প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে গবেষণা এবং অঞ্চলভিত্তিক ‘জোন ম্যাপ’ প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেছেন, মাটির উর্বরতা এবং পরিবেশ বিবেচনা করে যে ফসল যেখানে ভালো উৎপন্ন হয়, সেখানেই তার চাষাবাদ করতে হবে।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার কৃষিক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধি অর্জনে প্রকাশিত ‘১শ’ কৃষি প্রযুক্তি এটলাস’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “অল্প খরচে অধিক মাত্রায় ফসল উৎপাদন কীভাবে করতে পারি সেটা বিবেচনায় এনে মাটির উর্বরতা এবং পরিবেশ বিবেচনা করে সমগ্র বাংলাদেশের এলাকা ভিত্তিক একটি ‘জোন ম্যাপ’ তৈরি করা দরকার।”
তিনি এ সময় সরকারি চাকুরে বিজ্ঞানীদের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদেরকে বিশেষ প্রণোদণার আওতায় আনা যায় কিনা সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের কৃষিপণ্য যাতে মান সম্পন্ন করা যায় তার জন্য আরও পরীক্ষাগার তৈরি করা দরকার। সেইসঙ্গে অঞ্চলভিত্তিক পরীক্ষাগারও নির্মাণ প্রয়োজন।’
দেশের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর বলেই তার সরকার কৃষিকেই সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পণ্য উৎপাদনের মূলে থাকতে হবে দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো এবং দেশ-বিদেশে বাজার সৃষ্টি ও রপ্তানি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষি ভিত্তিক শিল্প আমরা গড়ে তুলতে চাই এবং সেটাই আমরা করবো। এ বিষয়েও আমাদের গবেষকদের আমি সহযোগিতা চাই।’
গবেষকদের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘একদিনে গবেষণা শেষ হয়ে যায় না। দীর্ঘদিন গবেষণা করতে হয়। তবে, চাকরির একটা বয়স নির্দিষ্ট করা রয়েছে, যার পরে আর চাকরি করা যায় না। কিন্তু গবেষণায় সম্পৃক্ত সরকারি চাকুরেদের জন্য আমি একটা কথাই বার বার বলেছি, এই গবেষকদের কিভাবে আমরা প্রণোদণা দিতে পারি যাতে গবেষণার ফসল তারা হাতে পাওয়া পর্যন্ত থাকতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরজন্য তার সরকার একবার উদ্যোগ নিলেও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই এই সুযোগটা নিতে চাওয়ায় সেটা আর সম্ভব হয়নি।
সরকার বীজ সংরক্ষণে নরওয়ের সঙ্গে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই এবং মনে করি, গবেষণাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।’
এ সময় লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধান উৎপাদনে বিজ্ঞানীদের সাফল্যের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী দুর্যোগ সহনীয় ফসল উৎপাদনে বিজ্ঞানীদের আরো গবেষণার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেজবাউল ইসলাম স্বাগত বক্তৃতা করেন। আরও বক্তৃতা করেন বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। সফল কৃষক মো. রফিকুল ইসলামও নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।