আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: গড় হিসেবে রমজান মাসের মাত্র ১ মাস রয়েছে। রমজান মাসটিকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিনিহত বাড়িয়ে দিচ্ছে নিত্যপূন্যের দাম । বাজারে দেখা দিয়ে অস্থিরতা সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ছেন। মহামারী করোনার কারণে এক দিকে দেশের বেশির ভাগ নাগরিকের আয় কমেছে, অন্য দিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। করোনা কর্মহীন অগণিত মানুষ। ভেঙ্গে পড়েছে বিপুলসংখ্যক পরিবারের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড।
সরকারী চাকরীজীবী ছাড়া বেশির ভাগ নি¤œ আয়ের পরিবারের এখন নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। আমাদের দেশে প্রতি বছর পবিত্র রমজান মাস এলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এটা নতুন নয়। এবার যেটুকু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে তা হলো, রমজান শুরুর মাস খানেক আগেই বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম। গত দুই মাস ধরে ভোজ্যতেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। লাগামহীন চালের বাজার। গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজ, আদা, ডিম ও আটার অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে মুরগির দাম। ফলে ভোক্তারা এখনই শঙ্কিত রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে।
নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের দুশ্চিন্তা পড়ে গেছেন। অবস্থা এমন নি¤œ মধ্যবিত্তদের এখন সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। চাল কিনলে তেল কিনতে পারছেন না তারা। তেল কিনলে ডাল কিনতে পারছেন না। করোনা পরিস্থিতির পর থেকে সিলেটের দারিদ্র্যের হার আগের চেয়ে বেড়ে গেছে । এর ওপর চাল, ডাল, তেল, মুরগিসহ বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া হওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় টিকে থাকার তাগিদে ব্যয় সষ্কোচন নীতি নিয়েও কুলিয়ে উঠতে কারছেন না তারা। খোলা সয়াবিন তেলের মূল্য প্রতি লিটার ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। আর বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি বাড়ানো হয়েছে চার টাকা। ১৫ মার্চ ২০২১ সোমবার অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিপণন পরিবেশক নিয়োগ আদেশ, ২০১১ অনুযায়ী গঠিত জাতীয় কমিটিতে ভোজ্যতেলের মূল্য ও সরবরাহ বিষয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বিস্তারিত নিরীক্ষার পর সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২১ লাখ টন। শুধু রমজানেই চাহিদা থাকে প্রায় চার লাখ টন। একই ভাবে বছরে চিনির চাহিদা ১৮ লাখ টন। রমজানে তিন লাখ টন। সারা বছর মসুর ডালের চাহিদা পাঁচ লাখ টন, যার মধ্যে রমজানে থাকে ৮০ হাজার টন। আর বছরজুড়ে ৮০ হাজার টন ছোলার চাহিদার ৯০ শতাংশই লাগে রমজানে। সেই সাথে সারা বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ থেকে ২৭ লাখ টন। এর মধ্যে রমজানে এর চাহিদা থাকে প্রায় পাঁচ লাখ টন। এই চাহিদার বিপরীতে রমজানে টিসিবি আড়াই কোটি লিটার ভোজ্যতেল, ১৭ হাজার টন ডাল, ৬০০ টন ছোলা, ১৩ হাজার টন চিনি, ১৭ হাজার টন পেয়াজ ও অন্যান্য আরো কিছু পণ্য বিক্রি করবে। এপ্রিলের শুরু থেকে সারা দেশে ৫০০ ডিলারের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
এর মধ্যে রাজধানীতে শতাধিক ডিলার পণ্য বিক্রি করবে। কিন্তু সিলেটের বাজারে নিত্যপূণ্যের বাজারে উল্টো পথে হাটতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। যে হারে নিত্যপূণ্যের দাম বাড়ছে তাতে মনে হয় দেশে সব কিছুর সংকট রয়েছে। এই সিলেটের সচেতন সরকারের উর্ধ্বতন বাজার মিনিটরিং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।