির কারনে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট হতে ইতোমধ্যে যে সকল বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে সেই সকল বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনায় ইহা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয় যে, উক্ত বিজ্ঞপ্তিসমূহ অনুসারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হয় উভয় বিভাগসহ সকল অধঃস্তন আদালতের কার্যক্রম (শুধুমাত্র প্রত্যেক জেলায় বা মেট্রোপলিটন এলাকায় একজন করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর জরুরী কার্যক্রম ছাড়া) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে আমার একাধিক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আজকের এই লেখার বিষয়টি কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতের কর্মচারী ক্যাশিয়ার জনা মোঃ আনসার আলী এবং জেলা জজ আদালতের অফিস সহায়ক জনাব মোঃ মোশারফ আলী এর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল কোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত সাজা প্রদানের ঘটনা। ঘটনার বিবরণ রাবেয়া সুলতানা (Rabeya Sultana ) নামে একজন ফেসবুক আইডি ধারী ব্যক্তির ফেসবুক ওয়াল থেকে গৃহীত যাহা নিম্নরূপঃ
” কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতের ক্যাশিয়ার জনাব মোঃ আনসার আলী ও অফিস সহায়ক জনাব মোঃ মোশারফ আলী গত ০৪/৫/২০২০ খ্রিঃ তারিখ সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, কুড়িগ্রাম শাখা হতে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতের কর্মচারীদের উৎসব ভাতা 5,80,130/- (পাঁচ লক্ষ আশি হাজার এক শত ত্রিশ) টাকা উত্তোলন পূর্বক দুপুর 01:15 হতে 2:00 ঘটিকার মধ্যে রিক্সায় যাত্রী হিসেবে আরোহী হয়ে আদালতের দিকে যাওয়ার পথে আদর্শ পৌর বাজার নামক স্থানে পৌঁছালে সে সময় পরিচালিত মোবাইল কোর্টের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব অভিজিৎ চৌধুরী রিক্সাচালক কে থামতে বলেন। রিক্সাচালক নির্দেশ মতে রিক্সা থামালে ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় তাদের জিজ্ঞেস করেন, কেন তারা দু’জনে রিক্সায় উঠেছেন। যাত্রীদ্বয় সবিনয়ে বলেন, আমরা দু’জন জেলা জজ আদালতের কর্মচারী। আমরা সরকারি কাজের অংশ হিসেবে আদালতের কর্মচারীদের ঈদ বোনাস উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে গিয়েছিলাম। এতগুলো টাকা একজনের পক্ষে নিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয় বলে আমরা দু’জনে নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দু’জন রিক্সায় উঠায় সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৫(১)(খ) ধারায় বর্ণিত অপরাধ সংঘটন করেছেন মর্মে উল্লেখে উক্ত আইনের ২৫(২) ধারা মোতাবেক যাত্রীদ্বয়ের মধ্যে একজন কে (মোঃ মোশারফ আলী) দোষী সাব্যস্তক্রমে ২০০/- (দুই শত) টাকা জরিমানা প্রদান করেন। এখন আমার প্রশ্ন মোবাইল কোর্টের বিদ্যমান ধারায় প্রদত্ত তর্কিত সাজা কতটা বৈধ? এবং উক্ত সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ আছে কি? বিস্তারিত জানতে চাই।”
আইনগতভাবে মুল আলোচনায় যাওয়ার আগে একটা বিষয় বলি অর্থাৎ জেলা জজ আদালত কিংবা চীফ জুডিসিয়াল আদালত এর কর্মচারীদের বেতন সাধারণত একত্রে ব্যাংক থে্কে উঠিয়ে রেভেনিউ স্ট্যাম্প সম্বলিত রেজিটার এ সাক্ষর গ্রহন পূর্বক ক্যাশিয়ার অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন বণ্টন করে থাকেন।
যাই হোক মুল বিষয় হলো, যে ঘটনায় কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতের ক্যাশিয়ার ও একজন অফিস সহায়ক কে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে তাহা ওই ঘটনা ও সংশ্লিষ্ট আইনের আলকে বৈধ কিনা ?
কুড়িগ্রাম জেলার উক্ত ঘটনায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব অভিজিত চৌধুরী এবং যে মামলাইয় সাজা দেন তাহার নম্বর হলো ৪৭/২০২০ ধারা হলো সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৫(১) এবং ২৫(২) । এখন দেখা যাক, সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৫(১) এবং ২৫(২) ধারায় কি বলা হয়েছে ? উক্ত ২৫ ধারা হলোঃ
“২৫। (১) যদি কোনো ব্যক্তি-
(ক) মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাহার উপর অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, এবং
(খ) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন,
তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।”
এখানে আইনের এবিসি জ্ঞ্যানের দ্বারা উক্ত ধারার পাঠে যাহা বোঝা যায় তাহা হলো সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। এখানে তিনজন ব্যাক্তির কথা বলা হয়েছে । প্রথমতঃ মহাপরিচালক অর্থ সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২ ধারায় বর্ণিত ”মহাপরিচালক” অর্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে বোঝানো হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন কে বোঝানো হয়েছে এবং তৃতীয়তঃ সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২ ধারায় বর্ণিত ”’ক্ষমতাপ্রাপ্তকর্মচারী” অর্থ ধারা ৩০ এর অধীন ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী কে বোঝানো হয়েছে।
তাহলে ইহা প্রয়োজন যে, উক্ত আইন, ২০১৮ এর ৩০ ধারায় কি বলা হয়েছে তাহা জানা। সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ৩০ ধারায় যা বলা হয়েছে তা হলো-
“৩০। মহা পরিচালক, প্রয়োজনে, লিখিত সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, উক্ত আদেশে বর্ণিত শর্ত সাপেক্ষে, যদি থাকে, এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা, তাহার উপর অর্পিত কোনো ক্ষমতা অধিদপ্তরের যে কোনো কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবেন।”
এখন সামগ্রিকভাবে এই বিষয়টা দাঁড়ায় যে, সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৫ ধারার অধীনে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোনো নির্দেশ জারি করিতে পারিবেন অর্থাৎ যে তিনজন ব্যাক্তি নির্দেশ জারী করিতে পারিবেন তারা হলেনঃ (১) মহা পরিচালক নিজে বা (২) সিভিল সার্জন বা (৩) ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা । এখানে উক্ত আইন, ২০১৮ এর ৩০ ধারা অনুসারে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলতে ৩০ ধারায় বর্ণিত অধিদপ্তরের যে কোনো কর্মকর্তাকে বুঝাইবে । আর অধিদপ্তর হল উক্ত আইন ২০১৮ এর ২(১) ধারায় বর্ণিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কে বুঝানো হয়েছে। তার মানে সহজভাবে যা দাঁড়ায় তা হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বাহিরে উক্ত আইন ২০১৮ অনুসারে অন্য কোন অধিদপ্তরের বা বিভাগের অন্য কোন কর্মকর্তার কোন প্রকার নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা আইনে নাই । ইহা ছাড়াও উক্ত আইন, ২০১৮ এর ১১ ধারায় উক্ত মহাপরিচালক কিংবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীকে বুঝানো হয়েছে। ইহার ফলে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ কোন জেলার কোন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অর্থাৎ ডিসি সাহেবের অত্র বিষয় নিয়ে উক্ত আইন ২০১৮ এর অধীন কোন নির্দেশ বিজ্ঞপ্তি জারি করার আইনগত ক্ষমতা নাই। অথচ যে নির্দেশনা লঙ্ঘনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেলা জজ আদালতের ক্যাশিয়ার ও অন্য একজন অফিস সহকারীকে সাজা প্রদান করেছেন সেই নির্দেশনা ডিসি সাহেব উক্ত আইন ২০১৮ এর বাহিরে গিয়ে নির্দেশ বিজ্ঞপ্তি আকারে জারি করেছেন জারি করেছেন। ডিসি সাহেব গত ২৩.০৪.২০২০ ইংরেজি তারিখে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ১১(১), ১১(২) এবং ১১(৩) ধারা উল্লেখ করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন তাহা আইনের উল্লেখিত ধারারই পরিপন্থী কেননা উক্ত ধারায় বলা হয়েছে তা নিম্নরূপঃ
” ১১। (১) মহাপরিচালক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, আদেশ দ্বারা, নিম্নবর্ণিত কোনো এলাকাকে সংক্রমিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবেন, যথা:-
(ক) বাংলাদেশের স্থানীয় কোনো এলাকা বা অঞ্চল যাহা কোনো সংক্রামক ব্যাধি দ্বারা আক্রান্ত হইয়াছে বা আক্রান্ত হইয়া থাকিতে পারে মর্মে যুক্তিসঙ্গতভাবে সন্দেহ হইতেছে;
(খ) সংক্রমনের বিস্তার নির্মূল বা সীমিত করিবার জন্য সংক্রমিত ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, গৃহ, আঙ্গিনা, বাসস্থান বা যানবাহন।
(২) মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারীর নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সংক্রামক রোগ সীমিত বা নির্মূল করা সম্ভব নহে, তাহা হইলে তিনি সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা সংক্রমিত স্থানে অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন।
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।”
এসব তো গেল বিজ্ঞপ্তি জারির আইনগত কর্তৃত্ব বিষয়ে আলোচনা। এখন দেখি যে বিজ্ঞপ্তি লঙ্ঘনের কারণে জেলা জজ আদালতের ক্যাশিয়ার এবং একজন অফিস সহকারী কে সাজা প্রদান করা হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তিতে কি বলা আছে? এবং সেই সাজা আইনগতভাবে তো নহে বরং উক্ত বিজ্ঞপ্তির সংশ্লিষ্ট দফা অনুসারেই বৈধ কিনা? এই প্রশ্নের উত্তর কুড়িগ্রাম জেলায় কর্মরত একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উক্ত রাবেয়া সুলতানা (Rabeya Sultana) এর ফেসবুক ওয়ালে যেভাবে দিয়েছেন তাহা নিম্নরূপঃ
“আমার জানামতে বাংলাদেশের প্রচলিত কোন আইনে রিক্সায় দুজন যাত্রী যেতে পারবে না এমন বিধি-বিধান রয়েছে। তবে কোভিড-১৯ নামক মহামারী মোকাবেলায় প্রত্যেক জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণ গণবিজ্ঞপ্তি প্রদানের মাধ্যমে যান বাহন চলাচলের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন। যেমন : জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়, কুড়িগ্রাম হতে গত ১০/০৪/২০২০ ইং তারিখের স্মারক নং- ০৫.৪৭.৪৯০০.০০৫.০৯.০১০.২০.১২৯ মূলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়। উক্ত গণবিজ্ঞপ্তির ২ নং দফায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে,” কুড়িগ্রাম জেলার সকল প্রকার যানবাহনের প্রবেশ ও জেলা থেকে সকল প্রকার যানবাহনের বর্হিগমন বন্ধ ঘোষণা করা হলো। তবে অত্যাবশকীয় প্রয়োজনে রিক্সায় একজনের বেশি যাত্রী এবং মোটর সাইকেলে চালক ব্যতীত অন্য কোন যাত্রী বহন করা যাবে না। কোন পাড়া বা মহল্লার বাইরে থেকে আগত কোন লোককে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। এ ধরণের ব্যক্তিদের বহনকারী যানবাহন জব্দ করে থানায় রাখতে হবে।’
আলোচ্য দফানুসারে রিক্সাচালক ও মোটর সাইকেল চালকের উপর একের অধিক যাত্রী বহনে বিধি- নিষেধ আরোপ করা হয়েছে এবং ঐ দফার শেষ লাইনে ফলাফল স্বরুপ যেই রিক্সাচালক বা মোটর সাইকেল চালক এই বিধি- নিষেধ অমান্য করলে তাদের যানবহন জব্দ করে থানায় রাখতে হবে। এই গণবিজ্ঞপ্তির উক্ত দফানুযায়ী যাত্রীকে শাস্তি প্রদানের কোন সুযোগ নেই।”
তার মানে ঘটনা পরিষ্কার আইনবহির্ভূতভাবে জারি করা বিজ্ঞপ্তি যে রিক্সাচালক লংঘন করেছেন তার রিক্সা জব্দ না করে মোবাইল করে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজা প্রদান করলেন জেলা জজ আদালতের ক্যাশিয়ার ও একই আদালতের একজন অফিস সহকারীকে।
এই ঘটনা থেকে এই প্রশ্ন জন্মে যে, মোবাইল কোর্টের সাজা প্রদানের জায়গার আর কোনটি বাকি থাকে? বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আর যে বাকি থাকার জায়গা সেটি হল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতের ক্যাশিয়ার এবং একজন অফিস সহকারী যখন উক্ত আদালতের সকল কর্মচারীর ঈদ বোনাসের টাকা উঠিয়ে আদালতে আসার সময় মোবাইল কোর্ট কর্তৃক সাজা প্রাপ্ত হন তখন হয়তো আর বেশিদিন দূরে নেই আমরা কোন একদিন হঠাৎ করে শুনতে পাবো যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কোন বেঞ্চ অফিসার বা অন্য কোন কর্মচারী কিংবা মাননীয়ের অন্য কেউ মোবাইল কোর্ট কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং তারপর যা হবার তা ইতিহাস হবে মহাকালের ঘটনা পরিক্রমায়।
মোঃ আজিজুর রহমান দুলু, সাবেক বিচারকও আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, মোবাইলঃ ০১৭১৬৮৩২৩০৮, E-mail: azizurrahmandulu@gmail.com
মতামেতর জন্য লেখকই দায়বদ্ধ থাকিবেন।