অনলাইন ডেস্কঃ আল্লাম আহমদ শফী দীর্ঘ ৩৪ বছর মাদ্রাসার মহা-পরিচালক ছিলেন। আহমদ শফীর শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে পুরো বয়সের ৮০ বছরই কেটেছে এই হাটহাজারী মাদ্রাসায়। মৃত্যুর মাধ্যমে দীর্ঘ ১০৩ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনের সমাপ্তি হলো। তার মৃত্যুর পর মাদ্রাসার পাশেই কবরস্থানে শায়িত হলেন দেশের কওমী অঙ্গনের শীর্ষ আলেম হেফাজতে ইসলামের আমির এবং আলোচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টায় আল্লামা শফীকে মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়। এর আগে বেলা সোয়া ২টায় লাখ লাখ ভক্ত অনুরাগীর অংশগ্রহণে আল্লামা শফীর নামাজের জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন আল্লামা শফীর বড় পুত্র মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুপ।
কওমি মাদ্রাসাগুলোর শীর্ষ সংগঠন আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া, বেফাকুল মাদারিসের চেয়ারম্যান ছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি ২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম নামে একটি ধর্মীয় সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। যে সংগঠনের আমির হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করে গেছেন। অবশেষে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ১০৩ বছর বয়সে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
আল্লামা শাহ আহদম শফী ১৯১৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের পাখিয়ারটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বরকম আলী এবং মায়ের নাম মেহেরুন্নেছা বেগম। আল্লামা শাহ আহদম শফী দুই ছেলে ও তিন মেয়ের জনক। বড় ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ পাখিয়ারটিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক। ছোট ছেলে আনাস মাদানী হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।
রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় নিজ গ্রামের মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু হয় আল্লামা শফীর। এরপর পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (পটিয়া জিরি মাদ্রাসা) পড়াশোনা করেন তিনি। পরে তিনি হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা এবং ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৬ সালে আল্লামা শফী হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহা-পরিচালক (মুহতামিম) হিসেবে দায়িত্ব নেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে পদত্যাগের আগ পর্যন্ত টানা ৩৪ বছর তিনি এই হাটহাজারী মাদ্রাসার মহা-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে আল্লামা শফী সারা দেশের কওমি মাদ্রাসা সমূহের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।