করোনার চিকিৎসায় বাংলাদেশেও প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়েছে। কেউ করোনা (কোভিড-১৯) থেকে সেরে উঠলে তার রক্ত থেকে প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত রোগীর দেহে প্রবেশ করিয়ে প্লাজমা থেরাপির চিকিৎসা করা হয় ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন করোনা (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলে তার রক্তে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয় ৷ সুস্থ হওয়া রোগীর রক্ত থেকে এই প্লাজমা নিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দিলে তার করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন ৷ চিকিৎসকদের দাবি চীনসহ বিশ্বের আরো অনেক দেশে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে ৮০ ভাগ সফলতা পাওয়া গেছে ৷
প্লাজমা থেরাপির উদ্যোক্তাদের একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ও কোভিড-১৯ ন্যাশনাল টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ খান ৷ মহিউদ্দিন আহমেদ এর কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান, চীনে এর কিছু ছোট ছোট পরীক্ষা হয়েছে৷ এরমধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ থেকে ১০ জন রোগীকে প্লাজমা থেরাপি দেয়ার পর ১০ জনই ভালো হয়ে যায় ৷ আর একটি কন্ট্রোলড গ্রুপে ১০ জনের মধ্যে ৭ জন ভালো হয়ে যায় ৷ তিনি বলেন, ”করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলে রক্তে প্রাকৃতিক নিয়মেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়৷ প্লাজমার মাধ্যমে অ্যান্টিবডি যখন আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে দেয়া হবে তখন ওই ব্যক্তির শরীরের করোনা ভাইরাস ছাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করে নিস্ক্রিয় করে ফেলবে ৷’ করোনা সুস্থ হওয়ার ১৪ দিন পরই তারা প্লাজমা দিতে পারেন ৷ এমনকি প্রতি এক মাস পরপর দেয়া যায় ৷ মানুষের রক্তের ৫৫ ভাগই প্লাজমা ৷ এটি দেয়ার ক্ষেত্রে কোনা শারীরিক ঝুঁকি নেই বলেও জানান চিকিৎকরা ৷
সরাসরি এই ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপসটি ডাউনলোড করা যাবেঃ- https://www.peyeci.com/apps
এই অ্যাপসটি ব্যবহার করে পাওয়া যাবে প্লাজমা দাতার সন্ধান। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি প্লাজমাদাতা (ডোনার) হিসেবেও যুক্ত হতে পারবেন, আবার প্লাজমার প্রয়োজনে প্লাজমা গ্রহীতা হিসাবে প্লাজমা দাতা খুজে পেতে পারবেন।
সার্চ বোতামে চাপ দেওয়ার পর একটি তালিকা দেখা যাবে কারা কারা ওই গ্রুপের প্লাজমা দাতা আছেন। প্লাজমা গ্রহীতা থেকে প্লাজমা দিতে ইচ্ছুক কে, কত দূরত্বে আছেন, তাও জানা যাবে। এরপর নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে কাছে থাকা ব্যক্তিকে রিকোয়েস্ট বোতাম চেপে অনুরোধ জানানো যাবে প্লাজমা দেওয়ার জন্য। অনুরোধ পাওয়ার পর প্লাজমা দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে দাতা ও গ্রহীতা যোগাযোগ করতে পারবেন। শুধু তাই না এই আপ্লিকেশন ব্যবহারে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব , পরিচিতদের রক্তের গ্রুপ জানা যাবে এবং তাদের প্লাজমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ পাঠানো যাবে । অনুরোধ পাওয়ার পর প্লাজমা দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে দাতা ও গ্রহীতা যোগাযোগ করতে পারবেন। তাই আমরা প্লাজমা দাতা খুজে বের করে রেখেছি শুধু প্লাজমা গ্রহিতা এখান থেকে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে কাছে থাকা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে প্লাজমা নিতে পারবে।
পেয়েছি টিম এর সদস্য, এক্সপ্রিসফট এবং নাইমা ট্রাস্ট ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে প্লাজমাদানের সমস্যা সমাধানে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ভিত্তিক রক্তদানের অ্যাপ্লিকেশনে নতুন ফিচার প্লাজমা ফাইন্ডার চালু হয়েছে।
সরাসরি এই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্লাজমাদাতার লিস্ট দেখা যাবে এবং প্রয়োজনে এখান থেকে প্লাজমাদাতা খুজে নেওয়া যাবেঃ- https://www.peyeci.com/plasma
জোবায়ের আহাম্মেদ জানান ফেসবুক এবং অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়া গুলোতে প্লাজমা দানের জন্য কিছু গ্রুপের এডমি, সেচ্ছাসেবী এবং সদস্য বিন্দু কাজ শুরু করেছে । তারা পরিশ্রমী এবং সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু অনেকেই এখনো জানেন না কোথায় কোন কোন গ্রুপ প্লাজমা খোঁজার কাজ করতেছে তাছাড়া ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে প্লাজমা দাতা খুজে বের করা যায় কিন্তু এইটা অনেক সময় সাপেক্ষ বেপার। তাছাড়া তিনি আরো জানান প্লাজমার প্রয়োজনের সময় প্লাজমা গ্রহিতা এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হন।
তিনি আরো জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত এ পর্যন্ত ২৩৯৮৬০+ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩৬২৫৩+ জন মৃত্যু হয়েছে ৩১৩২+জন ৷ সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত এ পর্যন্ত ১৮,০৬৯,৯৫০+ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১,৩৬৩,৩৯১+ জন মৃত্যু হয়েছে ৬৮৯,৭৫৫+জন। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে ৷ কে কে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এ তথ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে থাকলেও সকল সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে যথেষ্ট তথ্য নেই। তাদের কাছে সে সব তথ্য আছে যারা শুধু তাদের কাছে করোনা পরিক্ষা করেছেন। তাই সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে এবং যারা প্লাজমা খুজতে কাজ করতেছেন তাদের এর উপর কোনো সুনির্দিষ্ট ডাটাবেজ নেই। তাই প্লাজমা খুজে পাওয়া কষ্ট কর হয়ে পরেছে। ফলে দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাজমা সরবরাহের সুযোগ থাকলেও তথ্যের অভাবে রোগী প্রাণ হারাতে পারেন।