মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১২ লাখ ডোজ টিকা উপহার দিচ্ছে ভারত। আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামীকাল ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস। এদিনই ভারত থেকে উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ১২ লাখ ডোজ টিকার চালান ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কালই বাংলাদেশে আসছেন। তাঁর বাংলাদেশে আসার দিনই ভারতের উপহারের টিকা ঢাকায় আসছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনে ১৭ মার্চ থেকে ১০ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে ২৬ মার্চ পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে। অনুষ্ঠানের মূল থিম ‘মুজিব চিরন্তন’। তবে বিভিন্ন দিনের অনুষ্ঠানের পৃথক থিম থাকছে। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে ১৭ মার্চ ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ। দ্বিতীয় বিশ্বনেতা হিসেবে ১৯ মার্চ ঢাকায় আসেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তৃতীয় বিশ্বনেতা হিসেবে ২২ মার্চ আসেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি। ২৩ মার্চ আসেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং।
গত জানুয়ারিতে ভারত উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেয়। এ ছাড়া ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কিনেছে। চুক্তি অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে শুরু করে পরবর্তী ছয় মাসে ৫০ লাখ করে তিন কোটি টিকা পাওয়ার কথা বাংলাদেশের। প্রথম চালানে ৫০ লাখ ও দ্বিতীয় চালানে ২০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে।
এদিকে ভারত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সব ধরনের রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ভারতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আগামী সপ্তাহগুলোয় ভারতে করোনার টিকার চাহিদা বাড়বে। তাই ভারতের নিজেরই টিকার দরকার হবে। এ জন্য অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সব ধরনের রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ভারত।
ভারতীয় কর্মকর্তারা টিকা রপ্তানি বন্ধের এ পদক্ষেপকে ‘সাময়িক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এ পদক্ষেপের কারণে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত টিকার সরবরাহ প্রভাবিত হতে পারে।
ভারতের এ পদক্ষেপে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার আমদানিকারক দেশগুলোর পাশাপাশি বৈশ্বিক কোভ্যাক্স উদ্যোগ প্রভাবিত হতে পারে। টিকার ন্যায্য বণ্টনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন এ উদ্যোগে ১৯০টির মতো দেশ রয়েছে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যৌথভাবে টিকাটি উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাজ্য-সুইডেনভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতে ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে দেশটির সেরাম ইনস্টিটিউট। সেরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।