করোনা সংক্রমণ রোধে রাজধানীসহ সারাদেশে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে সাত দিনের `কঠোর লকডাউন‘। এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে যেতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে জরুরি প্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে যেতে হলে নিতে হচ্ছে পুলিশের মুভমেন্ট পাস। আর এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সড়কে সড়কে কাজ করছে পুলিশ ও র্যাব। লকডাউনের প্রথম দিন রাজধানীর সড়ক ফাঁকা থাকলেও দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে যানবাহনের আধিক্য দেখা গেছে। অনেক সড়কে দেখা গেছে যানজটের পুরোনো চিত্র।
মিরপুর, বাড্ডা গুলশানসহ রাজধানীর বেশ কিছু সড়কে যানজটের এমন চিত্র দেখা গেছে। যানজটে আটকাপড়া এসব গাড়ির মধ্যে পণ্যবাহী গাড়ির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাটাই ছিল বেশি। পুলিশের মুভমেন্ট পাস ছাড়া যারা গাড়ি নিয়ে সড়কে বেরিয়েছেন তাদের পড়তে হচ্ছে পুলিশের তল্লাশিতে। আর এ কারণে অনেক চেক পোস্টগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিটি চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস থামিয়ে জানতে চাইছেন কি কারণে বা কি কাজে বের হয়েছেন। যথাযথ কারণ বলতে পারলেই গন্তব্যে যেতে পারছেন আর সঠিক উত্তর দিতে না পারলে মামলা ও জরিমানা গুণতে হচ্ছে। প্রধান সড়কগুলোতে রিকশায় যাত্রী নিয়ে আসলে, যাত্রী নামিয়ে রিকশা ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
কথা হয় কলেজ শিক্ষার্থী রায়হানের সঙ্গে। থাকেন মোহাম্মদপুর চান মিয়া হাউজিং। পায়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন পাশের এলাকায় টিউশনিতে। জানালেন এই বন্ধের মধ্যেও দুইদিন পড়াতে হবে। না হলে তার টিউশনি চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই বের হয়েছেন তিনি।
তবে গাড়ি নিয়ে বের হওয়া অনেকে দিচ্ছেন খোড়া যুক্তি। যুক্তি পছন্দ না হওয়ায় তাদের মামলা ও জরিমানা গুণতে হচ্ছে।
কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ শ্যুটিং ফেডারেশন ভবনের সামনে গাড়ির লম্বা লাইন দেখা গেছে। দীর্ঘ এই ঠেকেছে পুলিশ প্লাজা ব্রিজ পর্যন্ত।
সেখানে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের দায়িত্বে থাকা একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘যারা বাইরে আসার যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করতে পারছে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর যারা উপযুক্ত কারণ ব্যাখ্যা করতে পারছেন না তাদের চেক পোস্ট পেরোনোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলমান সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিন আজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে চালু রয়েছে কলকারখানাগুলো। এছাড়া আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থে ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে। এ কারণেই সড়কে গতকালের চেয়ে গাড়ির সংখ্যা আর মানুষের সংখ্যা বেড়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
কাফরুল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সোহেল রানা বলেন, মানুষ লকডাউনে ঘরে থাকছেন। কিছু মানুষ প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। কারণ যুক্তিযুক্ত হলে আমরা তাদের যাতায়াত করতে দিচ্ছি। আর কারণ অযৌক্তিক হলে তাদের যেতে দিচ্ছি না।