আহম্মেদ কাওসার, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধিঃ ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’- কিছুদিন আগে হুইলচেয়ারে চেপে মঞ্চে উঠে এই গানটি শুনিয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর। গাইবার সময় তিনি নিজে যেমন কেঁদেছিলেন, কাঁদিয়েছেন শ্রোতাদেরকেও।
এর সবকিছু স্মৃতিতে মুড়ে ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ১৩ মিনিটের দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি।খবরটি রাজশাহী থেকে বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন সংগীত পরিচালক ইথুন বাবু।
টানা ৯ মাস সিঙ্গাপুরে ক্যানসারে চিকিৎসাধীন থেকে গত ১১ জুন একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরেছিলেন এন্ড্রু কিশোর। তারপর থেকে রাজশাহীতে বসবাস করেছেন।এর আগে অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন এই নন্দিত গায়ক। সেখানে গিয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে ছিলেন তিনি। চলে টানা কয়েকমাসের কেমোথেরাপি।এন্ড্রু ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত।
তার চিরসবুজ কণ্ঠ অসংখ্য জনপ্রিয় রোমান্টিক গান উপহার দিয়েছে।এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে। সেখানে তিনি ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানে কণ্ঠ দেন। তার রেকর্ডকৃত দ্বিতীয় গান বাদল রহমান পরিচালিত ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ চলচ্চিত্রের ‘ধুম ধাড়াক্কা’। তবে এ জে মিন্টু পরিচালিত ১৯৭৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘প্রতিজ্ঞা’ চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গাওয়া গান প্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করে।
সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে- জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙের ফানুস, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা, সবাই তো ভালোবাসা চায় প্রভৃতি।দেশ-বিদেশের সুনামের পাশাপাশি তিনি সম্মানও পেয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে অবদানের জন্য তিনি আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন।