নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুষ্টিয়ায় দৌলতপুরে মাদক ব্যবসায়ীদের সরাসরি নিয়ন্ত্রন করে থানা। থানায় নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে তারা মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছে বলে অভিযোগ কলেজের অধ্যক্ষ, রাজনৈতিক নেতা এবং সাধারণ মানুষের।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে থানার একাধিক দালাল বলেছেন টাকা ওপর পর্যন্ত যায়। যে সকল মাদক ব্যবসায়ী থানায় নিয়মিত মাসোহারা দেয় না তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় পুলিশ। আটককৃত মাদক থানার গেটে বসে বিক্রি করে পুলিশের আর্শিবাদপুষ্ট মাদক ব্যবসায়ীরা। কুষ্টিয়ার দায়িত্বে থাকা র্যাব সদস্যরাও অনেকটা অসহায় তাদের কাছে। পুলিশ আগেই জানিয়ে দেয় অভিযানের কথা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করলেও অল্প কিছু মাদক তারা আটক করেছে পারে। অধিকাংশ মাদক চলে যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। আর এই মাদক নিয়ন্ত্রক সরাসরি থানার ওসি আরিফ। গত সোমবার দুপুরে দৌলতপুর থানার আর্শিবাদপুষ্ট মাদক ব্যবসায়ী চকদৌলতপুর গ্রামের মৃত দিদার মন্ডলের ছেলে ফনিকে ঝিনাইদহ থেকে র্যাব ৬ এর সদস্যরা এসে গ্রেফতার করেন। তার কাছ থেকে ৪০৬ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে র্যাব।
সেসময় ফনি দৌলতপুর থানার সামনে মাদক বিক্রিতে ব্যস্ত ছিলো। র্যাব- ৬ এর সদস্যরা কারোকে না জানিয়ে ক্রেতা সেজে অভিযান পরিচালনা করে ফনিকে আটক করে। জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ৪৬ কি. মি. জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। ভারতের ফুলবাড়ি,শিকারপুর, নাসিরাবাদ, করিমপুর দৌলতপুর সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে ভারতের শিকারপুর, নাসিরাবাদ, করিমপুর এবং বিদুপুরে ফেন্সিডিল তৈরীর অবৈধ কারখানা রয়েছে। যেখান থেকে ফেন্সিডিল তৈরী হয়ে দৌলতপুরের দৌলতপুরের মাদক ক্ষ্যবসায়ীদের কাছে আসে। আর সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। এছাড়া ইয়াবা এবং ভারতীয় কান্ট্রি এবং রাম মদের ব্যবসা দৌলতপুর এলাকায় রমরমা। ওসি আরিফ দৌলতপুরে বদলী হয়ে আসার পর থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক শুরু করে। এরপর মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে লিখে হামলার শিকার হয় ভেড়ামারার সাংবাদিক ওমর ফারুক। থানা ওই ঘটনায় মামলা নিলেও কোন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেনি। মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় চঞ্চল নামের এক সাংবাদিকের ওপর হামলা করে মাদক ব্যবসায়ীরা। থানায় মামলা দিলেও পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি।
সাধারণ মানুষ জানায়, দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। যার সংখ্যা শতাধিক। দৌলতপুরের সুশীল সমাজ মাদক ব্যবসায়ীদের যে তালিকা প্রস্তুত করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ—র প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে তাতে মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা ১২৫ জন। এব্যাপারে দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ সাদেকুজ্জামান সুমন বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা খুব বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পুলিশের নিস্ক্রিয়তায় মাদক বাড়ছে। মূলত পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় গোটা দৌলতপুর মাদকের বৃহৎ বাজারে পরিণত হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ সর্দার বলেন, আমরা ওসি অনেক বার অনুরোধ করেছি। কিন্তু ওসি কর্ণপাত না করায় মাদক ছেয়ে গেছে দৌলতপুর উপজেলার সর্বত্র।
এব্যাপারে দৌলতপুর থানার ওসি আরিফ এর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে কিছু ধরাও পড়ছে।