আইরিশ পুলিশ প্রতিনিধিদের সংগঠন গরদা রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাসোসিয়েশন (জিআরএ)-এর ওয়েবসাইট হ্যাক করে দেশটিতে হইচই ফেলে দিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ ‘দুষ্টু’ হ্যাকাররা। বছর দুই আগে তারা এই কাজ করলেও সংগঠনটির কর্মকর্তারা টেরই পাননি।
ওই তরুণেরা রাজশাহী বিভাগের একটি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। তারা নিজেদের ‘এথিকাল হ্যাকার’ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। অর্থাৎ তারা দাবি করে থাকেন, বিভিন্ন ওয়েবসাইট হ্যাক করে মালিকদের সতর্ক করেন। বিনিময়ে কোনো অর্থ নেন না কিংবা ডেটা চুরি করেন না।
আয়ারল্যান্ড থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশি তরুণেরা সাইটটি হ্যাক করেন। তারা জিআরএ সার্ভারে একটি টেক্সট ফাইল লিখে সাইবার দুর্বলতার বিষয়ে সাইটের মালিকদের সতর্ক করেন।
আয়ারল্যান্ডের একজন প্রযুক্তবিদ সম্প্রতি সাইট হ্যাকিংয়ের বিস্তারিত উদ্ঘাটন করে একটি আইরিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন। সেই তথ্য এই প্রতিবেদকের হাতে আসার পর অনুসন্ধান চালানো হয়।
বাংলাদেশি হ্যাকারদের পক্ষ থেকে একজন মুখপাত্র আইরিশ প্রযুক্তিবিদের কাছে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা যা করেছি, সেটি হয়তো অনৈতিক ছিল, কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য সৎ ছিল। আমি আপনাকে নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমরা কোনো তথ্য চুরি অথবা ডিলিট করিনি।’
আয়ারল্যান্ডের ওই প্রযুক্তিবিদও এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, ‘হ্যাকাররা ওয়েবসাইট থেকে কোনো তথ্য ডিলিট করেনি; কিংবা কিছু ডাউনলোডও করেনি বলে মনে হচ্ছে। তারা শুধুমাত্র কিং.টেক্সট নামের একটি ফাইল সার্ভারে লিখে দেয়, যাতে হ্যাকিংয়ের বিষয়টি বোঝা যায়।’
বাংলাদেশি হ্যাকারদের দাবি, ‘আমরা জিআরএ-কে মেসেজের মাধ্যমে বিষয়টি জানাই। কিন্তু তারা কোনো সাড়া দেয়নি।’
আয়ারল্যান্ডের ১১ হাজার পুলিশের এই সংগঠনও এখন হ্যাকিংয়ের বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। তারা এ জন্য দুঃখ প্রকাশও করেছে।
আয়ারল্যান্ডের ওই প্রযুক্তিবিদ বাংলাদেশি হ্যাকারদের ‘দুষ্টু’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এই দলটি মূলত তরুণদের নিয়ে গড়া। এরা ভীষণ দুষ্টু, চালাক। নিজেদের ভেতর প্রতিযোগিতার জন্য সার্চ করে করে দুর্বল ওয়েবসাইট বের করে। তারপর হ্যাক করে নিজেদের ক্ষমতা দেখায়।’
‘জিআরএ-এর এই ঘটনা চমকে দেয়ার মতো। সব সংগঠনের সতর্ক হওয়া উচিত। এতে বোঝা যায়, অনলাইনে আমরা কেউ নিরাপদ নই।’