(জুম অ্যাপ, জুম অ্যাপের ব্যবহার, অনলাইন ক্লাস, লেখালেখি, প্রচুর বইপড়া, শব্দভান্ডার জানা, সংবাদপত্রে লিখা ও চেইক এবং ইমেইল)
গোটা দেশ কোয়ারেন্টাইনে, লকডাউনে তাও আবার দিন পূর্ব শুক্রের-শনির মতো এক দু’দিন নয় , পুরো তিন চারটে মাস মশাই । উপর মহলের নির্দেশ ঘরে থাকিতে হবে । দুটো তিনটে মাস এক কথা, আর মাস তিনটে চারটে আরেক কথা । এই কোয়ারেন্টাইন দিনগুলোয় ব্যাপক অভিজ্ঞতা আর সাফল্য অর্জন করেছি বলা যায় ।
নিতান্তই আমি এখন আমার সুপ্ত প্রতিভা গুলো ব্যাকুল ভাবে বহিঃপ্রকাশ করিতে সক্ষম হয়েছি । তো প্রথমে অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করা যাক । প্রথম অভিজ্ঞতা হয়েছে অনলাইন ক্লাসে । ভয়ংকর ক্লাস বলা চলে । সাথে আরেকটা কথা যোগ ঘটাতে চাই, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ি আমার ।
প্রযুক্তির সান্নিধ্যে আসিলেও ব্যবহারে ততোটা নিপুণ কিংবা পারদর্শী ছিলাম না মোটেও । তবে এবার নতুন একটি অ্যাপ এর সঙ্গে পরিচয় হয়েছে । অ্যাপটির নাম ‘জুম’ । একেবারে পাঁচ’ শত জন নাকি এক মুহুর্তে ভিডিওতে যোগ দিতে পারে ।
এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে আরেকটি নতুন অভিজ্ঞতার সান্নিধ্যে পেয়েছি আমি তা হলো ‘সংবাদ পত্রের ইমেইলে কিভাবে লেখা পাঠাতে হয়’ ? এবং লিখতে হলে লেখার কলাকৌশল, লেখার জন্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ যা প্রয়োজন অনেকটাই নিজের আওতাধীন করার ব্যাপক প্রয়াস চালিয়েছি এবার ।
জানিনা কতোটা তার নিকটে আসিতে সক্ষম হয়েছি । তো সংবাদ পত্রের লেখার কৌশলগত ধরণ ও লেখা বিষয়ক আলোচনা পরে করবো । আগের বিষয়ে একটু মনোনিবেশ করিতে চাই ফের । অভিজ্ঞতার কথা বলতেছিলাম, তো অভিজ্ঞতা আরেকটু বেড়েছে তাহলো এমবি, জি মেগাবাইট ।
যা ইন্টারনেট চালানোর তেল স্বরুপ বলা যেতে পারে । গাড়ি যেমন তেল ছাড়া চালানো দুষ্কর তেমনি ইন্টারনেটও তেল অর্থাৎ এমবি(মেগাবাইট) ছাড়া অচল ।
ক্লাসের একটা সময় শেষে , যে পরিমাণে এমবি বেঁচে যেত, তা থেকে ইমেইলে লেখনী পাঠায়, জাতীয় পত্রিকা গুলো পর্যবেক্ষণ করি । লেখা প্রকাশ হলে তা আবার, ক্যাম্পাসের লেখক ফোরাম ফেবু গ্রুপে পাঠানো হয়ে থাকে ।
তো এই ছিল একটা অভিজ্ঞতা , ইন্টারনেটের ক্লাস এবং জুম অ্যাপ এর ব্যবহার , বেঁচে যাওয়া এমবি দিয়ে অন্য সাইটে ঢুকে অপব্যবহারে নিমজ্জিত না হয়ে লেখনীর কাজে প্রয়োগ করিয়াছি ।
শেষে ‘জুম’ অ্যাপ এর ব্যবহার বিধি একটু বিবরণ দিয়ে যেতে চাই । জুম অ্যাপ : বর্তমানে অনলাইন ক্লাসে বা অনলাইন মিটিং করার জন্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে এটি । ইন্সটল করে সাইন আপ করিতে পারেন ।
একসঙ্গে পাঁচ’শত কানেক্ট থাকিতে পারিবেন । তো ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হয় প্রথমত একজন হোস্টের । হোস্ট মিটিং জয়েন করলে আপনাদের ম্যাসেঞ্জার কিংবা অন্য সাইটে লিঙ্ক পাঠিয়ে দিবে । তারপর শুধু আপনি লিঙ্ক ক্লিক করিবেন এবং সরাসরি যুক্ত হতে পারিবেন ভিডিও কথোপকথনে ।
ক্যামেরা বন্ধ ও অডিও মিউট করার মতো সুবিধা পাওয়া যায় । আবার অনেক সময় একজন হোস্ট অন্যান্যদের মিটিং আইডি ও পাসওয়ার্ড বলে থাকেন । আইডি ও পাসওয়ার্ড ওখানেই পেয়ে থাকে হোস্ট ।
হোস্ট পূর্বেই পাসওয়ার্ড আর আইডি নং সকলকে পাঠিয়ে দিয়ে থাকে তাদের একটা গ্রুপ সাইট কিংবা সকলকে আলাদা করে । তারপর সকলে সেই আইডি নং ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে সরাসরি যোগ দিতে পারে ‘জুম’অ্যাপ এর ভিডিও কথোপকথনে । এক দু’দিন ব্যবহারের পর ব্যবহারে তখন আর জানার কমতি থাকিবে না ।
বেঁচে যাওয়া এমবি থেকে সংবাদপত্রে ইমেইল : সংবাদ পত্রে ইমেইল পাঠানো খুবই সহজ । যদি ভেবে থেকে থাকেন কিছু, কিংবা লেখালেখির দারুণ অভ্যাস আছে, তারা দ্রুত হাত পেঁচিয়ে লিখে ফেলুন । লিখবেন , কিন্তু লেখার ধরণ খুঁজে পাচ্ছেন না ?
হাতে ফোন আছে না ! সমগ্র পত্রিকা গুলো একবার ঝালাই করে নিন গুগলে যেয়ে । যে পত্রিকা দেখতে চান, সে পত্রিকার নামসহ সার্চ দিন । নিচে ইমেইলও পেয়ে থাকবেন, সেটি কপি কিংবা নোট করে রাখুন ।
অতঃপর এভাবে সমগ্র পত্রিকা সার্চ দিয়ে দেখে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে লেখে ফেলুন । সাধারণত সংবাদ পত্রের মতামত পাতা কিংবা চিঠি, ক্যাম্পাসহ বিভিন্ন ফিচার লিখা ও পাঠানো হয়ে থাকে ।
তো মানসম্মত একটা লেখা আর সংবাদ পত্রের প্রতি ধারণা হয়ে গেলে , নাম, ঠিকানা সহ ইমেইলে পাঠিয়ে দিন লিখা । আর যারা নতুন লিখতে চান , তাদের জন্য একটা নয় , বহুল প্রচারিত ও প্রচলিত তিনটে সাজেশনস দিবো ।
সাজেশনস : পড়ো, পড়ো এবং পড়ো । পড়লে প্রচুর শব্দভান্ডার জমা করিতে পারিবে । লেখার মান জমকালো হবে । সো দেরি না করে লেখালেখির অভ্যাস থাকিলে সংবাদ পত্রে প্রেরণ করিতে পারো । সমসাময়িক বিশ্ব কিংবা শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি ইত্যাদি বিষয়ে লিখতে পারো ।
দীর্ঘ সময় ও অভিজ্ঞতা লেখার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়ে থাকে । সুতরাং লেখালেখির ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি না করে ধৈর্য সহকারে লিখতে পারো । আর লেখা প্রকাশ হয়েছে কিনা চেইক করার জন্য পত্রিকার ওয়েবসাইট গুলো প্রত্যহ চেইক করিতে পারো ।
সর্বোপরি করোনার এই সময়ে ঘরবন্দি আমরা সকলেই । পুরো বিশ্বে থমথমে অবস্থা বিরাজমান । এমতাবস্থায় আমরা ঘরে বসেই শিখতে পারি নানা কিছু । জুম অ্যাপ, জুম অ্যাপের ব্যবহার, অনলাইন ক্লাস, লেখালেখি, প্রচুর বইপড়া, শব্দভান্ডার জানা, সংবাদপত্রে লিখা ও চেইক এবং ইমেইল । এছাড়া ইউটিউব থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন ।
তথাপি নতুনত্বের ছোঁয়া পেতে থাকুক তারুণ্য । এগিয়ে যাক দুর্বার গতিতে । কেননা তারুণ্যই অহংকার । পরিশেষে ঘড়বন্দি খেয়ায় বাঘবন্ধি না হয়ে সুপ্ত প্রতিভা বিকাশিত হোক তারুণ্যের এটাই প্রত্যাশা ।
আল আমিন ইসলাম নাসিম
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ
ইমেইল : alaminislamnasim@gmail.com