সব
facebook apsnews24.com
করোনাঃ বাড়ছে মৃত্যু ভয়াবহতা ও মৃত্যু - APSNews24.Com

করোনাঃ বাড়ছে মৃত্যু ভয়াবহতা ও মৃত্যু

করোনাঃ বাড়ছে মৃত্যু ভয়াবহতা ও মৃত্যু

দেশে গত বছর জুন-জুলাই মাসে করোনার সংক্রমণের প্রথম ঢেউ ছিল বেশ তীব্র। এ বছর মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। প্রথম ঢেউয়ের চূড়ার (পিক) চেয়ে দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই দৈনিক রোগী শনাক্ত বেশি হচ্ছে।

প্রতিদিন দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্তের নতুন রেকর্ড হচ্ছে। মৃত্যুও বাড়ছে। গত বছরের মার্চে সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এতটা খারাপ পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের ২৫ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ১০ দিন সংক্রমণ বেশি ছিল। সে সময় দৈনিক গড়ে ৩ হাজার ৭০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গড়ে দৈনিক মৃত্যু হয় ৪১ জনের।

গত ১০ মার্চ থেকে দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগী বাড়ছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৩ মার্চ থেকে গতকাল পর্যন্ত ১০ দিনে দৈনিক করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৪০৭ জনের। এ সময় গড়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। তবে গত সাত দিনে গড়ে মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৪৬৯ জনের; যা দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এই সময়ে করোনায় মারা গেছেন ৫৯ জন; যা গত ৯ মাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ। ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। সর্বশেষ গত বছরের ৯ আগস্টে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের হার ছিল।


জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনো উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। সরকার সংক্রমণ ঠেকাতে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে, তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী আরও কঠোর নির্দেশনার প্রয়োজন ছিল। জনগণকে সম্পৃক্ত করেই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে অনেক মন্ত্রণালয় জড়িত। অথচ কোনো মন্ত্রণালয় এখনো ঘুমাচ্ছে, কেউ এখনো চিন্তা করছে কী করবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে দু-এক দিনের মধ্যে নিজ নিজ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা (ইমপ্লিমেন্টেশন প্ল্যান) প্রস্তুত করতে হবে। সমন্বিতভাবে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের কথা জানায় সরকার। গত জুন থেকে আগস্ট—এই তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। মাঝে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়লেও বাকি সময় সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল। কয়েক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত জুন-জুলাইয়ের ধারা দেখা যাচ্ছে। পাঁচ সপ্তাহ ধরেই সংক্রমণে ঊর্ধ্বমুখী ধারা রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে করোনা শনাক্ত হয় ২১ হাজার ৬২৯ জনের। ফেব্রুয়ারি মাসে শনাক্ত ছিল ১১ হাজার ৭৭ জন। দুই মাস পরে গত ১০ মার্চ দৈনিক শনাক্ত আবার হাজার ছাড়ায়। এরপর দৈনিক শনাক্ত বাড়ছেই। গত মার্চ মাসে করোনা শনাক্ত হয় ৬৫ হাজার ৭৯ জনের। অর্থাৎ বছরের প্রথম দুই মাসের দ্বিগুণ রোগী শনাক্ত হয়েছে মার্চ মাসে।

গত বছরের মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে। এ বছর ফেব্রুয়ারি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে আসে।

কোনো দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঠিক করা কিছু নির্দেশক থেকে বোঝা যায়। তার একটি হলো রোগী শনাক্তের হার। টানা দুই সপ্তাহের বেশি রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।

তিন মাসের বেশি সময় পরে গত ১৮ মার্চ শনাক্তের হার আবার ১০ শতাংশ ছাড়ায়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৮ হাজার ১৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

করোনা মহামারির শুরু থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে আসছে, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক শর্ত রোগী শনাক্ত করা এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা। এতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। জনস্বাস্থ্যবিদেরা অনেক দিন ধরেই দেশে দৈনিক কমপক্ষে ২০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করার কথা বলছেন। দেশে প্রথমবারের মতো গত ১৬ মার্চ এক দিনে ২০ হাজারের বেশি করোনা পরীক্ষা হয়। গত মার্চ মাসে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৪৯ জনের। সংক্রমণ শুরুর পর থেকে যা এক মাসে সর্বোচ্চ নমুনা পরীক্ষার রেকর্ড।

কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ মাস থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে। দেশে এখন চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৬৩ হাজার ৭২১ জন। মার্চের শুরুতে দেশে চিকিৎসাধীন রোগী ছিলেন ৩৯ হাজার ৬৪৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকাল বৃহস্পতিবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ পর্যন্ত দেশে মোট ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৬৪ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ হাজার ১০৫ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩৮ জন।

আপনার মতামত লিখুন :

আপিল বিভাগে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনজন বিচারপতি

আপিল বিভাগে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনজন বিচারপতি

বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা

বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা

থানচিতে পুলিশ সন্ত্রাসী গোলাগুলি, থমথমে পরিস্থিতি এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি

থানচিতে পুলিশ সন্ত্রাসী গোলাগুলি, থমথমে পরিস্থিতি এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি

ফের বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম, স্বস্তি নেই মাছ-মাংসে

ফের বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম, স্বস্তি নেই মাছ-মাংসে

স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

দেশে আইনের শাসন না থাকায় নিরপরাধীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে- মির্জা ফখরুল

দেশে আইনের শাসন না থাকায় নিরপরাধীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে- মির্জা ফখরুল

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj