সরকারি কর্মকর্তারা বরাদ্দ পাওয়া সরকারি বাসায় না থাকলে তাদেরকে বাড়িভাড়া না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার একনেক সভায় একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী এই অনুশাসন দেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যুক্ত হন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা বরাদ্দ পাওয়া সরকারি বাসায় না থাকলে প্রধানমন্ত্রী বাড়িভাড়া না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, যাদের নামে সরকারি বাসা বরাদ্দ হবে, তাদের সেই বাসাতেই থাকতে হবে’ যোগ করেন তিনি।
পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাড়ি ভাড়ার ‘রেট শিডিউল’ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়ার কথাও বলেছেন।
তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের ১৯তম একনেক সভায় ৩ হাজার ৩০৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ২৪৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে ২ হাজার ৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা। অনুমোদিত ৫ প্রকল্পের মধ্যে দু’টি নতুন প্রকল্প এবং তিনটি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশিদ বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ,স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
তিনি জানান, বিশ্বব্যাংক ও এআইআইবি থেকে প্রকল্প ব্যয়ের ১ হাজার ৮৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে। প্রকল্পটি ৮ বিভাগের ৩০ জেলার ৯৮ উপজেলায় বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ৪৫ লাখ মানুষ সুপেয় পানি পাবে।
প্রকল্পের আওতায় ৭৮টি লার্জ পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম,কমিউনিটি পর্যায়ে ৩ হাজার ৩৬৪টি পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কিম, ৩৫২টি পাবলিক স্যানিটেশন ও হাইজিন সুবিধা প্রদান, কমিউনিটি ক্লিনিকসমূহে ৫০০ স্যানিটেশন ও হাইজিন সুবিধা, কমিউনিটি ক্লিনিকসমূহের টয়লেটে ৭৮০টি রানিং ওয়াটার প্রদান, অতি দরিদ্র জন্য ৩ লাখ ৫১ হাজার ২৭০ টয়লেট, কোভিড-১৯ রোধে পানি সুবিধাদিসহ হাত ধোয়া ৮৮২টি স্টেশন নির্মাণ ও কোভিড-১৯ রোধে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হবে।
একনেকে ৭৯৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদিত নরসিংদী জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জুলাই ২০২০ হতে জুন ২০২৩ নরসিংদী সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাবো ও রায়পুরা উপজেলায় বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় ৫৬৯ দশমিক ০৪ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক, ২২ হাজার ৫৫৩ মিটার ড্রোন, ১২ হাজার মিটার স্লোপ প্রোটেকশন, ৬৩৬টি ব্রিজ, ৬টি ঘাট ও ১৪টি মার্কেট নির্মাণ করা হবে।
একনেকে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পে অতিরিক্ত ২৫৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা অনুমোদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে আরও ভালো পন্থা বের করার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের।
বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে যেন অপরিকল্পিত ভবন বা অবকাঠামো তৈরি না হয়, এ জন্য তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকাজের জন্য ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির নির্দেশ প্রদান করেন বলে জানান আসাদুল ইসলাম।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- খুলনা জেলার পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ৯৬ কোটি টকা। এছাড়া ৭৫৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন (২য় সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।