সব
facebook apsnews24.com
দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা চলছে - APSNews24.Com

দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা চলছে

দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা চলছে

দেশে-বিদেশে নানাভাবে নানা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, যে যাই বলুক। আমি এটা বিশ্বাস করি যে সততা নিয়ে কাজ করলে পরে আর সেই কাজের সুফলটা যখন জনগণ পায়, সেখানেই হচ্ছে তৃপ্তি যে না জনগণের জন্য কিছু করতে পারলাম। আর কেউ যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে, অবশ্যই একটা দেশকে উন্নত করা যায়।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন শেষ হয়। শেষ দিনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত হয়।

নেতৃত্ব শূন্যতায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির এই দশা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যত বক্তৃতা দিক আর যত কথাই বলুক না কেন তাদের নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি যখন একটা দলের নেতা তখন তাদের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস কিছুই থাকে না। সেই বিশ্বাস ও আস্থা এখন আর তাদের প্রতি জনগণের নেই। আস্তে আস্তে সেই জায়গাটা সরে গেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক কথা, আমাদের দুর্ভাগ্য ও হাসি পায় যে, যাদের গায়ে দুর্নীতির ছাপ, যারা ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ ৫ বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এতিমের অর্থ আত্মসাতের দায়ে যাদের নেতাকে কারাবরণ করতে হয়, ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের মামলা রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বিরোধী দলের নেতাকে হত্যার প্রচেষ্টার মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত তারা যদি জনগণের নেতৃত্বে থাকে তবে সেই দল জনগণের কাজ করবে কীভাবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে যেহেতু সেবা পেয়েছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশের মানুষের কল্যাণ হচ্ছে কাজেই স্বাভাবিকভাবেই দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আওয়ামী লীগ অর্জন করেছে। যার প্রতিফলন আমরা দেখলাম আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে। মানুষ এখন আন্তরিকভাবে ভোট দিচ্ছে। এখন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হচ্ছে যেখানে কারচুপি করার কোনো সুযোগ নেই। যার যার ভোট সে নিজে দিতে পারে। ১০টা হোন্ডা ২০টা গু-া নির্বাচন ঠা-া সেদিন আর এখন নেই বা ভোট বন্ধ থাকলেও একজনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হতো সেদিনও নেই। হ্যাঁ, মেয়র নির্বাচনে কমিশনারদের মধ্যে কখনো কখনো গোলমাল হয়, সেটা আলাদা।

করোনাভাইরাসের বিষয়ে তিনি বলেন, ধাক্কা সামলাতে আমরা ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছি। সঙ্গে প্রণোদনা তো ছিলই। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা শুরু হলে আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন বুকিং দিয়েছি। ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক ব্যঙ্গ শুনেছি। এখন তো ভ্যাকসিন এসেছে। ভ্যাকসিন নিজেই সে-সবের উত্তর দিয়েছে। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আমরা কিনেছি। এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর খারাপ কোনো রিঅ্যাকশনের কথা শোনা যায়নি। তারপরও আমরা মনিটর করছি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। এ নিয়ে দেশে প্রশংসা শুনিনি। কিন্তু জাতিসংঘের মহাসচিব প্রশংসা করেছেন। প্রথম কারা করোনা ভ্যাকসিন পাবেন সেটাও আমরা ঠিক করে ফেলেছি। করোনার ভ্যাকসিন যারা নিচ্ছেন তাদের এখনো মাস্ক পরে থাকতে হবে, সবসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ব থেকে করোনা ভাইরাস না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত মাস্ক পরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির আরও উন্নয়ন ঘটলে স্কুল-কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। শতভাগই পাস করানো হয়েছে কিন্তু তারা যখন শিক্ষা নেবে তখনই কে টিকবে আর কে টিকবে না সেটা যাচাই করা যাবে। আর স্কুল-কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না যেতে পারায় শিক্ষার্থীদের যে দুঃখ এইচএসসির ফলাফলে সেটা দূর হবে। এরফলে তারা পড়াশোনায় মনযোগী হয়ে আগামীতে আরও ভালো ফল করবে। করোনাভাইরাসের মধ্যেও সরকার সারা দেশে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠপুস্তক বিতরণ অব্যাহত রেখেছে এবং প্রায় ২ কোটি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি এবং উপবৃত্তি প্রদান করে যাচ্ছে।

সমাপনী ভাষণে শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতার অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘এ অধিবেশন করোনার সময়ে চলছে। যার জন্য হয়তো সব সংসদ সদস্যকে একই সঙ্গে আনা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের বিরোধীদলীয় নেতার এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার বাসায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে তিনি জনগণের কথা চিন্তা করে এখানে আসেননি। আমরা তার বক্তৃতা শুনতে পারলাম না এজন্য আমি দুঃখিত, কিন্তু তার ভেতর যে জনগণের প্রতি কল্যাণমূলক চিন্তা তার জন্য তাকে ধন্যবাদ। তবে, তিনি এলে ভালো হতো আমরা তার বক্তব্যও শুনতে পেতাম।’

প্রধানমন্ত্রীর সমাপনী ভাষণের পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির ঘোষণা পাঠ করার মধ্য দিয়ে এ অধিবেশন শেষ হয়। গতকাল শেষ দিনে বৈঠকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতির গ্যালারিতে অবস্থান করে অধিবেশনের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন।

এ ছাড়া আজ রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে সংসদে ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে অফিসার্স ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ সমাপনী সমাবেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণ শোনানো হয়।

বছরের প্রথম অধিবেশন হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী অধিবেশনের প্রথম দিন গত ১৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি ভাষণ দেন। পরদিন গত ১৯ জানুয়ারি চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে সরকারি দলের সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। এরপর গত ১১ কার্যদিবস ভাষণের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

এ অধিবেশনের ১২ কার্যদিবসে মোট ৬টি বিল পাস হয়েছে। আইন প্রণয়ন কার্যাবলি ছাড়াও এই অধিবেশনে কার্যপ্রণালী-বিধির ৭১ বিধিতে ৪৬টি নোটিস পাওয়া যায়। এ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরদানের জন্য সর্বমোট ৮৪টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। তার মধ্যে তিনি ২৮টি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তরদানের জন্য মোট ১৬৮৯টি প্রশ্ন পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৮২০টি প্রশ্ন সম্পর্কে তারা উত্তর প্রদান করেছেন।

সমাপনী ভাষণে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত হবে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ তথা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।

তিনি আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াসহ সংসদীয় অন্যান্য কার্যক্রমে সংসদ সদস্যদের সহনশীল আচরণ ও গঠনমূলক আলোচনা তাকে মুগ্ধ করেছে উল্লেখ করে রাষ্ট্র পরিচালনায় সঠিক দিকনির্দেশনা, গতিশীল নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশের জন্য গৌরব ও সম্মান বয়ে আনায় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সশ্রদ্ধ অভিনন্দন জানান। তিনি সংসদ পরিচালনায় সহযোগিতা করায় বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়া সংসদ উপনেতা, মন্ত্রিসভার সব সদস্য, চিফ হুইপ ও অন্যান্য হুইপ এবং সব সংসদ-সদস্যের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এছাড়া তিনি ডেপুটি স্পিকার ও সভাপতিম-লীর সদস্য, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় দৈনিক, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা, বাংলাদেশ বেতার, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলসহ দেশের সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান।

আপনার মতামত লিখুন :

আপিল বিভাগে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনজন বিচারপতি

আপিল বিভাগে নিয়োগ পাচ্ছেন তিনজন বিচারপতি

বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা

বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা

থানচিতে পুলিশ সন্ত্রাসী গোলাগুলি, থমথমে পরিস্থিতি এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি

থানচিতে পুলিশ সন্ত্রাসী গোলাগুলি, থমথমে পরিস্থিতি এবং আইন শৃঙ্খলার অবনতি

ফের বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম, স্বস্তি নেই মাছ-মাংসে

ফের বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম, স্বস্তি নেই মাছ-মাংসে

স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

স্বাধীনতা দিবসে বীর শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

দেশে আইনের শাসন না থাকায় নিরপরাধীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে- মির্জা ফখরুল

দেশে আইনের শাসন না থাকায় নিরপরাধীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে- মির্জা ফখরুল

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: ApsNews24.Com (২০১২-২০২০)

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
০১৬২৫৪৬১৮৭৬

editor@apsnews24.com, info@apsnews24.com
Developed By Feroj